ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গণমানুষকে ইতিহাস সচেতন করতে হলে মাতৃভাষা ইতিহাস চর্চা করতে হবে

প্রকাশিত: ০২:৫৩, ২৮ এপ্রিল ২০১৭

গণমানুষকে ইতিহাস সচেতন করতে হলে মাতৃভাষা ইতিহাস চর্চা করতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বর্তমান তরুণ প্রজন্ম বাঙালির গৌরবজ্জ্বল অতীত ইতিহাস না জেনে ক্রমেই শেকড়চ্যুত হয়ে পড়ছে। শিক্ষাব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে গলদ পুঞ্জীভূত হওয়ায় তারা ইতিহাস বিমুখ হয়েছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা ধারণ করতে হলে বাঙালির ইতিহাস জানতে হবে। গণমানুষকে ইতিহাস সচেতন করতে হলে মাতৃভাষা ইতিহাস চর্চা করতে হবে। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘বাংলা ভাষায় স্থানীয় ইতিহাস চর্চা’ শীর্ষক ৪৭তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইতিহাস বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবদুর রহিম। রাশেদ খান মেনন বলেন, বর্তমান প্রজন্ম ক্রমেই ইতিহাস বিমুখ হয়ে পড়ছে। বাঙালির গৌরবজ্জ্বল অতীত তারা জানে না। এই অশনি সংকেত উত্তরণে সব কলেজ, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস এবং মাতৃভাষা বাংলাকে কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের ধারণা অতি সামান্য। মাতৃভাষা চর্চার প্রতি তরুন সমাজের রয়েছে অনীহা। অথচ এ দেশেরে তরুণরাই ৫২ এর ভাষা আন্দেলন, ৬২ এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছে। মন্ত্রী আরও বলেন, ইতিহাস সময়ের প্রতিবিম্ব। বর্তমানকে বুঝতে হলে অতীতকে জানতে হবে। একটি জাতির উত্থান, অগ্রগতি ও বিকাশকে ধারণ করে ইতিহাস। আঞ্চলিক ও স্থানীয় গৌরবগাঁথার বিস্মৃত অধ্যায়গুলো ইতিহাসের পাতায় তুলে আনতে হবে। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় ইতিহাসের ভিত দৃঢ় হবে। আর ইতিহাসের সৌন্দর্য ও সৌকর্য সবার কাছে তুলে ধরতে মাতৃভাষায় ইতিহাসের চর্চা করতে হবে। অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান বলেন, শিক্ষাব্যবস্থার গলদের কারনে তরুণ প্রজন্ম ইতিহাস বিমুখ হয়ে পড়েছে। আর এজন্য শিক্ষার্থীরা দায়ী নয়, দায়ী হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি বিষয় বাধ্যতামূলক পড়তে হবে। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস ও বাংলা ভাষা। এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতহাস ও ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা জানতে পারবে। অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ইতিহাস সব বিষয়ে ধারণ করতে সক্ষম। ইতিহাসের কোন সীমানা নেই। গণমানুষকে ইতিহাস সচেতন করতে হলে মাতৃভাষা ইতিহাস চর্চা করতে হবে। মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চায় কোন দেশ পিচিয়ে যায় না। বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা ধারণ করতে হলে ইতিহাস জানতে হবে। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি জাতি জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনে।
×