ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বেড়ায় উচ্চ মাধ্যমিক ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অর্থ বাণিজ্য

প্রকাশিত: ০০:২১, ২২ মে ২০১৭

বেড়ায় উচ্চ মাধ্যমিক ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অর্থ বাণিজ্য

নিজস্ব সংবাদদাতা , বেড়া, পাবনা ॥ পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি কলেজে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় ও খাতা বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দেয়া অভিযোগ থেকে জানা গেছে, উপজেলার বেড়া কলেজ, আলহেরা একাডেমি (স্কুল এন্ড কলেজ), মঞ্জুর কাদের মহিলা ডিগ্রি কলেজ, কাশীনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও মাশুন্দিয়া-ভবানীপুর কেজেবি ডিগ্রি কলেজ এবং সাঁথিয়া উপজেলার কাশীনাথপুর শহীদ নূরুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ, রসায়ন, জীব, গণিত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতি বিষয়ের ব্যবহারিক খাতা বাবদ ১০০ টাকা ও ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ পৃথকভাবে ২০০ টাকা করে পরীক্ষার্থীপ্রতি মোট প্রায় ১২০০/১৩০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর ধার্যকৃত টাকা না দিলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেবার অথবা কম নম্বর দেবার হুমকিসহ ব্যবহারিক খাতায় স্বাক্ষর না করার অভিযোগও উঠেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের এই হুমকিতে অনেক গরীব ও অসহায় শিক্ষার্থীকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। কাশীনাথপুর মহিলা কলেজের একাধিক ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, ‘ফরম ফিলাপের সময় যাবতীয় ফি পরিশোধ করা হয়েছে। এরপরও আমাদের কাছ থেকে শিক্ষকরা জোর করে অর্থ আদায় করছেন।’ কাশীনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অভিভাবকরা অভিযোগে জানান, ‘ওই কলেজের তথ্য ও প্রযুক্তির শিক্ষক মাসুদ বিন আমিন বিপ্লব কলেজের ছবিসম্বলিত খাতা প্রেস থেকে ছেপে ছাত্রীদের কাছে বাধ্যতামূলক তিনশ’ টাকা করে বিক্রি করছেন। ওই খাতা না কিনে বাজারের খাতা কিনলে কম নম্বর দেয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন।’ অভিভাবকরা আরও জানান, এই জাতীয় ব্যবহারিক খাতা বাজারে মাত্র ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুদ বিন আমিন বিপ্লবকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাবলীলভাবে বলেন, ‘বাইরের যে সমস্ত শিক্ষকরা পরীক্ষক হয়ে আসেন, তাদের আপ্যায়ন ও যাতায়াতের জন্য এ টাকা নেওয়া হচ্ছে।’ খাতা তৈরি করে বিক্রির বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। আলহেরা একাডেমির অধ্যক্ষ মকসুদ আলম চৌধুরীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে আদায়কৃত অর্থের বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। কাশীনাথপুর শহীদ নূরুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন বলেন, ‘যে সমস্ত পরীক্ষক ব্যবহারিক পরীক্ষার খাতা দেখবেন, তাদের জন্য টাকা তোলা হয়েছে। এটা সব কলেজই কমবেশি নিয়ে থাকে।’ জানতে চাইলে বেড়া উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। তারপরেও কোন কোন শিক্ষক যদি এভাবে অর্থ আদায় করে থাকেন, তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক অভিভাবক ফেসবুকেও এ নিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হচ্ছে না।
×