ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাওরে দুর্নীতি নয় ॥ সংসদে পানিসম্পদ মন্ত্রী

প্রকাশিত: ২০:১০, ৩০ মে ২০১৭

হাওরে দুর্নীতি নয় ॥ সংসদে পানিসম্পদ মন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি বা কোন অবহেলার কারণে হাওরের বাঁধগুলো ভেঙ্গে গিয়েছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। প্রকৃত তথ্য উদঘাটনের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (উন্নয়ন) নেতৃত্ব ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল হক মাহমুদ। তিনি জানান, পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মার্চ মাসের শেষে সুনামগঞ্জসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছয় জেলায় বাঁধের ওপর দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় পানি প্লাবিত হয়। ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অধিকাংশ হাওর প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হাওরবাসীর দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং সেখানে গিয়েছেন। বন্যাকবলিত এরাকায় নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী নদী/খাল পুনঃখননের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রস্তাবিত ডিপিপিতে মোট ৭ হাজার ৬২০ কিলোমিটার খাল খনন বা পুনঃখনন ও ৪ হাজার ৮১৫ কিলোমিটার বাঁধ মেরামত বা পুনরাকৃতিকরণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে সেচ সুবিধার জন্য খাল খনন কর্মসূচি গ্রহণ করা সম্ভব হবে। বিএনএফের সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদের সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই ১৯৯৬ সালে ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক গঙ্গা পানিবন্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। গঙ্গার পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যেই গঙ্গা ব্যারেজ নামে একটি প্রজেক্ট গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু এই প্রকল্প নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের একজন মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমারও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ কারণে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঙ্গার পানির সর্বোত্তম ব্যবহারে কী কী কর্মপন্থা গ্রহন করা যায়, সে ব্যাপারে তারা একটি সুপারিশ দাখিল করবেন। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম এ মালেকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ঢাকার চতুর্দিকের নদীগুলোকে দুষণমুক্ত করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ‘বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার (নতুন ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশী-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম) শীর্ষক একটি প্রকল্পের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নতুন ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশী-তুরাগ নদী খননের কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। শুস্ক মৌসুমে বুড়িগঙ্গা নদীতে পানির প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে পানির গুণগতমান বৃদ্ধি, তুরাগ-শীতলক্ষ্যাসহ বুড়িগঙ্গা নদীর ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি, সেচ ও মৎস্য সম্পদেও উন্নয়ন অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন সাধিত হবে।
×