ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাতে হাত, না হাতাহাতি! ফের বিতর্কে ট্রাম্প

প্রকাশিত: ২০:৩২, ২৭ মে ২০১৭

হাতে হাত, না হাতাহাতি! ফের বিতর্কে ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক ॥ ধাক্কা খেলেন। দিলেনও! ন্যাটোর মঞ্চে গিয়ে আবারও বিতর্কে জড়ালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ধাক্কা খেয়ে ‘হারলেন’ বলেই পরে ধাক্কায় ‘জেতার চেষ্টা’ করলেন কি না, উঠে গেল সেই প্রশ্নটাও। প্রথম ঘটনার ‘অংশীদার’ ইমানুয়েল মাক্‌রঁ। সদ্য ভোটে জিতে আসা ফরাসি প্রেসিডেন্ট। গত কাল ব্রাসেলসে ন্যাটোর বৈঠক শুরুর আগে তিনি একান্তে বসেছিলেন ট্রাম্পের সঙ্গে। সাদা গদি আঁটা কাঠের চেয়ার। অল্প দু’-এক কথার পর হাত বাড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সৌজন্যের করমর্দনে সাড়া দিলেন মাক্‌রঁ-ও। কিন্তু ট্রাম্প যে এ ভাবে চেপে ধরবেন, ভাবতে পারেননি তরুণ প্রেসিডেন্ট। পাল্টা চাপ বাড়ালেন তিনিও। শুরু হয়ে গেল চাপা একটা লড়াই। মুহূর্তে শক্ত হয়ে উঠল দু’জনের চোয়াল। সাদা হয়ে গেল আঙুলগুলো। স্পষ্ট ধরা পড়ল ক্যামেরায়। শেষমেশ অবশ্য হাল ছাড়লেন ট্রাম্পই। নিজেই আলগা করতে বাধ্য হলেন বজ্রমুঠি। কিন্তু মাকরঁ ছাড়ার পাত্র নন। তখনও তিনি বজ্রমুষ্ঠিতে ধরে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাত। আরও অপ্রস্তুত ট্রাম্প। বেশ কয়েক মুহূর্ত পরে আঙুল আলগা করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। মার্চের শেষে হোয়াইট হাউসের অতিথি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলের বাড়ানো হাত ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকেও বুঝিয়ে ছেড়েছিলেন হাতের জোর। এ বার নিজেই বুঝলেন! ন্যাটোর হাটে প্রথমেই ধাক্কা খেলেন এমন এক রাষ্ট্রনেতার কাছ থেকে, যাঁর প্রতিপক্ষ (মেরিন ল্য পেন)-কে প্রথম থেকেই সমর্থন জানিয়ে এসেছিলেন ট্রাম্প। বজ্রমুষ্ঠি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্‌রঁ। আপাত সৌহার্দ্যের এই করমর্দনে লুকিয়ে ছিল চাপ-পাল্টা চাপের গল্প। মাক্‌রঁ-র করমর্দনের প্যাঁচে পড়ে হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করে ছিলেন ট্রাম্প। অবশ্য সফল হননি। মনোবিশ্লেষকদের দাবি, দিনের শুরুতে এ ভাবে আঁতে ঘা লাগাতেই পরে নিজের অস্তিত্ব প্রমাণে মরিয়া হয়ে ওঠেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এক ঝাঁক ক্যামেরার সামনেই ফের ঘটান ‘অঘটন’। তিনি তখন ছিলেন দ্বিতীয় সারিতে। সামনের সারিতে মুখ দেখাতে তাই এক ধাক্কায় সরিয়ে দিলেন মন্টেনেগ্রোর প্রধানমন্ত্রী ডুস্কো মার্কোভিচকে। তার পর দিব্যি পোজ দিলেন ভারিক্কি চালে। প্রথমটায় ঘাবড়ে গেলেও পরে পুরো পরিস্থিতিটাই হাসিমুখে সামাল দেন মার্কোভিচ। কিন্তু ফোটোশ্যুটের ঠিক আগের ওই মুহূর্ত তত ক্ষণে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই বলছেন, এটাই ‘ট্রাম্পোচিত’। ন্যাটো-র নেতা হয়েও তিনি থাকবেন পিছনের সারিতে, এটাই আসলে মানতে পারেননি প্রেসিডেন্ট! ‘সমাধান’ তাই ধাক্কায়! কিন্তু এর যে একটা ‘আফটার শক’-ও থাকতে পারে, অনেকেই আন্দাজ করতে পারেননি। বৈঠকের মাঝেই প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে বলে ট্রাম্প এ বার একহাত নেন ২৮টির মধ্যে ২৩টি দেশকে। ট্রাম্পের ওই ধাক্কা নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন হোয়াইট হাউসেরই প্রাক্তন ফোটোগ্রাফার পিট সুজা। ২০১২-য় ন্যাটোর বৈঠকে ব্রাসেলসে গিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ট্রাম্প-ওবামার মানসিকতার তফাৎ বোঝাতে গিয়ে তখনকার বেশ কয়েকটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সুজা। যেখানে ওবামাকে বাকিদের সঙ্গে দিব্যি খোশমেজাজে দেখা গিয়েছে। সেই মঞ্চেই কি না অনর্থ ঘটালেন ট্রাম্প! কেউ বলছেন, আঁতে ঘা লাগতেই এমন কাণ্ড। অনেকে আবার দিন কয়েক আগেকার পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটছেন। প্রথমে ইজরায়েল, আর পরেরটা রোমে। এক দিনের ব্যবধানে দু’বার— প্রেসিডেন্টের বাড়ানো হাত ফিরিয়ে দিয়েছিলেন স্ত্রী মেলানিয়া। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চূড়ান্ত অপদস্থ হতে হয় প্রেসিডেন্টকে। মন্টেনেগ্রোর প্রধানমন্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ট্রাম্প তাই ‘ঘরের ঝালটাই’ মেটাতে চাইলেন কি না, প্রশ্ন তুলছেন রসিক নেটিজেনরা। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×