ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কমেছে মাছ ও চালের দাম, কিছুটা বেড়েছে সবজির

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২২ জুলাই ২০১৭

কমেছে মাছ ও চালের দাম, কিছুটা বেড়েছে সবজির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে চালের মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা গেছে। ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে মোটা চালের দাম। চাল সঙ্কট নিয়ে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল তা কেটে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, মোটা চালের দাম আর বাড়বে না। বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৩-৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত দু’সপ্তাহ আগেও ৪৩ টাকার এ চাল কিনতে ভোক্তাকে ৪৪-৪৫ টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো চিকন চালের দাম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বন্যা ও ভারি বৃষ্টির কারণে বেড়ে গেছে সবজির দাম। আলুর দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮-২৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি ও আমদানিকৃত রসুনের দাম কমেছে। আটা, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তানবাজার, ফকিরাপুল বাজার ও কাওরানবাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, ভরা বর্ষায় রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়ে গেছে শাকসবজি ও অন্যান্য তরকারির দাম, বেড়েছে মিঠা পানির মাছের দামও। তবে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ার কারণে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। কিছুটা কমেছে ইলিশ মাছের দাম। ছুটির দিনে সকালেই ক্রেতারা ভোগ্যপণ্যসামগ্রী কিনতে ছুটে যান বিভিন্ন বাজারে। কিন্তু সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের বাজারের হিসাব মেলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। বিভিন্ন রকম সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর গত দুই সপ্তাহে টমেটোর দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ৫০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, অতিবৃষ্টি ও বানের পানির চাপে সবজিক্ষেত কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রতি বছরই বর্ষার মৌসুমে সবজির দাম কিছুটা বেড়ে থাকে। ফকিরাপুল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, করলা ৫০-৫৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কচুরমুখী ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায় প্রতি কেজি। ওই বাজারের বিক্রেতা রাসেল বলেন, টমেটোর দামটা একটু বেশি বেড়েছে। এছাড়া অন্যান্য বছরও বর্ষায় সবজির দাম একটু বেড়ে থাকে। গত দুই সপ্তাহে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে অন্তত ১০ টাকা করে বেড়েছে বলে জানান এ বিক্রেতা। এছাড়া খুচরা বাজারে মোটা চালের দাম কিছুটা কমলেও মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো চিকন চালের দাম কমছে না। গত দুই সপ্তাহে কিছু কিছু খুচরা দোকানে চালের দাম কমলেও অনেকে আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি করছেন চাল। কাপ্তানবাজারের একজন খুচরা বিক্রেতা জানান, মিনিকেট ৫৪-৫৬ টাকায়, বিআর আটাশ ৪৮ টাকায় এবং মোটা চাল ৪৩-৪৬ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। তবে ঢাকায় চালের প্রধান পাইকারি বাজার বাবুবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানিকৃত চাল আসতে শুরু করায় সিন্ডিকেট ভেঙ্গে গেছে, মিলাররা চালের দাম কমাতে শুরু করেছেন। বাবুবাজারে মিনিকেট ৫১ থেকে ৫২ টাকা, বিআর আটাশ ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, বিআর ঊনত্রিশ ৪৫ টাকা এবং মোটা চাল প্রতি কেজি ৩৯ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। চাল আমদানি আরও বাড়ছে সরকারী পর্যায়ে আড়াই লাখ টন চাল আমদানির পর এবার আরও ৫০ হাজার টন আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকও অস্থিতিশীলতা দূর করতে এবার বাকিতে চাল আমদানির সুযোগ করে দিয়েছে। এখন থেকে তিন মাস বিলম্বে পরিশোধের শর্তে চাল আমদানির সুযোগ পাবেন ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
×