ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর ঈদ বিনোদন

পার্ক বিনোদন কেন্দ্র প্রস্তুত, আনন্দঘন ঈদের অপেক্ষা

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৫ জুন ২০১৭

পার্ক বিনোদন কেন্দ্র প্রস্তুত, আনন্দঘন ঈদের অপেক্ষা

মোরসালিন মিজান ॥ ঈদ করতে বহু মানুষ ঢাকা ছেড়ে গেছেন। ঢাকা মোটামুটি ফাঁকা এখন। ফাঁকা ঢাকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগটা এবারও কাজে লাগাবে রাজধানীবাসী। যথারীতি ভিড় করবেন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। সেভাবেই নেয়া হয়েছে প্রস্তুতি। শিশুপার্ক শিশুপার্কের স্বতন্ত্র আবেদন। প্রতিবারের মতো এবারের ঈদেও শিশুরা বাবা-মায়ের সঙ্গে এখানে আসবে। বিভিন্ন রাইডে চড়বে তারা। ছোটমণিদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত কর্তৃপক্ষ। পার্কের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, শিশুপার্কে বর্তমানে ১১টি রাইড রয়েছে। পুরনো রাইডগুলো রং করা হয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটি আছে কি না, ভালভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে করা হয়েছে আলোকসজ্জাও। তিনি জানান, ঈদের প্রথম চার দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। প্রবেশমূল্য ১৫ টাকা। ১০ টাকার টিকেট সংগ্রহ করে চড়া যাবে রাইডে। তবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য থাকছে বিশেষ সুবিধা। বুধবার বিনা টিকেটে প্রবেশ ও রাইডে চড়তে পারবে তারা। চিড়িয়াখানা ঈদের দিন সকাল ৮টা থেকে খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা। ৩০ টাকার টিকেটে প্রবেশ করা যাবে পশুপাখির রাজ্যে। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রজাতির ২ হাজার ৬৮০টি প্রাণী আছে। এসব প্রাণী দেখতে ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন ১ থেকে দেড় লাখ দর্শনার্থী চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করবেন বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডাঃ এস এম নজরুল ইসলাম জানান, বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর কথা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন তারা। কয়েকটি কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করছে। চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি থাকবে র‌্যাবের টহল। জাতীয় জাদুঘর ঈদের দ্বিতীয় দিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে জাতীয় জাদুঘর। অন্যান্য দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাদুঘর পরিদর্শন করা যাবে। ঈদে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা টিকেটে জাদুঘর পরিদর্শনের সুযোগ থাকবে বলেও জানান মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। একইভাবে খোলা থাকবে স্বাধীনতা জাদুঘর। চলচ্চিত্রও দেখা যাবে জাতীয় জাদুঘরে। শিশুমেলা শ্যামলীর শিশুমেলা আশপাশ এলাকার শিশু-কিশোরদের প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। এটি বর্তমানে ডিএনসি ওয়ান্ডারল্যান্ড নামে পরিচিত। এখানে আছে ৪০টির মতো রাইড। পরিবারের সকলের চড়ার মতো আছে ১২টি রাইড। শিশুমেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের প্রথম সাতদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এটি খোলা থাকবে। ফ্যান্টাসি কিংডম ঈদে থিমপার্কগুলোতে বিশেষ ভিড় লক্ষ করা যায়। ঢাকার পাশেই আছে একাধিক থিমপার্ক। ঢাকার আশুলিয়ায় গড়ে উঠেছে আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টাসি কিংডম। ঈদে এখানে ঢল নামবে দর্শনার্থীদের। কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্টের হেড অব মিডিয়া এ্যান্ড পিআর মাহফুজুর রহমান টুটুল জানান, ঈদের প্রথম সাতদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম। পাশেই ওয়াটার কিংডম। দুটিই খোলা থাকবে ঈদে। বড়দের প্রবেশমূল্য ৪০০ টাকা। ৩৫০ টাকার টিকেট ছোটদের জন্য। ফ্যান্টাসি কিংডমে প্রবেশসহ ৮০০ টাকার টিকেট কেটে সাঁতার কাটা যাবে ওয়াটার কিংডমে। একইসঙ্গে ওয়েভপুল, লেজি রিভার, ওয়াটারপুলসহ বিভিন্ন রাইডে চড়া যাবে। ফ্যান্টাসি কিংডমের ভেতরেই রয়েছে হেরিটেজ পার্ক। উপভোগ করার মতো অনেক কিছুই আছে এখানে। পাশাপাশি চড়া যাবে জায়ান্ট ফেরিস হুইল, পাইরেট শিপ, ব্যাটারি কার, ফ্যামিলি ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডে। নন্দন পার্ক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সাভারের নন্দন পার্ক। পার্কের হেড অব মার্কেটিং মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন প্রিন্স জানান, ঈদের দিন সকাল থেকেই খোলা থাকবে পার্ক। সাধারণ প্রবেশ মূল্য ২৯৫ টাকা। সব রাইড উপভোগ করা যাবে (খাবারসহ) ৮৯৫ টাকায়। খাবার ছাড়া জনপ্রতি গুনতে হবে ৬৯৫ টাকা। ৬১০ টাকায় থাকছে ঈদের বিশেষ প্যাকেজ। ওয়াটার ওয়ার্ল্ড ও ড্রাই পার্কের সব রাইডও উপভোগ করা যাবে এই প্যাকেজের আওতায়। ঈদের পরবর্তী দিনগুলোতে পার্কে লাইভ মিউজিক, ডিজে, ড্যান্স শো ইত্যাদির আয়োজন থাকবে বলে জানান তিনি। এ সবের বাইরে ছোট-বড় আরও বহু বিনোদন কেন্দ্রে ঈদ উদ্যাপনের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান, জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজাসহ বিভিন্ন খোলামেলা জায়গায় মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াবেন সাধারণ মানুষ।
×