ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে ভিড়

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ২৬ জুন ২০১৭

বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে ভিড়

ওয়াজেদ হীরা ॥ ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা দেশ। যদিও রাজধানী অনেকটাই ফাঁকা তবে তাতে কি, রাজধানীতে বসবাস করা মানুষগুলোতো আছেই। সেই সাথে ছুটি থাকা স্বত্বেও অনেকেই ঝক্কি ঝামেলা নিয়ে যায়নি গ্রামে। ঈদের আনন্দে অবসর সময়ে তারা রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছে। ফলে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে বেশ ভিড় এখন। ঈদের জামাত শেষে কেউ কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটেছেন পরিচিত আত্মীয়স্বজনের বাসায় অ‍াবার অনেকেই ছুটেছেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। দুপুরের দিকে অনেক বিনোদনকেন্দ্রের সামনে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এই ভিড় বিকেলের দিকে আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে আগামীর কয়েকটি দিনে বিনোদনকেন্দ্র ঘিরে মানুষের সমাগম থাকবে বলেও জানান একাধিক বিনোদন কেন্দ্রের দায়িত্বরতরা। শিশু থেকে বৃদ্ধ কিংবা মধ্যবয়সী সবাই চায় একটু আনন্দে মেতে থাকতে। আসন্ন ঈদুল ফিতরে রাজধানীর বিনোদনকেন্দ্রগুলো নগরবাসীকে নির্মল আনন্দ দিতে আগে ভাগেই নতুনভাবে সেজে ছিল। শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, জাতীয় জাদুঘর, ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত করা হয়েছিল একটু ভিন্নভাবে। সব বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠে নগরীর এ বিনোদন কেন্দ্রগুলো। ছোট্ট সোনামণিদের আনন্দঘন সময় কাটনোর জন্য শহরের প্রাণকেন্দ্র রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত শিশুপার্ককে নতুন সাজে সাজিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পার্কের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, ঈদ উপলক্ষে সবগুলো রাইড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ত্রুটি বিচ্যূতি দূর করা হয়েছে। রং উঠে যাওয়া রাইডগুলোতে নতুন রং করা হয়েছে। পুরো পার্কজুড়ে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিশুপার্কে বর্তমানে ১১টি রাইড রয়েছে। ঈদের প্রথম ৪ দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পার্ক খোলা থাকবে। তবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা ঈদ উপলক্ষে বুধবার বিনা টিকেটে প্রবেশ ও রাইডে চড়ার সুযোগ পাবে। দুপুরের দিকে এই পার্কে অনেক শিশু সাথে তার অবিভাবকের পদচারণায় ‍মুখর থাকতে দেখা গেছে। ঈদ উপলক্ষে চিড়িয়াখানার জীব-জন্তুর খাঁচাসহ পুরো চিড়িয়াখানা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম। ঈদের দিন সকাল ৮টায় চিড়িয়াখানার গেইট খুলে দেওয়া হয় যার প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ দর্শনার্থী চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে আসবে এমন আশা করছেন চিরিয়াখানার কিউরেটর। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা ২ হাজার ৬৮০টি। ঈদের দিন জাদুঘর খোলা না থাকলেও, পরদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অন্য দিনগুলোতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গ্যালারি ঘুরে দেখা যাবে। ঈদে শিশু কিশোর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা টিকেটে জাদুঘর পরিদর্শনের সুযোগ থাকবে বলে জানা গেছে। ঢাকার আশুলিয়ায় গড়ে উঠেছে আধুনিক এ বিনোদন কেন্দ্র। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম ও ওয়াটার কিংডম। ফ্যান্টাসি পার্কে বড়দের প্রবেশমূল্য ৪০০ টাকা। ছোটদের ৩৫০ টাকা। ফ্যান্টাসি কিংডমে প্রবেশসহ ৮০০ টাকার টিকেটে ওয়াটার কিংডমে সাঁতারও কাটা যাবে এবং একই সাথে ওয়েভপুল, লেজি রিভার, টিউব স্লাইড, ওয়াটারপুলসহ বিভিন্ন রাইডে চড়া যাবে। ফ্যান্টাসি কিংডমের ভেতরেই রয়েছে হেরিটেজ পার্ক। এখানে দেখা যাবে বেশী কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা। রেপ্লিকা ধরনের হলেও নিদর্শনগুলো দেখে দর্শনার্থীদের ভাল লাগবে বলে টুটুল জানান। পাশাপাশি চড়া যাবে জায়ান্ট ফেরিস হুইল, পাইরেট শিপ, ড্রাই স্লাইড, কফি কাপ, ব্যাটারি কার, ফ্যামিলি ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডে। এছাড়াও নবীনগরের বারুইপাড়ায় অবস্থিত নন্দন পার্ক, মিরপুর মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকার শিশুকিশোরদের প্রধান বিনোদন কেন্দ্র ডিএনসিসি ওয়ান্ডাল্যান্ডগুলোতেও মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এসব বিনোদন কেন্দ্রের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান, জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজাসহ বিভিন্ন খোলামেলা জায়গায় মতো পরিবেশতো আছেন। আর এসব জায়গায় নির্মল বিনোদন পেতে রাজধানীর মানুষের প্রধান ভরশা।
×