ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চর্যাপদ’র ভূমি;###;পলিয়ার ওয়াহিদ

তরুণ লেখকদের সাহিত্য ভাবনা ॥ কবিতা এক অভিজ্ঞতার বাঁশি

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৮ এপ্রিল ২০১৭

তরুণ লেখকদের সাহিত্য ভাবনা ॥ কবিতা এক অভিজ্ঞতার বাঁশি

মহুয়া কবিতা এক অভিজ্ঞতার বাঁশি। যে বাঁশিতে ঢুকাতে হয় দীর্ঘশ্বাসের সুর! সেই সুর কাগুজিলেবুর ঘ্রাণের মতো কারও কারও হৃদয়ে আছড়ে পড়ে। বেদনার মতো ফাঁসিয়ে দেয় কাউকে না কাউকে। যখন সেই বাঁশির সুর ফাঁসির মতো লটকে যায় প্রাণে প্রাণে তখন তাকে কবিতা নামে ডাকে দুষ্টুকবিরদল! আর আমি তার নাম রাখি (ভাবনা)!। যার পিছু পিছু ছুটে ছুটে নিজেকে হারাই। ক্ষত হয় জীবনের ফেনিল সময়। তবু কী কবিতা আমাকে ধরা দেয়? এতসব জানি না আমি! শুধু জানি কবিতা অপর। সে পর হলে কেউ আর থাকে না আপন! ** মহুয়ার মুখ আমার প্রেমিকার মুখ পাকা ধান ক্ষেতের মতো সচ্ছল যাকে পাঠের পর ধানের শীষের ন্যায় নুয়ে পড়ে মন মন খারাপের মৌসুমে তার চোখ ও মুখের বীজতলায় জমাট বাধে সদ্য লাঙলে চষা নরম থলথলে কাদা যেন এখনি চুমু রোপণের সমূহ ছলছল সম্ভাবনার হাতছানি তালপাখার বাতাসের মতো ঠা-া তার বুক! যেখানে সকল দীর্ঘশ্বাস কলমিফুলের মতো নীলাভ কোমল তার শারীরিক ঘ্রাণে শিশুর মতো অবুঝ হয়ে পড়ি! যেন এখনি আমার সব ক্লান্তি তার সবুজ ব্লাউজে মুখথুবড়ে পড়বে! আর সে অভিমানে সোনালু লতার মতো দোল খায় রক্তজবা ফুলের মতো তার নাভিতে ঝড়ে পড়ে স্বাদের ঠোঁট তবু তার বটের পাতার মতো গাঢ় কোমল গায়ে ল্যাপ্টানো তুলতুলে মন যার শারীরিক ছায়ার আবডালে লুকানো থাকে অন্য রহস্যের ইশারা যার ঠোঁট গমের রুটির মতো সুস্বাদু এবং তার কপালে বসানো মধুসঙ্গী পুরুষ মৌমাছিকে ক্ষমা করার মতো উদারতর রানির টিকলে তার চোখের ভ্রু যেন পানসি নৌকা! এখনি চড়তে না পারলে শিওর স্বর্গ হারানোর মতো আফসোস! সে আমার পৌরুষ ডালে ফুটে আছে ভুঁইচাপা ফুলের মতো যেন পৃথিবীর অন্য কোনো ভূমির চেয়ে স্বমহিমায় উজ্জ্বল! ** মহুয়ার মওসুম হেমন্ত ঋতুর মতো আমার উপর প্রভাব সৃষ্টি করছো কুয়াশামথিত সকালে শিশিরের মতো ঝরে পড়ছি শীত না এলেও জড়তা গেড়ে বসেছে গায়ে কিন্তু আমার জন্ম তো কোনো শেষ বিকেলের ফাল্গুনে তবে কেন দিন দিন বিষণœতার মুখে নিজের ছবি দেখি? বসন্তে আমাদের দেখা হবার কথা ছিলো নাকি? বর্ষায় কদম ফুটলো, থইথই হলো মনের সব স্বাদ কিন্তু শরীরের ওম পাওয়া হলো না আজও! নিজেকে ব্যস্ত পিঁপিলিকার মাঝে আবিষ্কার করি যেন মানুষের খাদ্য ছাড়া দ্বিতীয় কোনো চাহিদা থাকতে নেই! কই কতোদিন হলো পেলাম না কাচা মাংসের ঘ্রাণ! অথচ বিশেষ কোনো তাড়া নেই আমার কোথায় যাবো? জীবন কি কখনো ফেরে? আমার জন্য পথের রেখার অপেক্ষা করেছিল কেউ কেউ তবু নিজের ছায়ার দীর্ঘ আমি’র উপর ক্রমাগত ছুটছি কই আমি তো কখনো কারো কাছে ফিরিনি কাউকে বলিনি ভালোবাসি কিন্তু তোমাকে কেন ভুলতে পারি না মহুয়া? ** সারাবান তাহুরা মেয়েটার কনিষ্ঠ ঠোঁটে লাল পিঁপড়ের মতো ছুটছে রহস্য! তার ঠোঁট যেন ময়রার দোকানে সাজানো শোকেস! আমি খরিদ করছি তার চোখে লেপ্টানো হাসি লাল ওড়নায় মোড়ানো তার সমস্ত অঞ্চল কব্জিসহ হাতের আঙুলে আদরের আবহাওয়া তার দৃষ্টি দূরগামী পাখির ঠোঁটের মতো ধারালো! সে শিকার করছে আমার ভবিষৎ! শারাবান তাহুরা পান করতে করতে দেখি- আমি একটা আদিম যুবক- বেহেস্তের বারান্দায় হাঁটছি। অথচ তোমার গাছেই রয়ে গেছে আঙুর আর বেদানা আর তোমার সেই জমজ আপেলের গল্পে ঢুকে পড়েছে সৌখিন কোনো লাল পিঁপড়ে! ** মহুয়া- এক জীবন একটা অবাস্তব খেলনা মহুয়া আমাকে সেই খেলা শেখায় এবং সে বলে- জীবনকে খেলতে হয় স্বপ্নে! অবহেলায়, ফেলনার মতো! অথচ কী সিরিয়াস ভাবেই না কবিতা আমাকে গোল করে গেল! হাততালিতে মুখর অপেক্ষা কিন্তু আমি জীবনকে পাহারা দেই মহুয়ার তাবৎ ডালপালায়! ** চালতাফুল হতে চাইলাম- চালতা ফুলের মতো আড়ম্বরহীন- অতি সাধারণ! কাফন সাদা রঙের মতো মৌলিক! মায়ের স্নেহের মতো খাঁটি অথচ দ্যাখেন- সময় রপ্তানি করছে রঙিন বোতল! আমি আমদানি করি- দাগকাটা টালিখাতা এখন তাদের কাস্টমার পাবেন কোথায়? ** মাটিয়ালি গান গমবনে মানুষ হলাম- আমি বেথোশাক আকাশ উত্তীর্ণ হয়ে বুঝি ভুলে গেছি- মাটিবর্তী মানুষের গান! বেলেশাকের কথায় ধরো- নিজেকে বিছিয়েছে সে- মাটিরই বিছানায় ভালোবাসি থানকুনিপাতা তবুও বন্ধুরা হলো- শিয়ালকাটা! আমি হাটি- জাজিমের মতো রক্তিম আকাশ আবার মুখস্থ করি সান্ধ্যকালীন গাভীন গমক্ষেত!
×