ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২৫ জুন ২০১৭

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এসেছে খুশির ঈদ-উল-ফিতর, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দ-উৎসব। ঘরে ঘরে, জনে জনে আনন্দ ও খুশির বার্তা বয়ে এনেছে এই ঈদ। দিনটি ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলকে এক কাতারে শামিল করার চেতনায় উজ্জীবিত করে, কল্যাণের পথে ত্যাগ ও তিতিক্ষার মূলমন্ত্রে দীক্ষিত করে। এ সময় গরিব-দুস্থদের ঈদের আনন্দে শরিক করার জন্য রয়েছে ফিতরা ও যাকাতের ব্যবস্থা, যা বিত্তবান প্রতিটি মুসলমানের জন্য অবশ্যই প্রদেয়। নতুন পোশাক পরে সকালে ঈদগাহে নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচী। ধনী-দরিদ্র সবাই এই দিন আনন্দে মেতে ওঠে। ঈদ-উল-ফিতরের মূল তাৎপর্য বিভেদমুক্ত জীবনের উপলব্ধি। ভুল-ভ্রান্তি, পাপ-পঙ্কিলতা মানুষের জীবনে কমবেশি আসে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়। কিন্তু পরম করুণাময় আল্লাহ চান মানুষ পাপ ও বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে সৎপথে ফিরে আসুক। সম্প্রীতির আনন্দধারায় সিক্ত হয়ে উন্নত জীবন লাভ করুক। ঈদ-উল-ফিতর মানুষকে এই শিক্ষা দেয়। দিবসটির উৎসব তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে সমাজের ধনী-দরিদ্রের সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে। শ্রেণীবৈষম্য বিসর্জনের মধ্য দিয়েই এ আনন্দ সার্থক হয়ে ওঠে। মানুষ ব্যাপকভাবে ঈদের কেনাকাটা করেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঈদের বাজারে কেনাকাটা অনেক বেশি। রাজধানীর সুসজ্জিত বিপণিবিতান থেকে ফুটপাথ- সব জায়গাতেই বিক্রি প্রচুর। শহরের মানুষ গ্রামমুখী হওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সমাজে শ্রেণীবৈষম্য তথা ধনী-গরিবের ব্যবধান এখনও বিরাজমান। এই বিভেদ-বৈষম্য আনন্দের সময়েও দেশের সকল শ্রেণীর মানুষকে এক কাতারে আনতে যেন খানিকটা বাধার সৃষ্টি করে। ঈদের ছুটিতে রাজধানী শহর থেকে লাখ লাখ মানুষ গ্রামের বাড়িতে যায় পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করতে। ঈদের উৎসব শেষে আবার অগণিত মানুষ ফিরে আসবে শহরে, কর্মস্থলে। যাওয়া-আসার সময় বহু মানুষকে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরার যে আনন্দ হওয়ার কথা এসব বিড়ম্বনার কারণে বহু জনের সে আনন্দ অনেকটা কমে যায়। যেসব মানুষ নাড়ির টানে গ্রামে ঈদ করতে গেছেন, তারা যদি পুনরায় নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরতে পারেন, তবেই তাদের ছুটিতে ঘরে ফেরার আনন্দ পূর্ণতা পাবে। নানা ভোগান্তি আর কষ্টের পরও আপনজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার অনুভূতিই আলাদা। ঈদ বিভেদ-বৈষম্যহীন, ভ্রাতৃচেতনায় ঋদ্ধ এক নির্মল আনন্দ-উৎসব-বিনোদনের উপলক্ষ। এই দিনে সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে হয় আনন্দ। ঈদ-উল-ফিতর উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব সকল প্রকার হিংসা, হানাহানিমুক্ত হোক। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের বিভীষিকা দূর হোক। সকল শ্রেণীপেশার মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে বন্ধন সুদৃঢ় হোক, আনন্দে ভরে উঠুক প্রতিটি দিন- এই প্রত্যাশায় ঈদ মোবারক, সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।
×