ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আতিক তৌহিদুল ইসলাম

অন্যরকম পুনর্মিলনী

প্রকাশিত: ০৭:১২, ১৮ জুন ২০১৭

অন্যরকম পুনর্মিলনী

বিরামহীন কাজের চাপ, প্রতিনিয়ত স্বপ্নের পিছনে ছুটে চলা আর বাস্তবতার মুখোমুখি প্রতিদিন-এরই নাম জীবন। অনেকটা একঘেয়েমি এই জীবন থেকে মুক্তি পেতে আমরা কত কিছুই না করি। ঘুরতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া আরও কত কি। এরই মাঝে কখনও কখনও মন ফিরে পেতে চায় শৈশবের দিনগুলো। স্কুল-কলেজ জীবনের সেই সোনালি সময়গুলো। হ্যাঁ, আপনি চাইলে আবারও ফিরে পেতে পারেন সেই সোনালি দিনগুলো! হয়ত সেই বয়সে ফিরে যেতে পারবেন না, তবে ওই সময়ের বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে স্মৃতি রোমান্থন করতেই পারবেন। ভাবছেন কিভাবে? তবে এ জন্য আপনাকে হতে হবে এসএসসি ২০০২ অথবা এইচএসসি ২০০৪ সালের শিক্ষার্থী। এই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঝঝঈ ২০০২ অঘউ ঐঝঈ ২০০৪ ইধহমষধফবংয নামে চালু আছে একটি ফেসবুক গ্রুপ (এ ধরনের গ্রুপকে বলা হয় ভার্চ্যুয়াল জগতের কমিউনিটি, যেখানে সমমনা সদস্যদের মতের আদান-প্রদান ঘটে )। বর্তমানে ২০ হাজারের বেশি সদস্যের এই গ্রুপটি চালু হয় ২০১২ সালে। শুরুতে খুব বেশি এক্টিভিটি না থাকলেও এখন গ্রুপটি বেশ সক্রিয়। বলা যায়, এ বছরের এপ্রিল থেকে গ্রুপ মেম্বারদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রুপ এডমিনদের ব্যবস্থাপনায় গত ১৩ মে ঢাকা ও চট্টগ্রামে একযোগে পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়। যেখানে গ্রুপ মেম্বারদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যাচম্যাটদের কাছে পেয়ে সবাই যেন স্কুল-কলেজের সেই সময়ে ফিরে গিয়েছিল। অবশ্য সবাইকে দেখে বোঝার উপায় নেই অনেকের সঙ্গে আজই প্রথম পরিচয় ! এ প্রসঙ্গে ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তা তানভীর ইসলাম বলেন, আমরা ভিন্ন মত ও পেশার মানুষ হলেও এই গ্রুপ সবাইকে একই প্লাটফর্মে নিয়ে এসেছে। আরেক সদস্য নাজমুন নাহার রুনু বলেন, এখানকার আড্ডায় স্মৃতি রোমন্থন সবাইকে সেই স্কুল জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। যা কখনও হাসায়, কখনও আবার কাঁদায়। পরবর্তীতে গত ৯ জুন গ্রুপের পক্ষ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং খুলনা বিভাগে একযোগে ইফতারের আয়োজন করা হয়। গ্রুপের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে অন্যতম এডমিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, এই গ্রুপে যেকোন ধরনের সাহায্য চাইলে সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিছুদিন আগেই দেখলাম এক বন্ধুর বাবার জন্য রক্ত দরকার, শুনেছি ২ দিনে ১০ বন্ধু রক্ত দিয়েছে। অনেকে বন্ধুদের চাকরি পেতেও সাহায্য করছে। ডাক্তার বন্ধুরা দিচ্ছে হেলথ টিপস, আবার অনেক বন্ধু গ্রুপে তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার কথা বলে পাচ্ছে ডাক্তার বন্ধুদের পরামর্শ। দেখে মনে হয় সবাই অনেক দিনের পরিচিত। যে কোন বিপদে বা যে কোন প্রয়োজনে সবাই সবার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, শুধু নিজেরাই নিজেদের আনন্দ নিয়ে ব্যস্ত না থেকে গ্রুপের সদস্যরা সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এবারের ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে পথশিশুদের নতুন কাপড় দিয়ে তাদের মুখেও হাসি ফোটাতে চান। ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে আরেক এ্যাডমিন জাকারিয়া নাহিদ বলেন, বন্ধুদের মধ্যে আরও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি ডাটাবেজ করছি। একটি ওয়েবসাইট করারও পরিকল্পনা রয়েছে। কি কি বিষয় পোস্ট অনুমোদনে বিবেচনা করা হয় এমন প্রশ্নে নাহিদ বলেন, মূলত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট গ্রুপে দেয়া যায় না। এছাড়া আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করে সদস্যদের পোস্টগুলো অনুমোদন করা হয়।
×