ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোহামেডানকে হারিয়ে সুপার লীগে শেখ জামাল

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২২ মে ২০১৭

মোহামেডানকে হারিয়ে সুপার লীগে শেখ জামাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের লীগ পর্ব শেষ হয়ে গেছে রবিবার। লীগ পর্বের শেষদিনে ষষ্ঠ দল হিসেবে সুপার লীগে খেলা নিশ্চিত করেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। বড় স্কোরের ম্যাচে মোহামেডানকে ১ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে শেখ জামাল। খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতিকে ৫ উইকেটে হারিয়ে রেলিগেশন লীগ খেলা থেকে বেঁচেছে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র। দিনের আরেকটি ম্যাচে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের কাছে ৭ উইকেটে হেরেও লীগ পর্ব শেষে শীর্ষেই আছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। সুপার লীগে খেলা আগেই নিশ্চিত করে নিয়েছিল গাজী গ্রুপ, আবাহনী লিমিটেড, প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব, প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ১২ দলের খেলায় ছয় দল সুপার লীগে খেলবে। পাঁচ দল আগেই নিশ্চিত করায় বাকি ছিল একটি দল। সেই দল কারা হবে, শেখ জামাল না লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এই ছিল প্রশ্ন। যদি মোহামেডানের কাছে শেখ জামাল হারত তাহলে লীগ পর্বের ‘হেড টু হেডে’র বিবেচনায় রূপগঞ্জ সুপার লীগে খেলত। কিন্তু শেখ জামাল জেতায় মোহামেডানের সঙ্গে ‘হেড টু হেড’ বিবেচনায় পয়েন্ট সমান থাকার পরও রূপগঞ্জের বিদায় ঘটেছে। তবে রূপগঞ্জ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও কলাবাগান; এই তিন দল আগামী মৌসুমে সরাসরি লীগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছে। আর পয়েন্ট তালিকার নিচের সারিতে থাকা তিন দল, খেলাঘর, পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব ও ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব রেলিগেশন লীগ খেলবে। এ তিন দলের রেলিগেশন লীগে যে দল পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে থাকবে তারা আগামী মৌসুমে লীগ খেলার সুযোগ পাবে। বাকি দুই দল প্রথম বিভাগে নেমে যাবে। অবনমন হবে। বিকেএসপি তিন নম্বর মাঠে আগে ব্যাট করে মোহামেডান আকাশচুম্বী রান করে। তা সম্ভব হয় শামসুর রহমান শুভর অপরাজিত ১৪৪ ও রনি তালুকদারের ১১০ রানে। এ দুইজন মিলে তৃতীয় উইকেটে ১৭৩ রানের বড় জুটি গড়েই মোহামেডানকে বড় স্কোরে দাঁড় করিয়ে দেন। ২৪৯ রানে ৯৯ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১১০ রান করে রনি আউট হওয়ার পরও শামসুর ঠিকই উইকেট আঁকড়ে থাকেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন। ১৫২ বলে ৭ চার ও ৭ ছক্কায় অপরাজিত ১৪৪ রান করা শামসুরের এ দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ৩৩৯ রান করে মোহামেডান। এবারের লীগে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এ রান অতিক্রম করা শেখ জামালের জন্য কঠিনই ছিল। কিন্তু সেই কঠিন কাজটিই করে দেখালেন শেখ জামাল ব্যাটসম্যানরা। শেষ মুহূর্তে গিয়ে ম্যাচটি জমে ওঠে। শেখ জামালের জিততে ৬ বলে ৩ রান লাগে। কিন্তু উইকেট হাতে থাকে ১টি। প্রথম তিন বলে ২ রান নেয়া যায়। চতুর্থ বলে গিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দেন শাহাদাত হোসেন রাজিব। ২ বল বাকি থাকতে ৯ উইকেট হারিয়ে ৪৯.৪ ওভারে ৩৪৩ রান করে জিতে শেখ জামাল। সোহাগ গাজী দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। ৬৪ বলে ৮৯ রান করেন। প্রশান্ত চোপড়া করেন ৮৬ রান। তানভির হায়দারও ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন। শেষ মুহূর্তে ইলিয়াস সানি অপরাজিত ৩৯ রান করেন। মোহাম্মদ আজিম ৪ উইকেট নেন। কলাবাগান ও খেলাঘরের মধ্যকার বিকেএসপি চার নম্বর মাঠে গুরুত্বপূর্ণ খেলা হয়। যে দল জিতবে তারাই রেলিগেশন লীগ খেলা থেকে বেঁচে যাবে এমন সমীকরণ ছিল। শেষ পর্যন্ত জিতল কলাবাগানই। শেখ জামালের বিপক্ষে অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংস খেলা থেকেই যেন জ্বলে ওঠেন মোহাম্মদ আশরাফুল। দলকে রেলিগেশন লীগ খেলা থেকে বাঁচানোর ম্যাচেও ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন। আশরাফুলের এ ইনিংসের সঙ্গে জসিমুদ্দিনের ৮৮ রানে কলাবাগান ৫ উইকেটের বড় ব্যবধানেই জিতে। আগে ব্যাট করে খেলাঘর ৭ উইকেটে ৫০ ওভারে ২০৪ রান করে। রাফসান আল মাহমুদ সর্বোচ্চ ৭১ রান করেন। সাদ নাসিম ৩টি ও নাবিল সামাদ ২টি উইকেট নেন। এরপর জবাব দিতে নেমে জসিমুদ্দিন ও আশরাফুলের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ৪৭.৫ ওভারে ২০৫ রান করে কলাবাগান জিতে যায়। এই জয়ে রেলিগেশন লীগ খেলা থেকে মুক্ত হয় কলাবাগান। সেই সঙ্গে আগামী মৌসুমে লীগ খেলার নিশ্চয়তাও পায়। আর খেলাঘরকে রেলিগেশন লীগ খেলতে হবে। ফতুল্লায় গাজী গ্রুপ ও প্রাইম ব্যাংক মুখোমুখি হয়। ম্যাচটি হারলেও শীর্ষে থেকেই লীগ পর্ব শেষ করা নিশ্চিত ছিল গাজী গ্রুপের। আর ম্যাচটিতে প্রাইম ব্যাংক জেতা মানে পয়েন্ট ভা-ার মজবুত করে রাখা। প্রাইম ব্যাংক তাই করল। গাজী গ্রুপকে হারিয়ে দিয়ে পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরে উঠে গেল প্রাইম ব্যাংক। গাজী গ্রুপ হেরেও সবার ওপরেই থাকল। আগে ব্যাট করে মুমিনুল হকের ৭৯ ও রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া জহুরুল ইসলাম অমির ৬৬ রানেও ৫০ ওভারে ২১৪ রান করে যখন গাজী গ্রুপ গুটিয়ে যায়, তখনই বোঝা যায় ম্যাচটি প্রাইম ব্যাংক জিততে পারে। তাই হলো। ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৬.৫ ওভারে ২১৮ রান করে জিতে যায় প্রাইম ব্যাংক। রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া জাকির হাসান ৬৬, অভিমান্নু ৫২, আল আমিন অপরাজিত ৪১ ও তাইবুর রহমান ৩৩ রান করেন। স্কোর ॥ শেখ জামাল-মোহামেডান ম্যাচÑ বিকেএসপি-৩ মোহামেডান ইনিংস ৩৩৯/৫; ৫০ ওভার (শামসুর ১৪৪*, রনি ১১০, সৈকত ৩৯; মামুন ২/৩১)। শেখ জামাল ইনিংস ৩৪৩/৯; ৪৯.৪ ওভার (সোহাগ ৮৯, প্রশান্ত ৮৬, তানভির ৭৭, ইলিয়াস ৩৯*; আজিম ৪/৭০)। ফল ॥ শেখ জামাল ১ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ শামসুর রহমান (মোহামেডান)। প্রাইম ব্যাংক-গাজী গ্রুপ ম্যাচÑ ফতুল্লা গাজী গ্রুপ ইনিংস ২১৪/১০; ৫০ ওভার (মুমিনুল ৭৯, জহুরুল ৬৬ (রি.হা.), নাদিফ ২৬; নাজমুল ৩/৪৫)। প্রাইম ব্যাংক ইনিংস ২১৮/৩; ৪৬.৫ ওভার (জাকির ৬৬ (রি.হা.), অভিমান্নু ৫২, আল আমিন ৪১*)। ফল ॥ প্রাইম ব্যাংক ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ জাকির হাসান (প্রাইম ব্যাংক)। কলাবাগান-খেলাঘর ম্যাচÑ বিকেএসপি-৪ খেলাঘর ইনিংস ২০৪/৭; ৫০ ওভার (রাফসান ৭১, সাগর ৪৬; সাদ ৩/৩৪)। কলাবাগান ইনিংস ২০৫/৫; ৪৭.৫ ওভার (জসিমুদ্দিন ৮৮, আশরাফুল ৫৬; রনদিব ৩/৩১)। ফল ॥ কলাবাগান ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ জসিমুদ্দিন (কলাবাগান)।
×