ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দশ হাজার হেক্টর আম বাগান ইটভাঁটির কবলে

চাঁপাইয়ে ইটভাঁটির ধোঁয়ায় আমশূন্য বাগান

প্রকাশিত: ০৪:০১, ২৪ মে ২০১৭

চাঁপাইয়ে ইটভাঁটির ধোঁয়ায় আমশূন্য বাগান

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ একদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড়, বৃষ্টি, শিলা। পাশাপাশি মানুষসৃষ্ট ইটভাঁটির কালো ধোঁয়ার সদর, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুরসহ ভোলাহাটের প্রায় আম বাগান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও হচ্ছে। বাগানের আম পচে যাচ্ছে, আবার কোনটা চিড় ধরে ফাটছে আবার আকৃতিতেও ধস নেমেছে। বড় সাইজ মতো না হয়ে বিকৃতি আকার ধারণ করছে। প্রায় দশ হাজার হেক্টর আমের বাগান ইটভাঁটির ধোঁয়ার দূষণে পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আঞ্চলিক উদ্যান গবেষণা কেন্দ্র (সাবেক আম গবেষণা কেন্দ্র), কল্যাণপুর হর্টিকালচার সেন্টার ও কৃষি সম্প্রসারণ চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ইটভাঁটির কারণে এখন পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার আম। তাদের অভিমত সব মিলিয়ে জেলার প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর আম বাগান রয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার হেক্টর বেশি। অন্যান্য বছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আম। এবার বার বার বৈরী আবহাওয়া বা ঝড়বৃষ্টি ও শিলার কারণে আম চাষীদের মাথায় হাত। এরপরেই রয়েছে ইটভাঁটির কালো ধোঁয়া। শহরসংলগ্ন বারঘরিয়াতে রয়েছে অর্ধশতাধিক ইটভাঁটি। এরপরে শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলায় রয়েছে দেড় শতাধিক ইটভাঁটি। যারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইটভাঁটি করেছে, তারা এই হিসাবের বাইরে রয়েছে। প্রভাবশালীদের সুপারিশে ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করা ইটভাঁটির অধিকাংশের অবস্থান একেবারে আম বাগান ঘিরে। কারণ শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট অঞ্চলে ইটভাঁটি করতে হলে আম বাগান পড়বেই। ইটভাঁটির কারণে হাজার হাজার একর জমির ফসলহানি হচ্ছে। এ বছর আমের মৌসুম শুরু হতেই বাগানে আমের পচনরোগ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেও প্রতিরোধ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। একটি আমের গাছ থেকে রাতারাতি পুরো বাগানে এর প্রভাব পড়েছে। এবার আম নিয়ে সবচেয়ে বড় লোকসান গুনতে হবে সদর, শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটকে। প্রায় ২১টি এলাকার লোক বা আম চাষীরা ইতোমধ্যেই তিন থানার প্রশাসন, সংশ্লিøষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ পেশ করেও কোন ধরনের সহযোগিতা পাননি। একটি সূত্র বলেছে, ১৪টি কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে তাদের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার দ্বিগুণ ক্ষতি করেছে ইটভাঁটির কালো ধোঁয়া। অধিকাংশ ভাটা মালিক প্রভাবশালী ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ার কারণে কোন শাখার কোন প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাদের কাছে পৌঁছাবার সাহস পাচ্ছে না।
×