জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ দেশের একাধিক জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালো ১৪ জন। এছাড়াও একাধিক ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া থেকে জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলায় চেয়ারকোচ চাপায় মারা গেছেন শিশুসহ ৫জন। নিহতরা হলেন, সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ গ্রামের নজির আহমদের পুত্র মো. ফরিদ (৪৫), একই উপজেলার খাগড়িয়া গ্রামের বশর আহমদের কন্যা নয়ন তারা (৯), মৃত ফজল আহমদের স্ত্রী হাজেরা খাতুন (৫৫), কক্সবাজার জেলার মো. জাফরের পুত্র আল আমিন (৪০) ও অজ্ঞাতনামা (৩২) একব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে চন্দনাইশের দেওয়ানহাট ও কসাইপাড়ার মাঝামাঝি পাঠানীপোল এলাকায় হানিফ এন্টারপ্রাইজের চেয়ারকোচের সঙ্গে পিকআপের মুখোমূখী সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন (১৬), আলমগীর (৩০), রিহা (১৫)সহ অনন্ত ১০জনকে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স ও বিজিসি ট্রাস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পরেই মহা সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে হাইওয়ে পুলিশ ও চন্দনাইশ থানা পুলিশ দীর্ঘক্ষণ পর গাড়ী চলাচল স্বাভাবিক করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মালবাহী ও যাত্রীবাহী ২টি পিকআপ এক সঙ্গে সাতকানিয়ার দিকে যাচ্ছিল। এসময় একটি পিকআপ আরেকটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে চট্টগ্রামমূখী হানিফ এন্টারপ্রাইজের যাত্রীবাহী চেয়ারকোচের সঙ্গে পিকআপের মুখোমূখী সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুসহ ৫জন মারা যান এবং পিকআপটি ধুমড়েমুচড়ে যায়। দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান বলেন, দ্রুত গতির একটি পিকআপ অপর একটি পিকআপকে ওভারটেক করতে গিয়ে চেয়ারকোচের সঙ্গে মুখোমূখী সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনার পর যাত্রীদের উদ্ধার এবং ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। এই ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে চন্দনাইশ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গোপালগঞ্জ শহরতলীর আরামবাগ নীচুপাড়া এলাকায় মাইক্রোবাস ও অটোরিকশার সংঘর্ষে পুলিশের এক এএসআইসহ ৬জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৪ জন।
নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন এলাকা থেকে খুলনাগামী একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো জ-১৯-০৮৮৬) ওই স্থানে পৌঁছিলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীতমুখী একটি যাত্রীবাহী ইজি-বাইকসহ মহাসড়ক থেকে ছিটকে পার্শ্ববর্তী গভীর খাদে গিয়ে পড়ে। এতে মাইক্রোবাস ও ইজিবাইক দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই সদর থানার এএসআই দেলোয়ার হোসেন (২৯), ইজি বাইকের চালক আজাদ (৩৫) ও এক অজ্ঞাত মহিলার মৃত্যু ঘটে।
এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতালে নেয়ার পথে কোটালীপাড়ার কান্দি গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রী জেসমিন (৩৫) ও তার মেয়ে সুমাইয়ার (১৭) মৃত্যু ঘটে এবং গোপালগঞ্জ আড়াই’শ বেড হাসপাতালে ভর্তির পর সদর উপজেলার চর-গোবরা এলাকার আবুল কাশেম মোল্লার ছেলে মুজাহিদ মোল্লার (৩৫) মৃত্যু ঘটে। এছাড়াও গুরুতর আহত লিপন সরদার (২৪) ও নিজামুল সরদার (২৫) সহ চর-গোবরা এলাকার ৪ জনকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোপালগঞ্জের এএসপি (সার্কেল) আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিহতদের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নাটোর সংবাদদাতা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ভুমি অফিস থেকে তহশিলদার মোফাজ্জল হোসেন টিপু বনপাড়া আসার পথে কাছিকাটা নামক স্থানে একটি ভটভটির সাথে মুখোমুখী সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলে টিপুর মৃত্যু হয়।
নিজস্ব সংবাদদাতা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া থেকে জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মোটরসাইকেলের সাথে আলগামনের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বপন (২৩) নামের এক যুবক নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার আল্লাদর্গা এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা দারা খান জানান, সকালে ভেড়ামারা থেকে মোটরসাইকেল যোগে দৌলতপুরের আল্লাদর্গা যাওয়ার পথে আল্লাদর্গা মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী আলগামনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরাসইকেল চালক স্বপন গুরুতর আহত হলে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এছাড়াও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবলের কলেজ গেট এলাকায় একইদিন সকালে ট্রাক চাপায় শামছুল ইসলাম (৩০) নামে এক হোটেল শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিনি বাহুবল উপজেলার শিবপাশা গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় আটক ঘাতক ট্রাকটি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় লোকেরা পুলিশের কাছে জমা দেয়।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শামছুল সড়ক পারাপারকালে দ্রুতগামী ট্রাকটি তাকে চাপা দেয়। এতে সে ঘটনাস্থলেই সে প্রাণ হারান।
