ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের ১২ দফা প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান

প্রকাশিত: ০২:০৭, ২৫ এপ্রিল ২০১৭

সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের ১২ দফা প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গণপরিবহনে চাঁদা আদায়কারীদের সনাক্ত করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা, বিআরটিএ’র সীমাহীন ঘুষ, দুর্ণীতি বন্ধ, মেয়াদউত্তীর্ণ ফিটনেস বিহীন সকল প্রকার যানবাহন নিষিদ্ধ ঘোষনা সহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ সংগঠনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব দাবি দাওয়া তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইনসুর আলী। নগর পরিবহন নীতিমালার রুপরেখা আত্বপ্রকাশ, শ্রম আইন পরিপন্থি অবৈধ চাঁদা আদায়কারীদের গ্রেফতার ও মালিক কর্তৃক শ্রমিকদের নিয়োগ পত্র প্রদানের দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ খোকন, মোঃ আমির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আর.এ. জামান, প্রচার সম্পাদক মোঃ সুমন শেখ। লেখিত বক্তব্যে মোঃ ইনসুর আলী বলেন, পরিবহন শিল্প অসংখ্য সমস্যায় জর্জরিত। সাধারণ পরিবহন মালিক/শ্রমিকরা এক শ্রেণীর চক্রের হাতে জিম্মি। ঢাকার চারটি টার্মিনাল থেকে দৈনিক প্রায় ৫০/৬০ লাখ টাকা শ্রম আইন পরিপন্থি চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে পরিবহন ধর্মঘট আহবান করে সকল শ্রেনী পেশার মানুষকে জন দুর্ভোগে ফেলে সরকারকে বাধ্য করানো হয় তাদের অবৈধ চাঁদাবাজি বহাল রাখতে। বিআরটিএ এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে বাসের সংখ্যা ৪০ হাজার ৬১৬টি। মিনিবাসের সংখ্যা ২৭ হাজার ৪৫৭টি, ট্রাকের সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৩২৩টি। সব ধরনের পরিবহনের সংখ্যা ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৬টি। ঢাকা সহ বাংলাদেশের পরিবহনের বেসিক ইউনিয়নের সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। এই বেসিক ইউনিয়নগুলো বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অর্ন্তঃভূক্ত। প্রত্যেকটি বেসিক ইউনিয়নের গঠনতন্ত্র মোতাবেক শ্রম আইন অনুযায়ী সদস্যরা ইউনিয়নের চাঁদা প্রদান করে থাকে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রতিদিন ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৬ টি পরিবহন থেকে ৭০ টাকা করে আদায় করলে (প্রায়) বিশ কোটি চৌষট্টি লাখ তেইশ হাজার চারশত বিশ তোলা হচ্ছে। পরিবহন সংশ্লিষ্ট এক শ্রেণীর চাঁদাবাজরা অবৈধ ভাবে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কিন্তু শ্রমিকদের কল্যাণে এই টাকা ব্যয় হয় না। অথচ দেশের সকল জেলা, উপজেলার বাস ও ট্রাক টার্মিনাল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন নিয়ন্ত্রন করে আসছে। অথচ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন কর্র্তৃক চাঁদা আদায়ের দোষ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের উপর চাপানোর অপচেষ্টা করেছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ ঢাকা সহ বাংলাদেশের কোথাও কোন চাঁদা আদায় করে না। সংগঠনের পক্ষ থেকে উত্থাপিত ১২ দফার মধ্যে রয়েছে, পরিবহন শ্রমিকদের মালিক কর্তৃক অবিলম্বে নিয়োগপত্র প্রদান, পরিবহন শ্রমিক ও কর্মচারীদের মালিক কর্তৃক মাসিক বেতন ও খোরাকী বৃদ্ধি এবং ২ ঈদ ও পূজায় উৎসব বোনাস প্রদান, গণপরিবহনে শ্রম আইন অবৈধ চাঁদা আদায়কারীদের সনাক্ত করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা, বিআরটিএ’র সীমাহীন ঘুষ, দুর্ণীতি বন্ধ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ফিটনেস বিহীন সকল প্রকার যানবাহন নিষিদ্ধ ঘোষনা, পাটুরিয়া-দৌলদিয়া, মাওয়া-কাওড়াকান্দি, আরিচা-গোয়ালন্দ সহ বিভিন্ন ফেরিঘাটে সিরিয়ালের নামে অবৈধ চাঁদা আদায় বন্ধ ও ফেরীঘাটে যানজট নিরসনে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, চালক লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে রিটেষ্ট প্রথা বাতিল করে সহজীকরণ ও প্রতিটি জেলায় বি.আর.টি.এ এবং ট্রাফিক বিভাগের নেতৃত্বে চালকদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা, সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের জন্য শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বিল অবিলম্বে বাস্তবায়ন, নাইট কোচ যাত্রীদের ডাকাতির হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রতিটি পরিবহনে মালিক কর্তৃক ২ জন করে আনসার-পুলিশ নিয়োগ, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহত শ্রমিক ও নিহত শ্রমিকদের পরিবার পরিজনকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, সকলে বসিক ইউনিয়নের পরিচয় পত্রধারী পরিবহন শ্রমিকদের জেলা ভিত্তিক রেশোনিং ব্যবস্থা চালু করা এবং ভূমিহীন পরিবহন শ্রমিকদের সরকারী খাস জমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, ঢাকা মহনগরীতে বসবাস কারী বৈধ থ্রি-হুইলার লাইসেন্স ধারী সিএনজি অটোরিকশা চালকদের মধ্যে ৫,০০০ সিএনজি চলিত অটোরিকশার রেজিষ্ট্রেশন বিলি বন্টন কার্যক্রম দ্রত বাস্তবায়ন, সড়ক মহাসড়কের পাশের খালি জায়গায় ট্রাক টার্মিনাল ও চালকদের জন্য বিশ্রামাগার স্থাপন।
×