স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক সুপ্রীমকোর্র্ট প্রাঙ্গণে রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে স্থাপিত ভাস্কর্যটি সরানোর বিষয়ে বলেছেন, সুপ্রীমকোর্টের অভিভাবক কিন্তু রাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি। এখানে যখন ভাস্কর্য বসানো হয় তখন সেটা আমাদের জানানো হয়নি; সরানো হবে কিনা, সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতিই নেবেন। এটা সরানো সুপ্রীমকোর্টের ব্যাপার। ভাস্কর্য সরানো নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষাপটে সেটা ঘিরে যেন কোন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি না হয়। যখন এই ভাস্কর্যের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে কিছু বিপরীত যুক্তি আসছে তখন আমাদের দেখতে হবে, সুপ্রীমকোর্ট অত্যন্ত পবিত্র স্থান। এখানে যেন কোন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেটা সকলের বিবেচনা করা উচিত।
আইনমন্ত্রী বলেন, শ্রমজীবী মানুষের আইনী সেবা প্রাপ্তি সহজ করার লক্ষ্যে ঢাকায় বিদ্যমান তিনটি শ্রম আদালতের মধ্যে দুটি শ্রমঘন এলাকা; টঙ্গী ও নারয়ণগঞ্জে স্থানাস্তর করা হবে। এছাড়া, সিলেট ও রংপুরে দুটি নতুন শ্রম আদালত স্থাপন করা হবে। মঙ্গলবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (জেএটিআই) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও জেএটিআইর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল লেবার স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড লেবার লেজিসলেশন ফর জাজেস এ্যান্ড জুডিশিয়াল অফিসার্স’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। ৩০ বিচারক ও বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তার অংশগ্রহণে এ প্রশিক্ষণ চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত।
রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এই অনুষ্ঠান শেষে যাবজ্জীবন কারাদ-কে আমৃত্য কারাদ- বিবেচনা করে সুপ্রীমকোর্টের রায়ের বিষয়ে মন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চান সাংবাদিকরা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় যেটা বেরিয়েছে সেটা যদি আমি না পড়ে একটা কথা বলি, তাহলে সেটা অন্য রকম হয়ে যাবে। পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপিটা যদি আজকে পাই, সেটা পড়ে কয়েকদিনের মধ্যে সে বিষয়ে কথা বলব। জেএটিআইর মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক, ঢাকায় নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোঃ জহিরুল হক এবং বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিবাস বি রেড্ডি বক্তৃতা রাখেন। এরপর মন্ত্রী ঢাকার আইডিইবি ভবনে নতুন ভ্যাট আইন (মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২) বাস্তবায়ন বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এ সভায় আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন মূলত আবগারি শুল্ক, টার্নওভার কর ও বিক্রয় করের পরিবর্তে প্রবর্তিত একটি পরোক্ষ কর ব্যবস্থা।
বিভিন্ন সময়ে এতে বিচ্যুতি হয়েছে, সংযোজন হয়েছে। ফলে আইনটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে এখন একটি জটিল রূপ পরিগ্রহ করেছে। এ আইনের কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে কর উৎপাদনশীলতা কমে গেছে এবং আইনটি আশানুরূপ রাজস্ব আহরণে ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই জাতীয় প্রয়োজনীয়তার নিরিখেই নতুন ভ্যাট আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনটি বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এখানে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তিনি বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। বিশ্বের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তাই যে আধুনিক ভ্যাট আইন করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।