ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াবে ভারত

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১৭ জুন ২০১৭

দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াবে ভারত

ভারত ২০১৯ সাল নাগাদ স্মার্টফোন সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে। বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে এ সময়ের মধ্যে যে পরিমাণ স্মার্টফোন সরবরাহ হবে, তাতে দেশটির দখল দাঁড়াবে ১৫ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের বাজার দখল দাঁড়াবে যথাক্রমে ১০ ও ৪ শতাংশ। জার্মানিভিত্তিক বাজার গবেষণা ও বিজনেস ইন্টেলিজেন্স পোর্টাল স্ট্যাটিস্টা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্মার্টফোন সরবরাহ বিবেচনায় শীর্ষ অবস্থানে থাকবে চীন। বিশ্বব্যাপী এ সময় যে পরিমাণ ডিভাইস সরবরাহ দাঁড়াবে, তার প্রায় অর্ধেকই হবে চীনের বাজারে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কী পরিমাণ ইউনিট স্মার্টফোন ডিভাইস সরবরাহ দাঁড়াতে পারে, সে বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। স্ট্যাটিস্টার তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ভারতে স্মার্টফোন ডিভাইস সরবরাহে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশ। এতে বাজারটিতে স্মার্টফোন সরবরাহ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ ইউনিট। ২০১৩ সালে বৈশ্বিক স্মার্টফোন সরবরাহ শত কোটি ইউনিটের মাইলফলক অতিক্রম করে। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী দুই বছর শেষে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন সরবরাহ ২০০ কোটির মাইলফলক অতিক্রম করবে। চীন স্মার্টফোন ডিভাইসের গুরুত্বপূর্ণ বাজার। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাজারটিতে সরবরাহ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। স্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড অপো, ভিভো ও হুয়াওয়ে বাজারটিতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। পাশাপাশি এ্যাপল, শাওমি ও স্যামসাং বাজারটিতে আধিপত্য বাড়াতে সমর্থ হয়েছে। কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাজারে স্মার্টফোন সরবরাহ বেড়েছে ১১ শতাংশ। অথচ এক বছর আগে একই প্রান্তিকে সরবরাহ কমেছে ২ শতাংশ। বৈশ্বিক বাজারে জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে মোট ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ হয়েছে। মার্কিন বিনিয়োগ তহবিল ‘ক্লেইনার পার্কিনস’ প্রকাশিত ‘ইন্টারনেট ট্রেন্ডস ২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ভারতে এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়েছে নয় গুণ। স্থানীয় টেলিযোগাযোগ কোম্পানি রিলায়েন্স জিও ইনফোকমের কার্যক্রম শুরু এবং এর বিনামূল্যের সেবার কারণে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। চলতি বছরের মার্চে ভারতীয়রা ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন গিগাবাইট মোবাইল ডাটা ব্যবহার করেছে। অথচ গত বছর একই সময়ে দেশটিতে ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি গিগাবাইট। বছর মেয়াদী ডাটা প্যাকেজ চালু করা হলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আরও এক ধাপ বাড়বে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান ‘রিলায়েন্স জিও’ কার্যক্রম শুরু করে। স্থানীয় এ টেলিকম অপারেটর যাত্রা করেছিল বছরের বাকি সময় বিনামূল্যে সেবা সরবরাহের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে কম দামে ডাটাসেবা সরবরাহের ব্যাপক পরিকল্পনা ও বিনামূলে ভয়েস কল চালু করে। বিশ্লেষকদের মতে, রিলায়েন্স জিও ভারতের মোবাইল ইন্টারনেটের গড় খরচে নাটকীয় পতন ঘটিয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট বাবদ গড় খরচ তিন বছর আগে ৪ দশমিক ৪ ডলার থাকলেও গত মার্চে তা ছিল ১ দশমিক ৯ ডলার। গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং সরঞ্জাম নির্মাতা সিসকো এক প্রতিবেদনে জানায়, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের প্রভাবে ২০১৬ সালে ভারতের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ কোটি ৩০ লাখ। ২০২১ সাল নাগাদ এ সংখ্যা থেকে বেড়ে ৮২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। দেশটিতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বৃদ্ধিতে স্মার্টফোনের মতো মোবাইল ডিভাইস ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। সিসকোর তথ্য মতে, ২০১৬ সালে ইন্টারনেটসেবা সরবরাহে ভারতে ১৪০ কোটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস ব্যবহৃত হয়েছে। ২০২১ সাল নাগাদ দেশটিতে ২০০ কোটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস ব্যবহার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিবৃতিতে সিসকো ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় কাউল বলেন, ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক, ডিভাইস ও সংযোগ ব্যবস্থা শুধু স্মার্ট হয়েই উঠছে না। একই সঙ্গে ব্যবহারকারীদের কম্পিউটিং সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। বর্তমানে দেশটিতে টুজি ও থ্রিজির পরিবর্তে ফোরজি নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ হচ্ছে। সূত্র ॥ ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস
×