ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

খন্দকার মাহ্বুবুল আলম

চাই প্রতিবাদ ও সতর্কতা

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২৫ মে ২০১৭

চাই প্রতিবাদ ও সতর্কতা

রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীর রেইনট্রি আবাসিক হোটেলে সংঘটিত ঘৃণ্যতম অপরাধের ঘটনাটি এখন আলোচনার শীর্ষে। গত ২৮ মার্চ রাতে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাতসহ তার কয়েকজন সহযোগী মিলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ওই হোটেলে নিয়ে গিয়ে ঘৃণ্যতম অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে অভিযোগ। এটি সত্যিই দুঃখজনক। জন্মদিনের পার্টিতে এনেই এই কা- ঘটিয়েছে। জন্মদিন! ধর্ষণ! কানেকশন কি? এমন ঘটনা সুস্থ বিবেক সম্পন্ন কোন মানুষের কাছে কোনভাবেই কাক্সিক্ষত হতে পারে না। তারপরও কেন এসব ঘটছে! ধর্ষণের পর নারীদের হত্যার ঘটনা কম ঘটেনি। ধর্ষণের পর তনু হত্যার কূল-কিনারও এ পর্যন্ত হয়নি। একটি ঘটনা ঘটলে পরপর আরও ঘটতে থাকে। এ যেন মনস্তাত্ত্বিক সংক্রমণ। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলন্ত বাসে নারী ধর্ষণের ঘটনা তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। সেই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সত্ত্বেও দেখা গেছে পরপর একই ঘটনা আরও সংঘটিত হয়েছে। ভারতের পর বাংলাদেশেও একবার চলন্ত বাসে নারীর সম্ভ্রমহানির ঘটনা ঘটেছিল, যা সমসাময়িককালের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছিল। বার বার কেন এমন ঘটনা? যারা প্রাকৃতিক নিয়মে মানুষরূপে জন্ম নিয়েও ‘মানুষ’ হতে পারে না (অমানুষ) তারাই এমন কা- ঘটাতে পারে। এমন ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। ছি! ধিক্কার জানাই! নারীরা যে বয়সেরই হোক না কেন তারা আমাদের যথাযোগ্যভাবে ‘মা’ এবং বোন। মনে করতে হবে তারা এদেশেরই নাগরিক হিসেবে আমাদের পরিবারেরই সদস্য। এদের প্রতি সম্মান-সহানুভূতি জানানো এবং তাদের রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই। বনানীর অভিজাত হোটেলে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ঘটনাটি এক প্রকার ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চললেও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা সম্মিলিত প্রতিবাদ করায় সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে অবশেষে মামলাটি আলোর মুখ দেখে। পুলিশ প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় অপরাধীরা একে একে সবাই ধরা পড়ল। অপরাধীরা তাদের অপরাধের কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকারও করে নিয়েছে। আপাতত এটিই আমাদের সান্ত¡না। জনসচেতনতা এবং সংবাদ মাধ্যম এমন এক শক্তিশালী বিষয় যার সামনে কোন ষড়যন্ত্র অপরাধমূলক কর্মকা- ধামাচাপা দেয়ার সুযোগ থাকে না। এ সত্যটি সবাইকে মনে রাখতে হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয় ক’দিন আগে হযরত আলী ও তাঁর মেয়ে একসঙ্গে ট্রেনে কাটা পড়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। কারণ এর আগে মেয়ে আয়েশা ধর্ষিত হয়েও বিচার পায়নি। আসামিরা এখনও ধরা পড়েনি। ধর্ষণের ঘটনা ইদার্নীং বেড়েই চলছে। ধর্ষণ করে আবার হত্যা! এমন ঘটনাও বহু ঘটেছে। যে কারণে এক বিদগ্ধজন দুঃখ করে বললেনÑ ধর্ষণের মহোৎসব চলছে যেন! নির্লজ্জের মতো কেউ কেউ আবার নারীদের পোশাক নিয়েও কথা তোলে। যা হোক, যে হোটেলটিতে সম্প্রতি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সেই রেইনট্রির মতো আরও অনেক হোটেলের অস্তিত্ব ঢাকা রাজধানীসহ দেশের অন্য অঞ্চলেও রয়েছে। কোনটা খবর হলেও কোনটা খবর হয় না। এসব হোটেলে ধনীর দুলালদের দৌরাত্ম্য কমে না। অনেক সময় টাকার জোরেই তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে থাকে। তাদের দম্ভেরও কোন শেষ নেই। তাদের কাছে মনে হয় এই দুনিয়াটাই যেন এক স্বর্গ! মধ্যম হালি শহর, চট্টগ্রাম থেকে
×