ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদে জমে উঠেছে অনলাইনে কেনাকাটা

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ১৮ জুন ২০১৭

ঈদে জমে উঠেছে অনলাইনে কেনাকাটা

সময়ের সঙ্গে দ্রুত বদলে যাচ্ছে আমাদের জীবনযাত্রা। নগর জীবনে প্রাত্যহিক কেনাকাটাতেও এসেছে পরিবর্তন। ব্যস্ত নগরজীবনে ঘরে বসেই কেনাকাটার উপায় করে দিয়েছে অনলাইন শপিংসাইটগুলো। যানজট ঠেলে বাজারে না গেলেও চলবে। শুধু থাকতে হবে ইন্টারনেট সংযোগ। পেশাগত কর্মব্যস্ততার চাপ, কেনাকাটা করতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হওয়ার আশংকার কারণে আজকাল অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। অনলাইনে কেনাকাটা মানে ই-শপিং আমাদের অর্থনীতিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করছে বলা চলে। ই-শপিং এখন অনেকের জীবনকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করছে। আগে কোন জিনিস কিনতে পুরো বাজার ঘুরতে হতো। যাতে সময় নষ্ট হতো অনেক। এখন বিভিন্ন ওয়েব পোর্টালে ঘুরে ঘুরে পছন্দের পণ্যসামগ্রী কেনাকাটা সম্ভব হচ্ছে। ডিজাটাল যুগে কষ্ট কমিয়ে দিচ্ছে অনলাইন শপিং সাইটগুলো। পিছিয়ে নেই সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক। কম্পিউটারে ব্রাউজ করলেই ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে নিজের পছন্দমতো পোশাক, গহনা বা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। ক্রেতা-বিক্রেতার ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে দেশে এখন অনলাইনে কেনাকাটার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি প্লাটফর্ম। জায়গা জমি থেকে শুরু করে ফ্ল্যাট, গাড়ি, হাঁড়ি-পাতিল, মাছ, শাক-সবজি, মাংস, মুরগি, ডিম, দুধ, মাখন, জামা, জুতো, মোবাইল ফোন, টিভি, ফ্রিজ সবই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। বাজার সদাই থেকে ট্রেন বাস প্লেনের টিকেটও আজকাল অনলাইনে বেচাকেনা হচ্ছে। জীবনে সহজ সাবলীল স্বাচ্ছন্দ্যভাব আনতে কেনাকাটার বেচাকেনার ওয়েব পোর্টালে চলছে জমজমাট ব্যবসা। ঈদকে কেন্দ্র করে ই-কমার্স বিশেষ করে পোশাকের সাইটগুলো খুব সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নিজেদের প্রচারণা চালাতে উঠে পড়ে লেগেছে। নিজের পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বিজ্ঞাপনের উপর জোর দিচ্ছে তারা। বিভিন্ন তরুণ-তরুণী মডেল নিয়ে তৈরি করা এসব বিজ্ঞাপনে নিজের পণ্যগুলো ফুটিয়ে তুলছে। অনেক ব্র্যান্ড আবার তৈরি করছে ভিডিও বিজ্ঞাপন। এই শোবিজে যোগ দিচ্ছেন নামী-দামী তারকারাও। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে নিজেদের পণ্য প্রদর্শন করা সহজ হচ্ছে। থেমে নেই ব্র্যান্ডশপগুলোও। আজ থেকে বছর পাঁচেক আগে হলেও হয়ত এ আয়োজনটি কল্পনাপ্রসূত হতো। কিন্তু এখন তা বাস্তব। কারণ যার হাতে আলাদিনের চেরাগের মতো সেই ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটার কিংবা অন্য কোন ডিভাইস আছে তার কাছে তো ঘরে বসে কেনাকাটা কিংবা দূর দেশে থাকা প্রিয় মানুষটির কাছে উপহার পাঠানো কোন ব্যাপারই নয়। জাতিসংঘের হিসাব মতে বর্তমানে দেশে প্রায় দেড় কোটি লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ হাজার লোক স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে এবং বাকিরা কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তারা সবাই ই-কমার্সের সেবা নিতে পারে। নিত্যদিনের যাবতীয় প্রয়োজনীয় কেনাকাটা এখন হচ্ছে ঘরে বসেই। বেশির ভাগ অনলাইন শপই ক্যাশ অন ডেলিভারি সার্ভিস দিয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, অনলাইন সাইটগুলো দ্রুত পণ্য ঘরে পৌঁছে দিতে নিয়ে এসেছে ‘হোম অন ডেলিভারি’, ‘ফ্রি ডেলিভারি’। অনেকেই মনে করেন, এ অনলাইন শপগুলোতে ভালমানের পণ্য পাওয়া মুশকিল। কিন্তু সে দুশ্চিন্তাও এড়িয়েছে অনলাইন সাইটগুলো। এখন এ শপগুলোতে ব্র্যান্ডের পণ্যও পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণেই তরুণদের চাহিদা বাড়ছে অনলাইন শপের প্রতি। স্বল্পসময়ে ঝামেলাহীন বাজারের চাহিদা মেটাতে বেশি ঝুকছে একক পরিবারগুলো। আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে আড়ংসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে সাজিয়েছে তাদের আউটলেট। ইন্টারনেট ঘুরে দেখা যায়, জামা-কাপড় থেকে শুরু করে ওয়ালেট পর্যন্ত প্রায় সবধরনের পণ্য রয়েছে অনলাইনে। এ ছাড়া প্রসাধনী সামগ্রী, ছোট ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যসহ হালকা পণ্য রয়েছে। তবে ঈদ উপলক্ষে মেয়েদের থ্রি-পিস, টপস, ফতুয়া, ফ্রক, শাড়ি, ছেলেদের প্যান্ট-শার্ট, পাঞ্জাবি, জুতা, টি-শার্ট ইত্যাদি পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সব বয়সী নারী-পুরুষের জুতা, মানিব্যাগ ও ঘড়ির চাহিদা রয়েছে। পণ্যভেদে এগুলোর দাম বিভিন্ন রকম হয়। এর মধ্যে মেয়েদের থ্রি-পিস সর্বনিম্ন ৬০০ থেকে শুরু“করে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত, শাড়ি ৫০০ থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। ছেলেদের পাঞ্জাবি ৭০০ থেকে ২০ হাজার টাকা কিংবা তারও বেশি। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি অনলাইন বাজারে দিচ্ছে ১০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট : িি.িফধৎধু.পড়স.নফ, িি.িধসধৎফবংযবংযড়ঢ়.পড়স, িি.িশধৎরমড়ৎ.পড়স, িি.ি নধহমষধফবংযনৎধহফং.পড়স, িি.িনধহমষধংযড়ঢ়ঢ়বৎং.পড়স , িি.িধশযড়হর.পড়স, িি.িধলশবৎফবধষ.পড়স, িি.িপযধষফধষ.পড়স, িি.িফৎবধসংযড়ঢ়নফ.পড়, িি.িরভবৎর.পড়স। তা ছাড়া রমজানে কেনাকাটার পেমেন্ট বিকাশ করলেই ২০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাবেন যে কেউ। লাইফস্টাইল, ফুটওয়্যার, সুপারশপ এবং অনলাইনের ৫৯টি ব্র্যান্ডের ১১৩২টি দোকানে ক্যাশব্যাক পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবার লেনদেনে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাবেন। আর সুপারস্টোরে লেনদেনের সংখ্যা কমপক্ষে দুটি হলে প্রতি লেনদেনে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক থাকছে।
×