ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ আত্রাই নদীর জল আটকে রাখছে ॥ মমতা

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ২৫ মে ২০১৭

বাংলাদেশ আত্রাই নদীর জল আটকে রাখছে ॥ মমতা

অনলাইন ডেস্ক ॥ আমের উপর শুল্ক বৃদ্ধি, চুর্নী নদীর দূষণ,আত্রাই নদীর উপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাঁধ দেয়া এবং পুনর্ভবাসহ একাধিক নদী সমস্যা নিয়ে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে অভিযোগ জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লিতে মোদি-মমতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ আত্রাই নদীর জল আটকে রাখছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের চাষিরা। আবার এক সঙ্গে অনেকটা জল ছাড়ায় বন্যাপরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে আলোচনা করতে অনুরোধ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে নালিশ জানিয়ে তিনি বলেন, চুর্নী নদীর জল দূষিত করছে বাংলাদেশ। এতে নদিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আম আমদানির উপর শুল্ক দ্বিগুণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে মার খাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের আম রফতানি। পশ্চিমবঙ্গ কর্তৃপক্ষের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চুর্নী ননদীটিকে দূষিত করার অভিযোগ উঠছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। চলতি মাসের গোড়ার দিকেই নদীয়া জেলায় এক প্রশাসনিক বৈঠকেই কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস বিষয়টি নিয়ে মমতার কাছে অভিযোগ জানান। তৃণমূলের বিধায়ক নদী দূষণের জন্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এমনকি এর সপক্ষে কোনো দলিলাদি দেখাননি মমতাও। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মুখে বাংলাদেশকে বন্ধু বললেও সে দেশের হাসিনা সরকারের সুবিধা হয় এমন কোনো কাজ করবেন না মমতা। মূলত তার আপত্তিতেই ঝুলে রয়েছে তিস্তাচুক্তি। ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অন্যতম বিরোধী জামায়াত। এদিকে আবার ভোটে জিততে মমতারও তাদেরই দরকার। ফলে যে কোনো উপায়ে হাসিনার উপর চাপ বাড়ানোর সুযোগ ছাড়তে নারাজ তিনি।’ তাই আত্রাই বা চুর্নীর মতো শুকনো নদী নিয়েও মোদির কাছে দরবার করলেন মমতা। ফের একবার বার্তা দিলেন, হাসিনা বিরোধিতায় ভাটা পড়তে দেবেন না তিনি। আমের আমদানি শুল্ক প্রসঙ্গও উত্থাপিত হয়েছে সেই কারণেই। অন্যদিকে মুখে নিজের ‘নির্মল বাংলা’র পাশাপাশি মোদির স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের নাম করে বুঝিয়ে দিলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে প্রয়োজনে সমঝোতায় যেতে আপত্তি নেই তার। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, এদিন মুখ্যমন্ত্রী যে বিষয়গুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন তার কোনোটিই সাম্প্রতিক সমস্যা নয়। ফলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মুখে এমন তড়িঘড়ি বৈঠকে মোদি-মমতা সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। ‘বিশেষ করে মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ৯ মাস তাকে বয়কট করেছিলেন যে মুখ্যমন্ত্রী, তিনি এমনসব ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসলে সন্দেহের উদ্রেক হয় বই কি’।
×