ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মহাকাশচারীদের জন্য বিশেষ ট্রেনিং

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৬ মে ২০১৭

মহাকাশচারীদের জন্য বিশেষ ট্রেনিং

মহাকাশচারী হওয়া মোটেই সহজ কাজ নয়। শারীরিক ক্ষমতার পাশাপাশি দীর্ঘ সময় ধরে মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে থাকার ধকলও তঁভদের সামলাতে হয়। শরীরকে সেই অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে নতুন ধরনের ট্রেনিংয়ের কথা ভাবা হচ্ছে। মহাকাশচারীদের মাধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে হয় না বটে, কিন্তু পেশি ও হাড়ের ক্ষয় সামলাতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়। কারণ এমন অবস্থায় শরীরের ওপর স্বাভাবিক ভার লোপ পায়। এয়ারোস্পেস চিকিৎসক প্রো রুপার্ট সেই সমস্যার সমাধান খুঁজছেন। তিনি বলেন, ‘মহাকাশচারীদের ক্ষেত্রে একটি সমস্যা রয়েছে। পেশি ও হাড়ের ক্ষয় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন তাঁরা দু’ঘণ্টা ব্যায়াম করেন। সে কারণে যে মহাকাশচারীরা দীর্ঘ সময় ধরে মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে থাকেন, তাঁদের জন্য প্রশিক্ষণের নতুন পদ্ধতির প্রয়োজন আছে। সেনট্রিফিউজ সে কাজে সহায়ক হতে পারে।’ হাইটেক ক্যাটাপুল্ট-এ প্রশিক্ষণের প্রহর গোনা হচ্ছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী যখন দ্রুত গতিতে ঘুরতে থাকবেন, তখন তাঁর হৃৎস্পন্দন ও রক্ত চলাচলের ওপর নজর রাখা হবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মাত্রা বাড়িয়ে পেশিসহ গোটা শরীরকে আরও শক্তিশালী করে তোলাই এর উদ্দেশ্য। এমন অবস্থায় মাথা ঘুরতে পারে। সেন্ট্রিফিউজ যত দ্রুত ঘোরে, শরীরে মাধ্যাকর্ষণের টান ততটাই বেড়ে যায়। প্রশিক্ষণের প্রভাবও সেই হারে বাড়ে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সে সময় প্রকৌশলী ও ডাক্তারদের সঙ্গে ওয়্যারলেস পদ্ধতিতে যোগাযোগ রেখে চলেন, যাতে বিপদ হলে প্রক্রিয়া সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেওয়া যায়। রোলার কোস্টারে লুপিংয়ের সময়ে যে তীব্র মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অনুভব করা যায়, আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য সেটা সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। সেন্ট্রিফিউজ ধীরে ধীরে ঘুরতে শুরু করে, তারপর সর্বোচ্চ গতির মাত্রা ছোঁয়। তখন মিনিটে ৪৫ বার ঘোরে সেটি। সেন্ট্রিফিউজিয়াল ফোর্স পায়ের ওপর সবচেয়ে বেশি চাপ সৃষ্টি করে। ব্যায়ামের জন্য তা খুবই ভাল। কিন্তু বিজ্ঞানীরা তাতেও খুশি নন। প্রো. রুপার্ট বলেন, ‘আমাদের সমস্যা হলো, মহাকাশচারীর ট্রেনিংয়ের সময় কমাতে হবে। সেন্ট্রিফিউজের সুবিধা হলো, সেটি ঘোরার সময় শরীরের ওপর অংশের তুলনায় নীচের অংশে বেশি চাপ পড়ে। কিন্তু সেখানেই আবার সমস্যা। তাই আমাদের আশা, সেন্ট্রিফিউজের সঙ্গে সঙ্গে সাইক্লিংয়ের মতো ফিটনেস ট্রেনিংও করাতে পারব, যাতে সব মিলিয়ে আধ ঘণ্টা সময় বাঁচানো যায়।’ মহাকাশচারীরা প্রথাগত পদ্ধতিতেই ট্রেনিং নিচ্ছেন। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশেও সেন্ট্রিফিউজ প্রয়োগ করা হবে। সূত্র : বিবিসি
×