ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সমাজের সর্বত্রই চলছে অরাজকতা: এরশাদ

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২৫ মে ২০১৭

সমাজের সর্বত্রই চলছে অরাজকতা: এরশাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের পথে। শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন, আর ছাত্ররা পিছনে বসে ইন্টারনেটে পর্ণ ছবি দেখছে। খুনীরা আজ বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ধর্ষণকারীরা উল্টো দাম্ভিকতা দেখাচ্ছে। লোডশেডিং, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি। সমাজের সর্বত্রই চলছে অরাজকতা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শরীয়াহ আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘নৈতিকতা বিবর্জিত সমাজ ব্যবস্থাই সকল সন্ত্রাসের জন্মদাতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেন, সামনে রমজান, বিদ্যুতের কি অবস্থা? সেহরী ও ইফতারির সময় বিদ্যুৎ বিভ্রান্তি হলে মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। তাই সরকার যেন বিদ্যুত সরবরাহের প্রতি নজর দেয়। নিরবচ্ছিন্ন না হলেও সহনীয় বিদ্যুত পরিস্থিতি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তিনি। সমাজের সর্বক্ষেত্রে অস্থিরতা এমন মন্তব্য করে সাবেক সেনা প্রধান এরশাদ বলেন, আমরা ইসলাম থেকে দূরে সরে গেছি। তাই অস্থিরতা বাড়ছে। ইসলামে বিধান রয়েছে হত্যার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। কিন্তু খুনীরা আজ বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ধর্ষণকারীরা উল্টো দাম্ভিকতা করছে। নিজের জোট প্রসঙ্গে বলেন, সব ইসলামীদল এখনও আমাদের সাথে আসেনি। এখনও দ্বিধাদ্বন্দ। কিসের দ্বিধা? আমি ইসলামের জন্য অনেক কিছু করেছি। শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটি, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম, মসজিদ-মাদ্রাসা-মন্দিরে পানি ও বিদ্যুৎ বিল মওফুক করেছি। ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বললে সহ্য হয় না। দেশকে সামাজিক অবক্ষয় থেকে রক্ষা করতে এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের নেতৃত্বে বাকী ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হন। কথা দিলাম আজীবন আমি আপনাদের সাথে থাকবো। এরশাদ বলেন, আজ ইসলামের কথা বললে, কুরআন-রাসূলের কথা বললে আমরা মৌলবাদী। নাস্তিকরা যদি নবী-রাসূলের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা মৌলবাদী নয়। আমেরিকার সমালোচনা করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, লিবিয়া একটি শান্ত রাষ্ট্র। শুধু তেলের জন্য লিবিয়া ধ্বংস করে দিলেন। এই তেলের জন্য ইরাক, সিরিয়া ধবংশ করে দিলেন। লন্ডনে হামলা প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, আমরা জানতাম এই হামলার মুসলমানের নাম আসবে। বলা হলো আইএস জড়িত। এই আইএস সৃষ্টি করেছে কে? পশ্চিমারাই ইসলামকে দোষী করার জন্যই এই আইএস সৃষ্টি করেছে। ইসলামকে কেউ নিঃশেষ করতে পারবে না। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের পথে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, শিশুরা মোবাইল ফোন আর ফেসবুকে আসক্ত। শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছে, আর ছাত্ররা পেছনে বসে ইন্টারনেটে পর্ণ ছবি দেখছে। ইন্টারনেট আর ফেসবুক বন্ধ করতে হবে। যে পথে শিশুরা ধাবিত হচ্ছে তা জাতির জন্য অশনি সংকেত। শিক্ষকরা ছাত্রদের দিয়ে নকল করায়। গরু হোক আর গাধা হোক জিপিএ-৫ পেতে হবে। সর্বত্রই অব্যবস্থাপনা চলছে। জোটের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, ছোট গাছে বাতাস লাগে না, বড় গাছে বাতাস লাগে। অনকে বাতাস দেয়ার চেষ্টা করছেন। মনে রাখতে হবে, বড় গাছে বাতাস লাগে কিন্তু ডাল ভেঙ্গেনা। শরীয়াহ আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি রফিকুন্নবী হক্কানীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতি, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক, মাওলানা আব্দুল লতিফ চৌধুরী, মাওলানা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, ফকরুল আহসান শাহাজাদা প্রমুখ।
×