ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদ শিল্পের ওপর আরোপিত ১৫ ভাগ কর প্রত্যাহার করুন ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২২ জুন ২০১৭

সংবাদ শিল্পের ওপর আরোপিত ১৫ ভাগ কর প্রত্যাহার করুন ॥ তথ্যমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রস্তাবিত বাজেট থেকে সংবাদ শিল্পের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর এবং ব্যাংক আমানতের ওপর আরোপিত আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, সংবাদপত্র শিল্প রক্ষায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। সংবাদপত্রের উপর ১৫ ভাগ ভ্যাট আরোপ সঠিক নয়। প্রধানমন্ত্রীর ৯ বছরে গণমাধ্যমের যে বিকাশ এবং প্রসার ঘটেছে এই ভ্যাট আরোপের ফলে সংবাদপত্র শিল্পকে একটু ধাক্কা দেবে, হোঁচট খাবে। বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী আগামী একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে চার চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে বলেন, সঠিক সময় নির্বাচন করা, নির্বাচন বানচাল করার জন্য যে চেষ্টা করবে তা রুখে দেওয়া, উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখা এবং জামায়াতি জঙ্গীবাদ উগ্রবাদকে ক্ষমতার বাইরে রাখা। এখন আমাদের যুদ্ধ হচ্ছে জঙ্গী দমনের যুদ্ধ। জঙ্গীর সঙ্গিকে ক্ষমতার বাইরে রাখার যুদ্ধ। আর অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যুদ্ধ। এই তিন যুদ্ধ করে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের অর্থনৈতিক যুদ্ধের যে অর্জন তার ফসল এই বাজেট। ব্যাংক আমানতের ওপর এক লাখ নয় ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্কমুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে হাসানুল হক ইনু বলেন, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের কথা চিন্তা করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্কমুক্ত রাখুন। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী সুবিধা পাবে। এটা করলে মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্য বিত্তের মুখে হাসি ফুটবে। ভ্যাট পদ্ধতি আমি সঠিক মনে করি না। কারন ভ্যাট পদ্ধতি ধনীদরিদ্রকে এক পাল্লায় মাপা হয়। অর্থমন্ত্রীর সমালোচকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকাকে সফল বলবেন আর অর্থমন্ত্রীকে ব্যর্থ বলবেন- এটা হতে পারে না। অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শক্রমেই বাজেট দিয়েছেন। তাই ঢালাওভাবে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করা ঠিক হবে না। অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আপনারা স্বীকার করছেন। এক দিকে বলবেন অর্থনীতি সফল। আরেক দিকে অর্থমন্ত্রী ব্যর্থ এটা হবে না। অর্থনীতি সফল হলে অর্থমন্ত্রীও সফল, প্রধানমন্ত্রীও সফল। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আইন আবগারি শুল্ক ও সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানো নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে দোষারোপ করেছেন অনেকে। তাঁর ওপর তীর ছুঁড়েছেন। এই তিনটি বিষয়ই শুধু বাজেট নয় বাজেটে আরো অনেক বিষয় আছে। এই বাজেট দিক বদলের ধারাবাহিকতার বাজেট। এতো বড় বাজেট উত্থাপন করা মানে জাতিয় সক্ষমতার পরিচয়। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বিশাল বরাদ্দ। গ্রামীণ উন্নয়ন খাতে বিশাল বরাদ্দ আছে। যদিও কৃষিখাতে বরাদ্দ কম হয়েছে। এই ৯ বছরে সরকার দরিদ্র্য, হত-দরিদ্র দূর করতে সক্ষম হয়েছে। যারা সা¤্রাজ্যবাদ জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, যারা বিশ্বব্যাংক আইএমএফ এর কথায় চলে- তারাই অতীতে অর্থনীতিকে পেছনের দিকে নিয়ে গিয়েছিল। ২০০৯ সালে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসে সেই পরিবর্তনটাই অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা করে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে হাসানুল হক ইনু বলেন, রাজনীতিতে যুদ্ধ রয়েছে, অর্থনৈতিক যুদ্ধ রয়েছে। এবার যদি রাজনৈতিক যুদ্ধে হেরে যাই, তাহলে অর্থনৈতিক যুদ্ধ পরাজিত হবে। তাই রাজনৈতিক যুদ্ধে আমাদের বিজয়ী হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে বলবো সামনে নির্বাচন। শত্রু-মিত্রকে চিহ্নিত করতে হবে। ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দেন। বন্ধুদের কাছে রাখুন এবং শত্রুদের কোনো ছাড় দেবেন না। তবেই কেবল সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের লুটপাট অব্যহত আছে। আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে ফিরে আসছি। সেখানে বিচার দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে আমাদের বের হতে হবে। ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎকারীরা জামিন পাবার পরে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে বের হয়ে যাবে, বেগম খালেদা জিয়ার এতিমের টাকা মারার পরে জামিন নিয়ে দুই আঙ্গুল দেখিয়ে অর্থাৎ বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে বেরিয়ে আসেন- এটা বাজে একটা সংস্কৃতি। ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করার পরে খালেদা জিয়া বিজয় চিহ্ন দেখাতে দেখাতে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসেন- এটা জাতির জন্য লজ্জার। আমি সবাইকে বলবো আসুন আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসি।
×