ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী, বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৫ মে ২০১৭

ঢাকায় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী, বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দাবদাহ অব্যাহত থাকায় বুধবারও অসহনীয় দুর্ভোগ থেকে রেহাই পায়নি দেশবাসী। দেশের সর্বত্র অনুভূত হয় তীব্র গরম। বৃষ্টির দেখা নেই দেশের কোথাও। বাসার ছাদে থাকা ট্যাঙ্কির পানি হয়ে যাচ্ছে সিদ্ধ। মাঝে মাঝে বয়ে যাওয়া ঠা-া বাতাসেই প্রশান্তি পাওয়ার চেষ্টা করছে মানুষ। রাজধানী ও সারাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। সাঁইত্রিশে পৌঁছে গেছে রাজধানীর তাপমাত্রা। আর রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী হওয়া মানেই ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। কাঠফাটা রোদ ও তীব্র গরমে নাজেহাল দেশবাসী এখন বৃষ্টির অপেক্ষায়। তাপপ্রবাহ, আর্দ্রতার দাপট ও বৃষ্টিশূন্যতাই গরমের তীব্রতা বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। চলতি মাসজুড়ে এমন অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। স্বস্তি প্রত্যাশী দেশবাসীকে আরেকটি দুঃসংবাদ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি সেন্টারেই সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য অনেক হ্রাস পেয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি হওয়া অবস্থায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য যত হ্রাস পাবে, গরমের তীব্রতা ততই বাড়বে। বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাজশাহীতে ৩৭.৮ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সিলেটে ২২.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড হয়। যা তীব্র গরম অব্যাহত থাকার ইঙ্গিত দেয়। আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবারও তাপপ্রবাহ নতুন নতুন জেলায় বিস্তার লাভ করবে। আর ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় যথাক্রমে ৩৭ ও ২৯.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহ ধরে দাবদাহে পুড়ছে দেশ। বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। দেশের কিছু জায়গায় সীমিত বৃষ্টিপাত হলেও তা মাটিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে খরতাপে শুকিয়ে যাচ্ছে। খাঁ খাঁ করছে দেশের মাঠ প্রান্তর। খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয় ফের পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। গত মাসে বেশ কিছুদিন বৃষ্টিপাত থাকায় ওই সব জায়গায় পানি দেখা গিয়েছিল। বোরো ধান কাটার সুবিধে হলেও বৃষ্টিবিহীন আবহাওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশিসহ নানা মৌসুমি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি মাসজুড়ে দেশে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। বায়ুম-লে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি। পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী লঘুচাপের সংযোগ না ঘটায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। বায়ুম-লে ক্রমেই অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া বিন্যাসে সাধিত হচ্ছে ব্যাপক পরিবর্তন। এদিকে রাজধানীর আকাশেও স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত নেই। দিনের অধিকাংশ সময় পড়ছে তীব্র রোদ। গরমে অতীষ্ঠ নগরবাসী। ঘন ঘন লোডশেডিং বাড়িয়ে দিচ্ছে দুর্ভোগের মাত্রা। ব্যাহত হচ্ছে নগরবাসীর স্বাভাবিক কাজকর্ম। প্রখররোদ উপেক্ষা করেই চলতে হয় পথচারীদের। এত অস্বাভাবিক গরমে পরিবহনগুলোর ভেতরের তপ্ত পরিবেশে অস্থির হয়ে ওঠে যাত্রীরা। দাবদাহে জর্জরিত মানুষের কাছে বেড়ে যায় ঠা-া পানীয়ের চাহিদা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, তাপমাত্রা বেশি থাকে, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসে, তাহলে গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হবে। বর্তমানে ঢাকায় এমন অবস্থাই বিরাজ করছে। ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য হ্রাস পেয়ে ৭ থেকে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকছে। শুধু তাই নয়, রাজধানীসহ শহুরে এলাকার জন্য সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস অনেকটাই দুর্বিষহ অবস্থা সৃষ্টি করে। বর্তমানে রাজধানীবাসীকেও এমন বিরূপ আবহাওয়া ও ইট-পাথরের প্রতিকূল অবস্থায় পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
×