ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করমজলে প্রাণের স্পন্দন

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ২৪ মে ২০১৭

করমজলে প্রাণের স্পন্দন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মংলা, ২৩ মে ॥ রহস্য, রোমাঞ্চ আর ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যের সুন্দরবনের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রটি। পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের অধীনে এ প্রজনন কেন্দ্রটি। নদীপথে মংলা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে এ পর্যটন কেন্দ্রটির অবস্থান। বর্তমানে একের পর এক নতুন জন্মের স্বাদ নিচ্ছে প্রজনন কেন্দ্রের বাসিন্দারা। নতুন খুশির খবর করমজলে নতুন করে আরও একটি মাদি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ডিম থেকে ২৮টি বাচ্চার জন্ম হয়েছে। গত শনি থেকে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত ডিম ফেটে এ বাচ্চাগুলো বের হয়েছে। সোমবার সকালে করমজলের কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের চৌবাচ্চায় এগুলোকে অবমুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, গত ২০ মে করমজলে ৪৮টি ডিম দিয়েছে একটি মাদি কুমির পিলপিল। এর আগে ৯ মে অপর একটি মাদি কুমির জুলিয়েট ৪৩টি ডিম দেয়। ডিমগুলো ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। সঠিক পরিচর্যা ও ইনকিউবেটরে নির্দিষ্ট আলো, বাতাস ও তাপমাত্রায় ডিমগুলো ফুটে ৮৮ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বাচ্চা বের হবে। করমজলের ওসি হাওলাদার আজাদ কবীর বলেন ‘নতুন প্রাণের স্পন্দনে করমজলে এখন ভিন্ন পরিবেশ। পূর্ব সুন্দরবনের পশুর নদের ধারে এ বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে প্রতিদিন শত মানুষের চোখ এখন খুঁজে ফিরছে কুমিরের ডিম আর কচ্ছপের ছানা। কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের ইনচার্জ ও গবেষক আব্দুর বর বলেন, ‘গত সপ্তাহে করমজলে প্রথমবারের মতো একটি মাদি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৩১টি ডিম থেকে ২৮টি বাচ্চা পাওয়া যায়। দ্বিতীয় দফায় আরেকটি মাদি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে শনি থেকে রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ২৮টি বাচ্চা পাওয়া গেছে। বাকি চারটি ডিমের মধ্যে দুটি ডিম পচে গেছে, একটির বাচ্চা ডিমের ভেতরে মরে গেছে। একটি ডিম থেকে দু’-একদিনের মধ্যে একটি বাচ্চা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় নোনা পানির কুমিরের প্রজনন, বংশবিস্তার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে বন বিভাগের উদ্যোগে ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের আট একর জায়গাজুড়ে প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে কুমির প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। গত বছর এ কেন্দ্রে শুরু হয়েছে বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের প্রজনন। এতেও ভাল ফল মিলেছে।
×