ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নির্বাচনে জয়ের কৌশল নির্ধারণ ॥ আজ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২০ মে ২০১৭

নির্বাচনে জয়ের কৌশল  নির্ধারণ ॥ আজ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী নির্বাচনে বিজয়ের কৌশল নির্ধারণে আজ শনিবার সারাদেশের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বর্ধিত সভায় বসছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু এ বর্ধিত সভায় নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতির পাশাপাশি সারাদেশে একযোগে দলের সদস্য পদ নবায়ন, নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন হবে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই দলের মন্ত্রী-এমপিরা তৃণমূল নেতাদের মুখোমুখি হবেন। সারাদেশ থেকে আসা তৃণমূল নেতারা মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ-নালিশ তুলে ধরতে পারেন বর্ধিত সভায়। আজকের বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির সর্বাত্মক অগ্রযাত্রা শুরু হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচনের জন্য বর্ধিত সভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন এবং এর মধ্য দিয়ে আমরা আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির সর্বাত্মক অগ্রযাত্রা শুরু করব। সেই লক্ষ্যে আমরা আধুনিক, শক্তিশালী, সুংহত, সুশৃঙ্খল এবং সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে চাই। আর আজ থেকে শুরু হওয়া সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে দলকে পরগাছা মুক্ত করতে চাই। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে বর্ধিত সভা শুরু হবে। এতে ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পাশাপাশি ১৮০ সদস্যের জাতীয় পরিষদ এবং ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি জেলা কমিটি সকল দফতর ও উপ-দফতর সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা এবং তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদকরা অংশগ্রহণ করবেন। জানা গেছে, বৈঠকে সারাদেশের দলের মন্ত্রী-এমপিদেরও বর্ধিত সভায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তৃণমূল নেতারা বর্ধিত সভায় সারাদেশের দলের সাংগঠনিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরার সুযোগ পান। এবারের বর্ধিত সভায়ও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মন্ত্রী-এমপিদের আমন্ত্রণ জানানোর কারণে আজকের বর্ধিত সভায় তারা তৃণমূল নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন। বর্ধিত সভায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনা বিভাগের আওতাধীন জেলাগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্য থেকে মোট আটজনকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সাংগঠনিক বিষয়ে বক্তব্য রাখবেনÑ দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, বর্ধিত সভায় দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের সদস্য পদ নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতি হিসেবে সর্বপ্রথম নির্ধারিত ফরম পূরণের মাধ্যমে নিজের সদস্যপদ নবায়ন করবেন তিনি। এর মাধ্যমেই শুরু হবে সদস্য সংগ্রহ অভিযান। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সকল সাংগঠনিক জেলার নেতাদের একটি করে কম্পিউটার দেয়া হবে। একইসঙ্গে সম্মেলনে গৃহীত সংশোধিত আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র, বিএনপি-জামায়াত জোটের নৃশংসতা নিয়ে নির্মিত প্রমাণ্যচিত্রের একটি করে সিডিও প্রত্যেক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রদান করা হবে। এ প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে আমরা বর্তমান এবং ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছি। সেখানে এক ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রামে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সব সাংগঠনিক জেলার জন্য তার (সজীব ওয়াজেদ জয়) পক্ষ থেকে একটি করে কম্পিউটার দেয়া হবে। নিজের দল ভারি করতে গিয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে যাতে পরগাছারা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, এ অভিযান শনিবারের বর্ধিত সভায় উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অভিযানকালে কোন পরগাছা-আগাছা যাতে দলে ঢুকতে না পারে সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করি। বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণে ব্যাপক প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে এমনটা ধরে নিয়েই এখন থেকেই নির্বাচনী মাঠে জোরেশোরে নামতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তৃণমূলে তীক্ষè নজর রাখছেন দলটির হাইকমান্ড। এখন থেকেই সারাদেশে অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করতে আজকের বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাদের পরামর্শ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে তিনি দলীয় ফোরামের কয়েকটি আলোচনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে। জনবিচ্ছিন্ন কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না। আজকের বর্ধিত সভায় তার এ কঠোর অবস্থান জানানোর পাশাপাশি দলের মধ্যে কোন্দল-দ্বন্দ্ব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
×