ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাওড়ে খাদ্যাভাব, এনজিও ঋণের চাপে দিশেহারা মানুষ

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১ মে ২০১৭

হাওড়ে খাদ্যাভাব, এনজিও ঋণের চাপে দিশেহারা মানুষ

রাজন ভট্টাচার্য/সঞ্জয় সরকার/আবুল কাসেম আজাদ, হাওড়াঞ্চল থেকে ॥ নেত্রকোনা সদর থেকে ৩৩ কিলোমিটার পেরিয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা। সেখান থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে তেঁতুলিয়া গ্রাম ও বাজার। এরপর ডিঙ্গাপোতা হাওড়। সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমি নিয়ে এই হাওড়ের অন্যপাশে গাগলাজুর ইউনিয়নের গাগলাজুর বাজার, মান্দারবাড়ি ও নওগাঁ গ্রাম। তেঁতুলিয়া গ্রামে কোন কৃষকের মুখে এখন আর হাসি নেই। নীরব পরিবেশ। গ্রামের বাতাসে এখন পচা খড়ের গন্ধ। বাড়ির আঙ্গিনায় ছড়ানো ছিটানো রয়েছে পানির নিচ থেকে তুলে আনা নষ্ট ধান। বাজারগুলোও জমছে না। অনেকেই কাজের সন্ধানে ছুটছেন দূর-দূরান্তে। আবার কেউ কেউ কাটাচ্ছেন অলস সময়। অভাবে জমি কেনারও লোক নেই। কম দামে গরু বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন অনেকে। আছে এনজিও ঋণের কিস্তির চাপ। আশপাশের ২০টির বেশি গ্রামের চিত্র একই রকম। অথচ এই সময়ে নতুন ধান ঘরে তোলার উৎসব চলত গ্রাম জুড়ে। রাত দিন ব্যস্ত থাকতেন গ্রামের কিষান-কিষানীরা এখন গবাদি পশুর জন্য একটি বাড়িতেও তাজা খড় নেই। মড়কের কারণে মাছেরও অভাব। গ্রামের বাজারে এখন জাটকা ইলিশের দাপট দেখা দিয়েছে। যা কোন দিনও দেখেননি স্থানীয় লোকজন। একদিকে অভাব, অন্যদিকে ভবিষ্যতের চিন্তা। সব মিলিয়ে গোটা এলাকা জুড়ে রীতিমতো হাহাকার চলছে। ত্রাণের আশ্বাস মিললেও অনেকেই এখনও পাননি। যারা পেয়েছেন তাও পর্যাপ্ত নয়। এক কথায় বললে, কৃষক পরিবারগুলোতে অভাব এখন মাত্রা ছাড়িয়েছে। দিশেহারা পরিবারগুলো। অকালবন্যা আর পাহাড়ী ঢলের কারণে এক মুঠো ধানও কারো গোলায় নেই। অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন কাজের সন্ধানে। এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে পাড়ি জমাচ্ছেন ডিঙ্গাপোতা হাওড়ের আশপাশের মানুষ। ভাটি বাংলার রাজধানী হিসেবে পরিচিত মোহানগঞ্জ উপজেলা। ডিঙ্গাপোতা এই উপজেলার সবচেয়ে বড় হাওড়। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এই উপজেলায় মোট আবাদ হয় ১৬ হাজার ৮২০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে ১৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমি এখন পানির নিচে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ২৩ হাজার ৮০০। ইতোমধ্যে ভিজিএফের আওতায় তালিকাভুক্ত হয়েছেন মাত্র আট হাজার ৫০০ কৃষক পরিবার। উপজেলার অধীন রয়েছে সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শস্য ভা-ার হিসেবে পরিচিত ডিঙ্গাপোতা হাওড়টি প্রায় প্রতিবছরই থাকে অকাল বন্যার ঝুঁকিতে। গত চার বছর কমবেশি বন্যায় নষ্ট হয়েছে এই হাওড়ের ফসল। এবছর ধান পাকার আগেই পানিতে ভেসে গেছে সব। যতদূর চোখ যায় পানি আর পানি। পানির নিচে রয়েছে কৃষকের স্বপ্ন অর্থাৎ সোনালি ফসল। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এই হাওড়টি রক্ষার জন্য ২৯ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ হিসেবে পরিচিত গাগলাজুর বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার উত্তরে জালালের কুড় পর্যন্ত। যতবার বাঁধ ভেঙ্গেছে ততবার এই অংশ দিয়েই তলিয়েছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল সোনালি ধান। এবারও বাঁধটি রক্ষায় কাজ করেছেন হাওড়ের দু’পাড়ের হাজার হাজার মানুষ। শেষ মুহূর্তে বাঁধ রক্ষায় যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সাধারণ কৃষক-শ্রমিকরাও। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। এলাকাবাসী বলছেন, সময়মতো কাজ হয় না বলেই বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। এবারও তাই হয়েছে। তাদের পরামর্শ পৌষ মাস থেকে মাটি কাটা শুরু হলে বাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব। পাশাপাশি স্থায়ীভাবে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণেরও দাবি জানিয়েছেন তারা। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গাগলাজুর, তেঁতুলিয়া, মাঘান-সিয়াধার, সোয়াইর, বড়কাশিয়া-বিরামপুর, বড়তলী-বানিয়াহারী, সমাজ-সহিলদেও মিলিয়ে সাতটি ইউনিয়নের বেশিরভাগ ফসল এখন পানির নিচে। ডিঙ্গাপোতা হাওড়ের জালালপুর, মান্দারবাড়ি, গাগলাজুর, চাঁনপুর, আটবাড়ি, কামালপুর, মল্লিকপুর, বড়ান্তর, বানিয়াহরি, করাচাপুর, সিয়াধার, খুরশিমুইল, বলদশী, সেওড়াতলী, কুড়েরপাড়, মাঘানসহ আশপাশের সবক’টি গ্রামের কারও বাড়িতে নতুন ধান নেই। দুর্গত এসব গ্রামের মানুষগুলো এখন খাদ্য নিরাপত্তার চিন্তায় রাত দিন কাটাচ্ছেন। গাগলাজুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ সাদিকুর রহমান জনকণ্ঠ’কে বলেন, কয়েক বছর ধরে আমি এই এলাকায় চাকরি করছি। কখনও চৈত্র মাসে বন্যা দেখিনি। তিনি বলেন, এ বছর তিন লাখ টাকা ভূমি খাজনা তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। হয়তা তা সম্ভব হবে না। মানুষ এখন বাঁচার সংগ্রাম করছেন। খাজনা চাওয়ার সাহসও পাচ্ছি না। এক ফসলের জন্য ২০ কাঠা জমি ‘জমা’ নিয়েছিলেন তেঁতুলিয়া গ্রামের কৃষক লিলু মিয়া। কাঠাপ্রতি ৬০০ টাকা করে অগ্রিম দিতে হয়েছে জমির মালিককে। এরপর বোরো আবাদের জন্য ব্যয় হয়েছে আরো প্রায় ২০ হাজার টাকা। কিন্তু এক চিমটি ধানও তিনি ঘরে তুলতে পারেননি। এখন দিশেহারা এই পরিবারটি। নিজের কোন জমি নেই। অন্যের জমি চাষ করে বেঁচে থাকার ভাগ্যও নেই। ভবিষ্যত কি হবে? এ নিয়ে চিন্তিত তিনি। একবেলা খেয়ে পরে কোন রকমে বেঁচে আছে পরিবারটি। একই অবস্থা তেঁতুলিয়া গ্রামের মজনু মিয়ারও। তিনিও ২০ কাঠা জমি ‘জমা’ নিয়ে আবাদ করেছিলেন। সব হারিয়ে তিনিও এখন অনেকটা পাগলের মতো। একই গ্রামের আব্দুল খালেক মিয়া জানান, প্রায় ১০ কাঠা জমির ফসল এখন পানির নিচে। গত বছর অল্প হলেও ধান ঘরে তুলতে পেরেছিলেন। এ বছর একমুঠো ধানও কাটতে পারেননি তিনি। তিনি জানান, হাওড় রক্ষার জন্য হাজদিয়া বেড়িবাঁধটি তিন বছর ধরে একই অংশে ভাংলেও আমরা সমস্যা সমাধানে কিছুই করতে পারছি না। কাজের সন্ধানে গ্রাম ছাড়ছে মানুষ উপায়হীন এখন ডিঙ্গাপোতা হাওড়পাড়ের মানুষ। অনেকের ঘরে ভাত নেই। নেই কাজের কোন ব্যবস্থা। সম্পদও নেই। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে অনেকের। সবচেয়ে বেশি বিপদগ্রস্ত সাধারণ শ্রেণীর কৃষক ও ভূমিহীন পরিবারগুলো। তাই উপায়হীন হয়ে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে ছুটছেন তারা। কেউ যাচ্ছেন ঢাকা, কেউবা চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা। অনেক পরিবারের উপার্জনশীল ব্যক্তি যিনি আছেন একমাত্র তিনিই যাচ্ছেন আয়ের সন্ধানে। ইতোমধ্যে তেঁতুলিয়া গ্রামের লুলু মিয়া, আমজাদ, বাচ্চু, হাদিস, মোজাফফর, খান বাহাদুর, মিজানুর রহমান, নয়াপাড়ার বাসিন্দা হাদিস, আবুল, শওকত আলী, হাসেম, কালাম, বাবলু, মতিন এছাড়াও বাবনিকোনা গ্রামের রুহুল আমিন, হেলামিন, তরিকুল, সাইকুল, মিলন, হারিস, আবদুল হেকিম, আবদুর রব, ফেরদৌস, মোস্তাক, আবুল কাশেম এরা সবাই গ্রাম ছেড়ে কর্মের খোঁজে গেছেন বিভিন্ন এলাকায়। তেঁতুলিয়া গ্রামের লালবানু জানান, ১২ কাঠা জমিতে এখন পানি আর পানি। একমুঠো ধানও ঘরে নেই। তিন সদস্যের এই পরিবারটি না খেয়ে দিন পার করছে। একই গ্রামের জাহানারা জানালেন, পানির নিচ থেকে পচা ধান তুলে আনা হচ্ছে। বেশিরভাগই চিটা। কাঁচা ধান পুষ্ট না হওয়ায় এমন অবস্থা। একমণ ধানে ১০ কেজি চালও হচ্ছে না। তিনি জানান, স্বামী-স্ত্রীসহ সাত জনের পরিবারটি খেয়ে-না খেয়ে দিন পার করছে। এখন পর্যন্ত সরকারী কোন সাহায্য আসেনি। হালেমা খাতুন জানান, এমন দুর্যোগ আর দেখিনি। ফসলের ক্ষতি হওয়ায় এক বেলা ভাত খেয়ে আছি। ৬০ বছয় বয়সী মোতালিব মিয়া জানালেন, ‘চৈত্র মাসে পানি আসার দৃশ্য আর কখনও দেখিনি। ছোট বেলায় বাপ-দাদার মুখে শুনেছিলাম অকাল বানের কথা। বড় হয়ে এমন কোনদিন দেখিনি। তিনি জানান, হাওড়ের পানিতে ডুব দিয়ে পচা ধান সংগ্রহ করছি। পচা খড়ও আনছি। কিন্তু গরুও তা খাচ্ছে না। ভবিষ্যত কি জানি না।’ তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন সাজ্জাত জানান, হাওড়ে মাছ নেই। জাল ফেলেও মাছ মিলছে না। ধানও নেই কারও ঘরে। মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করা খুবই কঠিন। সাহায্য যা আসছে তা অপ্রতুল। চারদিকে শুধু অভাব আর অভাব। দিশেহারা স্থানীয় লোকজন। অথচ এনজিও সংস্থাগুলো মানুষের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে ঋণের কিস্তি আদায়ে। বকুল মিয়া জানালেন, ২০০ কাঠা জমির একমুঠো ধানও গোলায় তুলতে পারিনি। অভাব আছে। কিন্তু সামাজিক কারণে কারো কাছে হাত পাতাও সম্ভব নয়। ১৫ নং পূর্ব তেঁতুলিয়া সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল হক জানালেন, হাওড়ের দুর্যোগের কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে। শিক্ষার্থীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে উপস্থিতি বাড়বে বলে মত দেন তিনি। ট্রলার চালিয়ে এখন আর সংসারের চাকা সচল থাকছে না মান্দাউড়া গ্রামের শাহ আলমের। তিনি জানান, চরহাইজদা হাওড়ের ২০ কাঠা জমির ধান ডুবে গেছে। উপায় না পেয়ে এখন ট্রলার চালাই। দিনে ১শ’ টাকা নৌকার ভাড়া দেই। সর্বোচ্চ আয় হয় ৩শ’ টাকা। তা দিয়ে সংসার চলে না। অন্য বছর নৌকা চালিয়ে আয় বাড়লেও এবছর আয় একেবারেই কম। কিস্তির যন্ত্রণায় অস্থির তেঁতুলিয়া গ্রামের এখলাস মিয়া। তিনি জানান, ১৬ কাঠা জমি তলিয়ে যাওয়ায় খুব কষ্টে আছে। ঘরে ধান নেই। সমিতির কিস্তি দেয়া কঠিন হচ্ছে। আশা সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা লোনের বিপরীতে সপ্তাহে পাঁচ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। কিন্তু এখন কিভাবে কিস্তি চালাব এ নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। আবুল কাশেম জানান, ব্র্যাক ও আশা মিলিয়ে ৭০ হাজার টাকা লোন নিয়েছেন তিনি। সাপ্তাহিক কিস্তি আট হাজার ৩০০ টাকা। তিনি জানান, সমিতির লোকজন বারবার কিস্তির তাগাদা দিচ্ছে। ৪০ কাঠা জমির ফসল নষ্ট হওয়ায় ভবিষ্যত কি জানি না। সরকারী সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে। আশাকরি পাব। অভাবের কারণে কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা মানুমিয়া গ্রাম ছেড়েছে। অথচ তিনি পাঁচ কেজি চাল ও পাঁচ কেজি আটা পেতে শুরু করেছিলেন। তবুও সংসার চালানো তার জন্য কঠিন ছিল বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। বামনিকোনা গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ মিয়া জানান, যখন বাঁধের কাজ শুরুর কথা তখন হয় না। অসময়ে টেন্ডার হয়, এরপর কাজ শুরু হয়। পৌষ মাসের দিকে কাজ শুরু হলে ফসল রক্ষা হতে পারে। তিনি জানান, মজবুত ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ছাড়া ফসল রক্ষা সম্ভব হবে না। তিনি জানান, বাঁধটি কুড় এলাকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কুড় থেকে বারবার মাটি তোলার কারণে বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়। তিনি জানান, রতনখালী-গাগলাজুড় বাজার পর্যন্ত বাঁধের অংশটিও ঝুঁকিমুক্ত নয়। এনজিওদের কিস্তির তাগাদায় একেবারেই অস্থির সোহেল মিয়া। বাম গ্রামের বাসিন্দা তিনি। এমনিতেই ৪০ কাঠা জমি গেছে অকাল বন্যায়। তিনি বলেন, হাতে টাকা নেই। তাই কিস্তিও বাকি পড়ছে। স্থানীয় এমপি বলে গেছেন, এনজিওদের কিস্তি না দেয়ার জন্য। অকাল বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে এমদাদুল হক মনিরের ৩৬ কাঠা জমির ধান। তিনি জানান, আমার তিন পুরুষ এমন বন্যা দেখেনি। তবে নিয়মিত বাঁধ মেরামত না হওয়ায় প্রতিবছরই কম বেশি ফসল নষ্ট হওয়ার কথা জানান তিনি। পাইকুড়া বাজার থেকে সরকারী সাহায্য ৫০০ টাকা পেয়েছেন তেঁতুলিয়ার আবু সাঈদ। তিনি জানান, কৃষি ঋণ চাই। অন্যথায় বাঁচার কোন ব্যবস্থা নেই আমাদের। এমনিতেই ৪০ কাঠা জমির মধ্যে এক ছিটে ধানও ঘরে আসেনি। টানা দু’বছর ধরে ফসল নষ্ট হওয়ার কথা জানালেন মোঃ খোকন মিয়া। এবছর ২৪ কাঠা জমির পুরোটাই গেছে। তিনি জানান, অভাবের কারণে পাশের বাড়ির হাদিস, মোজাফ্ফর, বাহাদুর, মিজানুর রহমান সবাই ঢাকায় চলে গেছেন। হারেস মিয়া জানান, জমি কেনারও কেউ নেই। গরু বিক্রি করতে পারছি না। বাজারে দাম কম। খায়রুল আমিন জানান, জালালের কুড় নিয়ে সমস্যার কারণে বাঁধটি বারবার ভাঙ্গে। তিনি বলেন, সুদ ছাড়া কৃষকদের কৃষিঋণ দেয়া হলে অনেকটাই সঙ্কট মোকাবেলা সহজ হবে।
×