ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সাজে

ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে বহে কিবা মৃদু বায়, ভিন্ন রকম স্বস্তি

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২০ জুন ২০১৭

ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে বহে কিবা মৃদু বায়, ভিন্ন রকম স্বস্তি

খোকন আহম্মেদ হীরা ॥ বাহারি রঙের ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে কর্মব্যস্ত বরিশালের বিভিন্ন সড়ক, উদ্যান ও বিনোদন কেন্দ্র। আধুনিক এ নগরীর গাছের সংখ্যা কমতে থাকলেও গ্রীষ্মের ফুল নগরবাসীর মনে এনে দিয়েছে ভিন্ন রকম স্বস্তি। চারদিকে তাকাতেই মনে পড়ে যায় কবিগুরুর সেই গান ‘ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে বহে কিবা মৃদু বায়...’। নগরীতে নানা রঙের-ঢঙের ফুলের শোভা প্রচ- গরমেও এনে দিয়েছে এক ধরনের স্বস্তি। হয়তো ফুলগুলো দেখলে ক্লান্ত পথিকও মুগ্ধ হয়ে যায়। ক্ষণিকের জন্য হলেও নগরবাসীকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় প্রকৃতির কাছে। ফুল গাছগুলোর নিচে গিয়ে যেন মানুষ ভুলে যায় তাদের বর্তমান। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান, রাজা বাহাদুর সড়ক, পার্শ্ববর্তী ডিসি লেক, বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক ঘিরে অসংখ্য গাছে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, সোনালু ও জারুল ফুল। রয়েছে প্যারাসাইট বা পরজীবী ফুলের উপস্থিতি। ওইসব স্থানে ফুলের মুগ্ধতা দেখতে সারাদিন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের ভিড় থাকে। সেখানে কেউ কেউ বন্ধুুদের নিয়ে আড্ডা বসিয়ে দেন, কেউবা আবার সেলফি তোলেন আবার কেউবা পছন্দের মানুষকে নিয়ে ঘুরতে আসেন। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে তেমনই একজন সাইফুল ইসলাম তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে ঘুরতে এসে জানান, সুযোগ পেলেই তারা বিকেলে বাহারি রঙের ফুলের এ রাজ্যে ঘুরতে আসেন। এতে তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের খুবই ভাল লাগে। গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে একটু স্বস্তি দিতে প্রকৃতির এ আয়োজন সত্যিই মনোমুগ্ধকর। নগীর মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, কীর্তনখোলা নদী তীরের ডিসি ঘাটসংলগ্ন এলাকা, সার্কিট হাউস, চৌমাথা লেক, বিবির পুকুর পাড়, শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ, বিএম কলেজ ক্যাম্পাস ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কজুড়েও রয়েছে বাহারি ফুলের এমন সাজ। কয়েকটি এলাকার রাস্তার দুই ধারে পথগন্ধা ভাঁটফুলসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল শোভা পাচ্ছে। তবে প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য ধরে রাখতে গাছ না কেটে সংরক্ষণ বা আরও বেশি করে গাছ লাগানোর তাগিদ দিয়ে পরিবেশবিদরা বলেন, গ্রীষ্মে প্রকৃতিতে গ্রামে একসময় হলুদ-সোনালি ফুলে ছাওয়া অনেক সোনালু গাছ চোখে পড়ত। এখন হাতেগোনা কিছু গাছ দেখা যায় পথে-প্রান্তরে। দিন দিন কমে আসছে সোনালুর সংখ্যা। কারণ হিসেবে তারা মনে করেন, এ গাছের কাঠ খুব একটা দামী নয় বলে কিংবা গাছটি খুব ধীরে বাড়ে বলেই কেউ আর তেমন উৎসাহ নিয়ে সোনালু গাছ রোপণ করেন না। প্রাকৃতিকভাবে যা জন্মে তার ওপর ভর করেই হলুদ-সোনালি রঙা ফুলের সৌন্দর্য ছড়িয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে সোনালু ফুল। জেলার বৃক্ষপ্রেমী গৌরনদীর মাহিলাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু জানান, চার বছর ধরে তিনি তার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামীণ জনপদের রাস্তার দুই পাশে দুর্লভ ফলদ, বনজ, ঔষধি গাছের পাশাপাশি পাঁচটি চেয়ারম্যান গার্ডেনে বকুল, হৈমন্ত, কুরচী, সোনালু, রাধাচূড়া, কেছিয়া, কৃষ্ণচূড়া, কাঞ্চন, করবী, জারুল ও পলাশসহ বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির ফুল গাছ রোপণ করেছেন। সেসব ফুল গাছে এ বছর প্রচুর ফুটেছে। বাহারি রঙের ফুলের রাজ্যে প্রতিদিনই সপরিবারে ঘুরতে এসে প্রকৃতির অনিন্দ্য আয়োজনে প্রকৃতিপ্রেমীরা মুগ্ধ হচ্ছেন এটাই তাদের বড় পাওয়া।
×