খোকার বুদ্ধি
চুণ করে মুখ প্রাচীর পরে বসে শ্রীযুত খোকা,
কেননা তার মা বলেছেন, সে এক নিরেট বোকা।
ডানপিটে সে খোকা এখন মস্ত একটা বীর,
হুঙ্কারে তাঁর হাঁস মুরগির ছানার চক্ষুস্থির!
সাত লাঠিতে ফড়িং মারেন এমনি পালোয়ান!
দাঁত দিয়ে সে ছিঁড়লে সেদিন আস্ত আলোয়ান!
ন্যাংটা-পুঁটো দিগম্বরের দলে তিনিই রাজা,
তাঁরে কিনা বোকা বলা? কি এর উচিত সাজা?
ভাবতে ভাবতে খোকার হঠাৎ চিন্তা গেল থেমে,
দে দৌড় চোঁ-চাঁ আধমহলে পাঁচিল হতে নেমে!
বুকের ভেতর ছ’পাই ন’পাই ধুকপুকুনির চোটে,
বাইরে কিন্তু চতুর খোকা ঘাবড়ালেন না মোটে।
হাঁপিয়ে এসে মায়ের কাছে বললে, ‘ওগো মা!
আমি নাকি বোকা-চন্দর? বুদ্ধি দেখে যা!
ঐ না একটা মটকু বানর দিব্যি মাচায় বসে
লাউ খাচ্চে? কেউ দেখোনি দেখি আমিই তো সে।
দিদিদেরও চোখ ছিল তো, কেউ কি দেখেছেন?
তবে আমায় বোকা কও যে! এ্যাঁ-এ্যাঁ, হাসো ক্যান?’
কি কও? ‘একি বুদ্ধি হল?’ দেখবে তবে? হাঁ,
বুদ্ধি আমার... ভোলা। তু-উ-উ! লৌ-হা হা-হা-হা!
কালো জাম রে ভাই
কালো জাম রে ভাই!
আম কি তোমার ভায়রা ভাই?
লাউ বুঝি তোর দিদিমা
আর কুমড়ো তোর দাদামশাই ॥
তরমুজ তোর ঠাকুমা বুঝি
কাঁঠাল তোমার ঠাকুর্দ্দা,
গোলাপজাম তোর মাসতুতো ভাই,
জামরুল কি ভাই তোর বোনাই ॥
পেয়ারা কি তোর লাটিম রে ভাই,
চিচিঙ্গে তোর লাঠি,
জাম্বুরা তোর ফুটবল
আর লঙ্কা চুষিকাঠি।
টোপাকুল তোর বৌ বুঝি
আর বৈঁচি লিচু তোর জামাই ॥
নোনা আতা সোনা ভাই তোর
রাঙ্গাদি’ তোর লাল মাকাল,
ডাব বুঝি তোর পানি-পাঁড়ে
ঢিল বুঝি তোর ভাদুরে তাল।
গেছো দাদা, আয় না নেমে
গালে রেখে চুমু খাই ॥
শিশু-সওগাত
ওরে শিশু, ঘরে তোর এল সওগাত
আলো পানে তুলে ধর ননীমাখা হাত!
নিয়ে আয় কচি মুখে আধো আধো বোল,
তুলতুলে গাল-ভরা টুলটুলে টোল!
চকচকে চোখে আন আলো ঝিকমিক
খুলে দেরে তুলে দেরে আঁধারের চিক।
বাঁধ ভেঙে ছুটে যায় দস্যুর দল
মরা গাঙে নিয়ে আয় জোয়ারের জল!
ধরাতল টলমল পদভরে তোর,
লুট কর গুলবাগ নওল কিশোর।
তোরে চেয়ে নিতি রবি ওঠে পুরবে,
তোর ঘুম ভাঙিলে যে প্রভাত হবে।
ডালে ডালে ঘুমজাগা পাখিরা নীরবে,
তোর গান শুনে তবে ওরা পাবে সব।
পরাতে না পেরে তোর নয়নে কাজল
আকাশের নীল চোখ করে ছলছল।
তোর দিন অনাগত, শিশু তুই আয়,
জীবন-মরণ দোলে তোর রাঙা পায়।
তোর চোখে দেখিয়াছি নবীন প্রভাত,
তোর তরে আজিকার নব সওগাত।
দিদির বে’তে খোকা
‘সাত ভাই চম্পা জাগো’Ñ
পারুলদি’ ডাকল, না গো?
একি ভাই, কাঁদচ?Ñ মা গো
কি যে কয়Ñ আরে দুত্তুর!
পারায়ে সপ্ত-সাগর
এসেছে সেই চেনা-বর?
কাহিনীর দেশেতে ঘর
তোর সেই রাজপুত্তুর?
মনে হয়, ম- মেঠাই
খেয়ে জোর আয়েশ মিটাই!Ñ
ভালো ছাই লাগছে না ভাই,
যাবি তুই এ একেলাটি!
দিদি, তুই সেথায় গিয়ে
যদি ভাই যাস ঘুমিয়ে
জাগাব পরশ দিয়ে
রেখে যাস সোনার কাঠি!
শীর্ষ সংবাদ: