ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গড় আয়ু বেড়ে ৭১ বছর

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৬ এপ্রিল ২০১৭

গড় আয়ু বেড়ে ৭১ বছর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গড় আয়ুতে প্রতিবছর উন্নতি ঘটছে বাংলাদেশের। ২০১৬ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক ৬ বছর। গড় আয়ুর হিসাবটি করা হয়েছে ভগ্নাংশ হিসেবে। অর্থাৎ মাস-দিনের হিসাবে একজন মানুষ ৭১ বছর ৭ মাস ৬ দিন বাঁচেন। এর আগের বছরের হিসাবে গড় আয়ু ছিল ৭০ দশমিক ৯ বছর বা ৭০ বছর ১০ মাস ২৪ দিন। এক বছরের ব্যবধানে গড় আয়ু বেড়েছে প্রায় ৮ মাস। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ২০১৬ সালের মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকসের ফলাফলে এ চিত্র পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি জানান, দেশে এখনও পুরুষের চেয়ে নারীরা গড়ে বেশি দিন বাঁচেন। ২০১৬ সালে নারীদের গড় আয়ু দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৯ বছর (৭২ বছর ১০ মাস ২৪ দিন) এবং পুরুষের গড় আয়ু হয়েছে ৭০ দশমিক ৩ বছর (৭০ বছর ৩ মাস ১৮ দিন)। তবে পুরুষ ও নারী উভয়েরই গড় আয়ু বেড়েছে। ২০১৫ সালে পুরুষের গড় আয়ু ছিল ৬৯ দশমিক ৪ বছর (৬৯ বছর ৪ মাস ২৪ দিন) এবং নারীদের ছিল ৭২ বছর। মন্ত্রী জানান, বিশ্বে বর্তমানে মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছর ৪ মাস। সে তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেশি। এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক। উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু গত ৪৫ বছরে বেড়েছে ২৪ বছর। অন্যদিকে একই সময়ে বিশ্বে গড় আয়ু বেড়েছে ১২ বছর। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ। ১৯৭১ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর। আর ২০১৬ সালে গড় আয়ু ৭১ বছর ৭ মাস। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুমৃত্যু হ্রাস এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের দেরিতে মৃত্যু গড় আয়ু বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নতিতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ গড় আয়ু বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নতিতে, মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা ও বয়স্কদের সুরক্ষাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এর কারণে ধারবাহিকভাবে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। বাংলাদেশে গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদ হাসান বলেন, স্বাধীনতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে, অর্থাৎ ২০০ বছরের বেশি সময় বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়েনি। সেটা স্বাধীনতার পর বেড়েছে। স্বাধীনতার পর স্বাস্থ্য খাতকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এই খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়নভিত্তিক স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা ও সদর হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালের এক অনবদ্য স্বাস্থ্য নেটওয়ার্ক বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে।
×