ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নিহত ১, আহত ১০ টেরেসা মের সমবেদনা

লন্ডনে তারাবি শেষে ফেরার পথে মুসল্লিদের ওপর চলন্ত ভ্যান

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ২০ জুন ২০১৭

লন্ডনে তারাবি শেষে ফেরার পথে মুসল্লিদের ওপর চলন্ত ভ্যান

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ লন্ডনে তারাবি নামাজ শেষে ফেরার পথে মুসল্লিদের ওপর চলন্ত গাড়ি উঠিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে এক মুসল্লি নিহত ও অপর ১০ জন আহত হয়েছে। রবিবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১২টায় উত্তর লন্ডনের সেভেন সিস্টার্স রোডের ফিনসবারি পার্ক মসজিদের কাছে এ হামলা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪৮ বছর বয়সী একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যা দিয়ে আক্রান্তদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এদিকে এ হামলায় নিহত মুসল্লি বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বলে কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য তার নাম ও পরিচয় বলা হয়নি। খবর বিবিসি, টেলিগ্রাফ ও এএফপির। ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিল এ হামলাকে ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামভীতির একটি হিংসাত্মক প্রকাশ বলে জানিয়েছে। খালিদ আমিন নামে প্রত্যক্ষদর্শী এক মুসল্লি বলেন, ঘটনার সময় হামলাকারী চিৎকার করে বলতে থাকে ‘আমি সব মুসলিমকে হত্যা করতে চাই’। আব্দুল রহমান নামে অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হামলাকারী যখন ভ্যান থেকে বের হয়ে আসছিল, আমি তাকে ধরার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার হাত থেকে ফসকে যায়। এ সময় লোকটি বলতে থাকে আমি মুসলমানদের হত্যা করতে চাই। পরে দ্বিতীয়বার আমি তার পেটে আঘাত করি। এরপর কয়েকজন মিলে তাকে নিচে আটকে রাখি। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে। তবে লোকটি মানসিক রোগী হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। আদিল রানা নামে ২৪ বছর বয়সী অপর একজন বলেন, হামলাকারীকে পাকরাও করার পর মাটিতে আটকে রাখা হয়। এ সময় অনেকেই তাকে কিলঘুসি মারছিল। এরপর মসজিদ থেকে ইমাম সাহেব বের হয়ে এসে সবাইকে থামিয়ে দেন। ইমাম সাহেব বলেন, ওকে (হামলাকারী) আঘাত কর না। পুলিশের কাছে সোপর্দ কর। খবরে বলা হয়েছে, রোজা শেষে অনেক লোক রাস্তার ওপর নামাজে ব্যস্ত ছিল। ঠিক তখনই সাদা রঙের একটি ভ্যান দ্রুত বেগে রাস্তায় চলতে দেখা যায় এবং এরপর ভিড়ের ওপর উঠে যায়। জরুরী বিভাগে খবর দেয়া হয়। এরপর চিকিৎসক, এ্যাম্বুলেন্স ক্রু, প্যারামেডিক্যাল কর্মী এবং স্পেশালিস্ট রেসপন্স দল এবং এ্যাডভান্সড ট্রমা ব্যবস্থাপনা দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। অসংখ্য পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাম্বার রাড বলেছেন, এ হামলাকে পুলিশ একটি সন্ত্রাসী হামলা হিসেবেই দেখছে। ব্রিটিশ কাউন্টার টেররিজম সদস্যরা এর তদন্ত শুরু করেছে। লেবার পার্টির নেতা এবং স্থানীয় এমপি জেরেমি করবিন টুইটারে লিখেছেন, এ ধরনের হামলায় তিনি ভীষণভাবে ব্যথিত। সেখানকার বিভিন্ন মসজিদ, পুলিশ এবং স্থানীয় কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানান তিনি। লন্ডন মেয়র সাদিক খান বলেছেন, মুসলিম লোকজন বিশেষ করে যারা রোজা রাখছেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা এখনও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানি না কিন্তু এটা পরিষ্কারভাবেই লন্ডনবাসীর ওপর ইচ্ছাকৃত একটি হামলা। আর যাদের ওপর হামলা চালানো হয় তাদের অনেকেই পবিত্র রমজানের নামাজ আদায় শেষ করছিলেন। ম্যানচেস্টার, ওয়েস্ট স্টমনিস্টার এবং লন্ডন ব্রিজে ভয়ানক হামলার মতো এটাও নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের ওপর চালানো হামলা বলে তিনি জানান। একইসঙ্গে পারস্পরিক সহনশীলতা, স্বাধীনতা এবং শ্রদ্ধাবোধের ওপরও হামলা এটি। ব্রিটেনে মুসলিম কাউন্সিলের মহাসচিব হারুণ খান বলেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে প্রার্থনারতদের ওপর ভ্যান চালিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এতে তিনি বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ। উত্তর লন্ডনের ইহুদি সম্প্রদায়ের কাউন্সিলের পক্ষ থেকে টুইটারে এ হামলাকে বর্বরোচিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পূর্ববতী খবর পাঁচ এর পাতায়।
×