ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা, গৃহবধূ ও শিশুসহ নিহত ১৮

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৬ মে ২০১৭

সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা, গৃহবধূ ও শিশুসহ নিহত ১৮

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশ কর্মকর্তা, গৃহবধূ ও শিশুসহ অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে কমপক্ষে ২১ জন। এর মধ্যে গোপালগঞ্জে মুখোমুখি সংঘর্ষের পর মাইক্রো-ইজিবাইক খাদে পড়ে গেলে পুলিশ ও মহিলাসহ ৬, চট্টগ্রামের চন্দনাইশে বাসচাপায় শিশুসহ ৫, মীরসরাইতে ট্রাকের ধাক্কায় ২, চট্টগ্রাম নগরীতে হিউম্যান হলার উল্টে ২, নাটোরের বড়াইগ্রামে ২ এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ১ জন নিহত হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতার পাঠানো। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গোপালগঞ্জ শহরতলীর আরামবাগ নিচুপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন এলাকা থেকে খুলনাগামী একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো জ-১৯-০৮৮৬) ওই স্থানে পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীতমুখী একটি যাত্রীবাহী ইজিবাইকসহ মহাসড়ক থেকে ছিটকে পার্শ্ববর্তী গভীর খাদে পড়ে মাইক্রোবাস ও ইজিবাইক দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই সদর থানার এএসআই দেলোয়ার হোসেন (২৯), ইজিবাইকের চালক আজাদ (৩৫) ও এক অজ্ঞাত মহিলা নিহত হয়। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতালে নেয়ার পথে কোটালিপাড়ার কান্দি গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রী জেসমিন (৩৫) ও তার মেয়ে সুমাইয়ার (১৭) মৃত্যু ঘটে এবং গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড হাসপাতালে ভর্তির পর সদর উপজেলার চর-গোবরা এলাকার আবুল কাশেম মোল্লার ছেলে মুজাহিদ মোল্লার (৩৫) মারা যায়। এছাড়াও গুরুতর আহত লিপন সরদার (২৪) ও নিজামুল সরদার (২৫) সহ চর-গোবরা এলাকার আহত ৪ জনকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। পটিয়া, চট্টগ্রাম ॥ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলায় চেয়ারকোচ চাপায় নিহত হয়েছে শিশুসহ ৫ জন। নিহতরা হলোÑ সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ গ্রামের নজির আহমদের পুত্র মোঃ ফরিদ (৪৫), একই উপজেলার খাগড়িয়া গ্রামের বশর আহমদের কন্যা নয়নতারা (৯), মৃত ফজল আহমদের স্ত্রী হাজেরা খাতুন (৫৫), কক্সবাজার জেলার মোঃ জাফরের পুত্র আল আমিন (৪০) ও অজ্ঞাতনামা (৩২) একব্যক্তি। বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে চন্দনাইশের দেওয়ানহাট ও কসাইপাড়ার মাঝামাঝি পাঠানীপোল এলাকায় হানিফ এন্টারপ্রাইজের চেয়ার কোচের সঙ্গে পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন (১৬), আলমগীর (৩০), রিহাসহ (১৫) অনন্ত ১০ জনকে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিজিসি ট্রাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পরেই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে হাইওয়ে পুলিশ ও চন্দনাইশ থানা পুলিশ দীর্ঘক্ষণ পর গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক করে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মালবাহী ও যাত্রীবাহী ২টি পিকআপ এক সঙ্গে সাতকানিয়ার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় একটি পিকআপ আরেকটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে চট্টগ্রামমুখী হানিফ এন্টারপ্রাইজের যাত্রীবাহী চেয়ার কোচের সঙ্গে পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুসহ ৫ জন মারা যান এবং পিকআপটি ধুমড়ে মুচড়ে যায়। মীরসরাই, চট্টগ্রাম ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই উপজেলার পৌর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ২ জন মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়। এছাড়া আহত হয় আরও দুজন। গাড়ি দুটো উদ্ধার করে মীরসরাই থানা পুলিশ। বুধবার রাত প্রায় ১২টায় মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী পোল্ট্রি মুরগির গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো ম ১১-০১৭১ কে ঢাকাগামী রয়েল সিমেন্টের একটি ট্রাক একই লেনে বিপরীতমুখ থেকে এসে মুখোমুখি মেরে দিলে উক্ত দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলেই পোল্ট্রি গাড়ির হেলপার আবুল খায়ের (৩৫) ও সিমেন্টবাহী গাড়িচালক মোহাম্মদ হাসান (২২) প্রাণ হারায়। এছাড়া আরও ২জন আহত হয়। আহতদের মাতৃকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের এর জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত আবুল খায়েরের বাড়ি কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট এবং হাসানের বাড়ি নোয়াখালী। চট্টগ্রাম অফিস ॥ মহানগরীর নগরীর কাস্টম ব্রিজ সংলগ্ন সল্টগোলা রেল ক্রসিং এলাকায় যাত্রীবাহী হিউম্যান হলার উল্টে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। বৃহস্পতিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, পতেঙ্গা ইপিজেডগামী একটি রাইডার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কদ্বীপের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় দুই যাত্রী। তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এরমধ্যে একজনের বয়স আনুমানিক ৩০ এবং অপরজনের বয়স ৪০ বছর। এতে আরও ৭ জন আহত হন। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে তাদের বন্দর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে। নাটোর ॥ জেলার বড়াইগ্রামে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন। বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটনা দুটি ঘটে। নিহতরা হলেনÑ নাজিরপুর ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও মাহমুদপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে চঞ্চল হোসেন (২০) এবং নাটোর সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের অধিবাসী সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলামের ছেলে তহশিলদার মোফাজ্জল হোসেন টিপু। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে বনপাড়া থেকে মোটরসাইকেল যোগে নাজিরপুর নিজ বাড়িতে ফিরছিল চঞ্চলসহ তিনজন। এ সময় তারা বনপাড়া-নাজিরপুর আঞ্চলিক সড়কে তিরাইল নামক স্থানে পৌঁছলে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে মাথায় আঘাত লেগে ঘটনাস্থলেই চঞ্চল মারা যায়। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা পাকশী রেলওয়ের কর্মচারী সাইফুল ইসলাম ও সাব্বির হোসেন নামে এক যুবক মারাত্মক আহত হন। অপরদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ভূমি অফিস থেকে তহশিলদার মোফাজ্জল হোসেন টিপু বনপাড়া আসার পথে কাছিকাটা নামক স্থানে একটি ভটভটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলে টিপুর মৃত্যু হয়। দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ॥ দৌলতপুরে মোটরসাইকেলের সঙ্গে আলগামনের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বপন (২৩) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আল্লারদর্গা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। সকালে ভেড়ামারা থেকে মোটরসাইকেল যোগে দৌলতপুরের আল্লারদর্গা মোড়ে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী আলগামনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরাসইকেল চালক স্বপন গুরুতর আহত হলে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
×