ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রীর আশা

বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত গেজেট আগামী সপ্তাহে প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২১ জুলাই ২০১৭

বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত গেজেট আগামী সপ্তাহে প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী সপ্তাহেই অধস্তন আদালতের বিচারকদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের আশার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধিমালা নিয়ে আলোচনার যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে এবং আমরা এই শৃঙ্খলা বিধিমালার গেজেট করার খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। বৃহস্পতিবার বিকেলে সোয়া তিনটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত সুপ্রীমকোর্টে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এসব বিষয় নিয়ে একটু খুঁটিনাটি বুঝার প্রয়োজন ছিল এবং যেসব বিষয় নিয়ে দ্বিমত ছিল সেগুলো অনেকাংশে দূর হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই বিধিমালা চূড়ান্ত হবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল খুব তাড়াতাড়ি পুনর্গঠন করা প্রয়োজন। সেটা ভেবেই আমরা পুনর্গঠন করার চেষ্টা করছি। চৌধুরী মইনুদ্দিনকে যুক্তরাজ্য থেকে ফিরিয়ে আনতে নতুন করে উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা আগেই উদ্যোগ নিয়ে রেখেছি এবং এই উদ্যোগ থেকে সরকার কখনোই সরে আসেনি। তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার জন্য যেসব প্রক্রিয়া দরকার আমরা তা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ সরকারের ওপর নির্ভর করছে। আমাদের উদ্যোগকে সমর্থন দেয় নতুন করে এমন কোন তথ্য পাওয়া গেলে আমরা তা অবশ্যই উল্লেখ করব। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ইন্টারপোলের সঙ্গে যেসব আলাপ-আলোচনা হচ্ছে এবং সরকার যেসব প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে সেগুলোর যখন ফল হবে তখন আপনারা তা জানতে পাবেন। এর আগে গত রবিবার প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী জানিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার আবারও বৈঠকের পর নিম্ন আদালতের বিচারকদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত গেজেট চূড়ান্ত করা হবে। উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করতে সরকারকে আরও দুই সপ্তাহ সময় দেয় সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। একই সঙ্গে আপীল বিভাগ বলেছেন, দুই সপ্তাহের সময় প্রদান এটিই ‘শেষ সুযোগ’। মাসদার হোসেন মামলার চূড়ান্ত শুনানি করে ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করতে এক রায় দেন। ওই রায়ে আপীল বিভাগ বিসিএস (বিচার) ক্যাডারকে সংবিধান পরিপন্থী ও বাতিল ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে জুডিশিয়াল সার্ভিসকে স্বতন্ত্র সার্ভিস ঘোষণা করা হয়। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে ১২ দফা নির্দেশনা দেয় সর্বোচ্চ আদালত। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর ২০০৭ সালের ১ নবেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। আপীল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করে সুপ্রীমকোর্টে পাঠায়। সরকারের খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে গত ২৮ আগস্ট শুনানিতে জানান আপীল বিভাগ। এরপর ওই খসড়া সংশোধন করে সুপ্রীমকোর্ট আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেইসঙ্গে তা চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন আকারে আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয় আইন মন্ত্রণালয়কে।
×