ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাউফলে অর্ধশত মান্তা পরিবারের ভিন্ন রকম ঈদ

প্রকাশিত: ২৩:৫৫, ২৬ জুন ২০১৭

বাউফলে অর্ধশত মান্তা পরিবারের ভিন্ন রকম ঈদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল ॥ সতের বছর পর এক ভিন্ন রকম ঈদ করলেন, বাউফলের অর্ধ শত মান্তা পরিবার। এরা কালাইয়া ইউনিয়নের বগি এলাকার তেঁতুলিয়া নদীর তুলাতলা পয়েন্টে বসবাস করেন । নৌকাই এদের বাড়ি ঘর। এদের পৈত্রিক বাড়ি বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় হলেও নদী ভাঙ্গনে ভিটামাটি হারিয়ে এসব পরিবার এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। নদীতে মাছ শিকার করে এরা জীবিকা অর্জন করেন। মান্তা পরিবারগুলো এখানে সতের বছর ধরে বসবাস করলেও কোন বছর তারা ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি । এ বছর সেই আনন্দ উপভোগ করেছেন। বাউফলের ইউএনও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঈদের আগের দিন বিকালে নিজে গিয়ে এসব পরিবারের মধ্যে এক প্যাকেট সেমাই, এক কেজি চিনি, এক লিটার তরল দুধ ও শিশুদের জামাকাপড় উপহার হিসাবে দিয়ে আসেন। এসময় তাকে সহযোগিতা করেন দৈনিক কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি এমরান হাসান হোসেল, আলোকিত সময়ের প্রতিনিধি নাজিম উদ্দিন, যায়যায়দিনের প্রতিনিধি কামরুল হাসান ও ইঞ্জিনিয়র জুয়েল। এ উপহার তাদের কাছে সামন্য নয়, এক অসামন্য উপহার ছিল। মান্তা পরিবারের সত্তোররোর্ধ বৃদ্ধ সফুর জানান বলেন, আমি এহানে ১৭ বছর ধইরা থাহি। কোন বছর ঈদ করিনাই। এই বছর ঈদ করলাম। যে ব্যাডায় আমাগো ঈদের সেমাই, চিনি, দুধ দিছে আল্লায় তারে বাঁচাইয়া রাখুক। মান্তা পরিবারের সবুজ বলেন, এই প্রথমবার ঈদ করলাম। খুব আনন্দ পাইছি। বৌ-পোলাপাইনও আনন্দ পাইছে। আমার মাইয়া নতুন জামা গায় দিয়া সেকি আনন্দ পাইছে, তা আপনারে বুঝাইতে পারমুনা। বাউফলের ইউএনও মোহাম্ম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, চাকরীর জীবনে দুই বার বাবা-মায়ের সাথে ঈদ করেছি। ইচ্ছে ছিল এবার ঈদে বাড়ি যাবো। কিন্তু ছুটি পাইনি । এখানে একটি মান্তা গোষ্ঠি রয়েছে, যারা কখনো ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি। তাই নিজের থেকেই সিদ্ধান্ত নিলাম এবার ঈদের আনন্দ মান্তা পরিবারের সাথে কাটাবো। ভাল লাগছে, এই বিশেষ দিনে আমি ওদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পেরেছি বলে।
×