ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ রাখা হচ্ছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ২৭ মে ২০১৭

ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ রাখা হচ্ছে: অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আইন অনুযায়ী আগামী বাজেটে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমানো হচ্ছে না। কারণ শুরু থেকেই এটা আছে। অনেককে ভ্যাটের আওতা থেকে বের করে নিয়ে আসা হবে। তবে ভ্যাটমুক্ত টার্নওভারের সীমা এবার বাড়ানো হচ্ছে এবং দুই এক দিনের মধ্যে নতুন সীমা ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে আসন্ন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমালে সামান্য কমাতাম, কিন্তু সেখানে অনেক সমস্যা তৈরি হতো। ওই সময় সাংবাদিকরা আগামী বাজেটের আকার কেমন হবে জানতে চাইলে জবাবে মুহিত বলেন, এবারের বাজেট ৪ লাখ কোটি টাকার চেয়ে কিছুটা বেশি হবে। নির্দিষ্ট অঙ্কটা এই মুহূর্তে (ইগজ্যাগট ফিগারটা) বলছি না। তবে মানব সম্পদে আগের চেয়ে অনেক বেশি জোর দেয়া হচ্ছে ও বরাদ্দ বাড়ানো হবে। কৃষি খাত আগের মতোই থাকছে। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এই সরকারের অন্যতম কৃতিত্ব হচ্ছে ৯৫ হাজার কোটি টাকা থেকে বাজেটকে ৪ লাখ কোটি টাকার বেশিতে নিয়ে যাওয়া। এর পরের বাজেট ৫ লাখ কোটি টাকার মতো হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। প্রসঙ্গত, তিন সপ্তাহ আগে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে ভ্যাট হার কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ওই সময় তিনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসে ভ্যাট হার নির্ধারণ করা হবে। তবে আগামী ১ জুলাই থেকে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের কথা বলে আসছেন মুহিত। তিনি বলেন, ভ্যাট হার কমবে না, তবে ৩০ লাখ থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। এবার ৮০ লাখ টাকার ওই সীমা বাড়িয়ে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বা তার বেশি করা হচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ বা ৫ শতাংশ করা হতে পারে। অর্থাৎ, আমরা এই বাজেটে ছোট ব্যবসায়ীদের বিশেষ ছাড় দিচ্ছি। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে আট লাখ নিবন্ধিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলেও ভ্যাট দেয় মাত্র ২৫ থেকে ২৬ হাজার। এই সংখ্যা আমরা আগামী বছর দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫০ হাজারে নিয়ে যেতে চাই। মুহিত দাবি করেন, এই ভ্যাট কাঠামোতে বাজারে পণ্যমূল্য কোনো অবস্থাতেই বাড়ার কথা নয়। রোজার কারণে ব্যবসায়ীরা কিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। ভ্যাটের কারণে বাড়ার কারণ নেই। এ সরকারের সময়ে তার দেয়া কোনো বাজেটের পরপরই দ্রব্যমূল্য বাড়েনি বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট বা মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২। কার্যকর হওয়ার আগেই বেশ কিছুদিন ধরে চলছে নানা বিতর্ক। বিশেষ করে মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, নতুন ভ্যাট আইনে সব পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর হলে নিত্যপণ্যের বাজারে অধিকাংশ পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। বাজার হবে অস্থিতিশীল। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বরাবরই দাবি করছে, নতুন ভ্যাট আইনে অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থাকছে ভ্যাটের বাইরে। এমনকি বর্তমানে ভ্যাট আছে এমন অনেক প্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যাট থাকছে না নতুন আইনে। নতুন আইনে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় এক হাজারের বেশি জিনিসপত্র ভ্যাটের বাইরে থাকবে।
×