ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের কেনাকাটা

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২০ জুন ২০১৭

ঈদের কেনাকাটা

সিয়াম সাধনার মাস রমজানের সংযম আর আত্মশুদ্ধির মহিমান্বিত পর্বটি প্রায় শেষ হতে চলেছে। আর এই ক্রান্তিলগ্নের সন্ধিক্ষণ মানেই পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের আনন্দ আর উৎসব। আর এই আনন্দযজ্ঞে সাধারণ মানুষের নিরবচ্ছিন্ন অংশগ্রহণ ঈদ উৎসবকে করে আরও বর্ণাঢ্য এবং আলোকময়। উৎসবমুখরিত ঈদ আনন্দের যাত্রা শুরু হয় রোজার কয়েক দিন পার হবার পর পরই। আর তখন থেকেই সাধারণ মানুষ আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করেই কেনাকাটা শুরু করে দেয়। যতই দিন যেতে থাকে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে সারাদেশে এক অন্যরকম পরিবেশ-পরিস্থিতির শিকার হয়। সব জায়গায় উপচে পড়া ভিড়, তীব্র যানজট, যাত্রা দুর্ভোগ থেকে আরম্ভ করে আরও হরেকরকম বিপাকে পড়ে সাধারণ জনগোষ্ঠী। তার পরও আনন্দ আর আগ্রহের মাত্রাও কম নেই। বড় বড় শপিংমলে যেমন উপচে পড়া ভিড় একইভাবে সাধারণ বাজার কিংবা ফুটপাথে বিক্রি করা বাহারি পণ্যের ক্রেতারও কোন কমতি নেই। ঈদের কেনাকাটায় লক্ষ্য করা যায় পুরুষের চাইতে নারী এবং শিশুদেরই পোশাকের আকর্ষণ এবং মনোযোগ অনেক বেশি। পছন্দের কাপড় বাছাই করতে ক্রেতারা যেমন হিমশিম খান তেমনই বিক্রেতারাও ব্যস্ত হয়ে পড়েন আগ্রহী ভোক্তাদের সেবা দিতে। সে এক অপরূপ মনোরম এক পরিবেশ। আগ্রহী দর্শনার্থীদের ভিড়ে পুরো বাজারেরই রমরমা অবস্থা। যার প্রভাব পড়ে ফুটপাথে, রাস্তায় এবং গণপরিবহনে। দেশীয় ব্র্যান্ড অন্যান্য শোরুম এর পণ্য সাজিয়ে ক্রেতাসাধারণের সামনে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবছরই ঈদের নতুন আকর্ষণ হিসেবে নতুন দ্রব্যসামগ্রী ক্রেতাদের জন্য আনা হয়। ক্রেতারাও সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে ঈদের কেনাকাটায় নতুন কিছু সংযোজন করার প্রত্যাশায়। উচ্চ, মধ্য এবং নিম্নবিত্তের হাতের নাগালের মধ্যেই থাকে ঈদের বাজার। তবে পণ্যের ওপর যে বাড়তি দাম দাবি করা হয় তাতে ক্রেতা সাধারণ হিমশিম খাওয়ার অবস্থা। তবুও ঈদ কেনাকাটায় কোন ঘাটতি থাকে না যেমন ক্রেতাদের একইভাবে বিক্রেতা এবং উদ্যোক্তাদেরও। ঈদ আনন্দের বিরাট অংশজুড়ে থাকে কাঁচাবাজারের হরেকরকম পণ্য। সেখানে দুধ, চিনি, সেমাই থেকে আরম্ভ করে তরিতরকারি সর্বোপরি মাংসেরও একটি বিরাট ভূমিকা থাকে। যদিও সরকার ঈদের বাজারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সচেতন এবং উৎসাহী। তারপরেও সবকিছুতে নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না। আর সাধারণ মানুষও ঈদের বাজেটকে অতিক্রম করতে খুব বেশি ভাবেও না। ঈদ আনন্দের আরও একটি বড় উৎসব ঘটা করে দেশের বাড়ি যাওয়া। ঈদের লম্বা ছুটিতে সুযোগ তৈরি হয় বাড়িতে গিয়ে কয়েকদিন ঘুরে আসার। এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত গণপরিবহনের টিকিট ক্রয়-বিক্রয়। এতেও সাধারণ মানুষের খুশির সঙ্গে জড়ানো থাকে নানান দুর্ভোগ ও নির্দিষ্ট দিনে সহজভাবে টিকিট কিনতে না পারলে তার খেসারত যে কি পরিমাণ দিতে হয় তা ভুক্তভোগীরাই বুঝতে পারে। এরপরও থাকে দীর্ঘ যাত্রার অসহনীয় দুরবস্থা। বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে উপচে পড়া যাত্রীর ভিড়ে নাজেহাল অবস্থা। অসহ্য যানজটে যাত্রার আনন্দ মাটি হয়ে যাওয়া শেষমেশ কোনমতে গন্তব্যে পেঁৗঁছা। ঈদের আনন্দ আর ছোটখাটো বাধা বিপত্তি মিলিয়েও এ উৎসব বয়ে যায় মানুষের অন্তরে আর সবার ঘরে ঘরে।
×