স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ আড়াই হাজারে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এতে এক ইউপি সদস্য সহ ৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় চার ঘন্টা নদীতে খেয়া পারাপার বন্ধ থাকে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হয়। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বেলা ১১টায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মেঘনা নদীতে খাগকান্দা ইউনিয়ন অংশে খাগকান্দা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন নতুন সদ্যার চর ভেসে উঠায় কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের কদমীরচর এলাকার জয়নাল, খোকন, ইয়াছিন, রুবেল, মধ্যারচর এলাকার জলিল, জসু, সফিকুলসহ একটি সংঘবদ্ধদল বেশ কিছুদিন ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছিল। এতে খাগকান্দা এলাকায় মেঘনা নদী ভাঙ্গনের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় এলাকাবাসী তাদেরকে বালু উত্তোলনে নিষেধ করে। কিন্তু বালু সন্ত্রাসীরা বাধা অমান্য করে বালু উত্তোলন করতে থাকে।
ফলে রবিবার বেলা ১১টায় খাগকান্দা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ও একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য রফিকের নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিযে বালু সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দেয়। এতে বালু সন্ত্রাসীরা প্রথমে পিছু হটলেও কিছুক্ষণ পরে আবারও তারা তিনটি স্প্রিডবোর্ড যোগে এসে এলাকাবাসীকে লক্ষ্য করে ছড়া গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
এ সময় ককটেল পানিতে পড়লেও ছড়াগুলিতে রফিক মেম্বার, আলামিন, দুলাল, খাজা, নূর আলামিন আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে এলাকাবাসী বেশ কয়েকটি ট্রলার যোগে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। মেঘনা নদীতে সংঘর্ষের ঘটনায় নদী পারাপারের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় চার ঘন্টা খেয়া পারাপার বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চর দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হয়।
খাগকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম নুরু জানান, নতুন চর জেগে উঠলে জয়নাল, খোকন ও ইয়াছিনসহ অন্যান্যরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। এ সময় তারা এক যুবককে আটক করলে তাকে ছাড়াতে ছাত্রলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ও মেম্বার রফিক মেম্বারসহ লোকজন গেলে তাদের লক্ষ্য করে বালু উত্তোলনকারীরা ছড়াগুলি নিক্ষেক করে। এতে রফিক মেম্বার সহ ৫-৬জন সামান্য আহত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বালু উত্তোলনকারীরা কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল হক ডালিমের লোকজন। খাগকান্দা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক লুৎফর রহমান জানান, বালু সন্ত্রাসীদের ছড়া গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দিলে তারা স্পিডবোর্ড যোগে পালিয়ে যায়।
আড়াই হাজার থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান, নতুন চর জেগে উঠলে চর এলাকা থেকে থেকে বালু উত্তোলকারীরা বালু কাটতে আসলে এক পক্ষ বাধা দেয়। পরে উভয় পক্ষ মুখোমুখী অবস্থান নেয়। এতে নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দুই পক্ষ দুদিকে চলে যায়। কোন গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি।
