ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভয়াবহ সাইবার হামলার ঝুঁকিতে দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৫ এপ্রিল ২০১৭

ভয়াবহ সাইবার হামলার ঝুঁকিতে দেশ

ওয়াজেদ হীরা ॥ বাংলাদেশে দ্রুত বাড়ছে প্রযুক্তির বাজার। বর্তমানে এই বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে দুই হাজার কোটি টাকার। আর এই বাজারের পুরোটাই পাইরেটেড সফওয়্যারের দখলে। এই লাইসেন্সবিহীন (পাইরেটেড) এই সফটওয়্যারের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে দেশের পুরো তথ্যপ্রযুক্তি নেটওয়ার্ক। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধমান প্রযুক্তি নেটওয়ার্কে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে পাইরেটেড সফটওয়্যারের ব্যবহার। সেই সঙ্গে বাড়ছে সাইবার হামলার ঝুঁকি। ফলে অভ্যন্তরীণ যে কোন স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁসসহ বড় ধরনের সাইবার হামলার শিকার হতে পারে দেশ। ইতোপূর্বে সাইবার হামলার শিকার হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। ভবিষ্যতে এর চেয়ে বড় বিপদ হতে পারে বলে মনে করছেন প্রযুক্তিবিদরা। তারা বলছেন, ভবিষ্যতের যে কোন সাইবার হামলা মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগ আর জনগণের সচেতনতা খুবই প্রয়োজন। জানা গেছে, দেশে আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতে সাইবার হামলার ঝুঁঁকি সবচেয়ে বেশি। এর বাইরে মোবাইলভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে অসচেতনতায় বিপদের অসংখ্য ফাঁদের মধ্য দিয়ে চলছে দেশের অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রম। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিগত মজবুত নিরাপত্তা অবকাঠামো কিংবা ‘আইটি সিকিউরিটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ গড়ে তোলার মাধ্যমে ব্যাপকভিত্তিক ‘ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা’ কর্মসূচী নেয়া না হলে বড় ধরনের সাইবার হামলা হতেই পারে। আর নানা পর্যায়ে বিভিন্ন সেক্টরে পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার বিশেষজ্ঞদের সাইবার হামলার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে কয়েকগুণ বেশি। তথ্য মতে, দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বাজার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার। এরমধ্যে ৮৬ শতাংশই লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যারের দখলে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এ ধরনের সফটওয়্যারের ব্যবহার বেশি। সফটওয়্যার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি বৈশ্বিক সংগঠন বিজনেস সফটওয়্যার এ্যালায়েন্সে (বিএসএ) সর্বশেষ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে যত সফটওয়্যার ইনস্টল করা হয়েছে কম্পিউটারগুলোতে তার শতকরা ছিয়াশি ভাগই ছিল পাইরেটেড। শতকরা এই হিসাব দিয়ে বাংলাদেশ অবশ্য সফটওয়্যার পাইরেসির ক্ষেত্রে পৃথিবীর মধ্যে চতুর্থ। শতকরা ৯০ ভাগ পাইরেটের সফটওয়্যার ব্যবহার করে যৌথভাবে প্রথম স্থানটি দখলে রেখেছে লিবিয়া ও জিম্বাবুইয়ে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে পাইরেটেড সফটওয়্যারের ব্যবহারের হার ছিল ৯১ শতাংশ। ’১১ সালে কমে হয় ৯০ শতাংশ। শতকরার হারে বছর বছর পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের হার কমেছে ঠিকই, কিন্তু ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে পরিমাণ বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করে জানিয়েছেন, দেশে যে হারে পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার বাড়ছে তার ফলটা হতে পারে ভয়াবহ। তার উদাহারণ হিসেবে কোন কোন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার হামলায় হ্যাকারদের কথা উল্লেখ করেন। সফটওয়্যার এবং পাইরেসি সফটওয়্যার বলতে জানা গেছে, একগুচ্ছ প্রোগ্রাম, কর্মপদ্ধতি ও ব্যবহারবিধিকে বোঝায়, যার সাহায্যে কোন নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করা যায় তাকে সফটওয়্যার বলে। আর সফটওয়্যার পাইরেসি বলতে সহজভাবে বোঝায় অবৈধভাবে সফটওয়্যার বা প্রোগ্রামের ব্যবহার, কপি (পুনরুৎপাদন) করা বা ডিস্ট্রিবিউট করা। বর্তমান সময়ে মোবাইল লেনদেন ও আর্থিক লেনদেনে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে পাইরেটেড সফটওয়্যার। শুধু লেনদেনই নয়, যে কোন ব্যক্তিগত তথ্যও এখন অনিরাপদ। এত কিছুর পরও এর ব্যবহার না কমে দিন দিন বেড়েই চলছে। বিষয়টা এমন অনেক ব্যবহারকারী নিজেও জানে না পাইরেটেড সফটওয়্যার কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। স্বল্প টাকায় যত্রতত্র পাওয়ার সুবিধার কারণে এই পাইরেটেড সফটওয়্যারে আকৃষ্ট সবাই। কেউ এর ভয়াবহতা জেনে আকৃষ্ট হচ্ছেন, কেউ আবার না জেনেই। সফটওয়্যার আমদানিকারক একাধিক প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাইরেটেড সফটওয়্যার যে কোন সময় মারাত্মক ক্ষতিসাধন করতে পারে। এতে এমন ক্ষতিও হতে পারে, যা থেকে সহজে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় থাকে না। লাইসেন্স করা সফটওয়্যারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি দিয়ে এমনসব কাজ করা যায়, যা পাইরেটেড কপি দিয়ে করা সম্ভব নয়। কম্পিউটার জগতের বড় মার্কেট আগারগাঁও আইডিবি ভবন ও এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যানে ঘুরে দেখা গেছেÑকোন ধরনের লুকোচুরি নেই পাইরেটেড সফটওয়্যার বিক্রিতে। বিষয়টি দেখারও যেন কেউ নেই। আর তাই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দেদার পাইরেটেড বিক্রি ও ব্যবহার হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামী কো¤পানির ব্যয়বহুল সব সফটওয়্যার। তবে পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ব্যবহারকারীদের। এছাড়া প্রয়োজনীয় আপডেটের সুবিধা না পাওয়ায় সাইবার হামলার ঝুঁকিও বাড়ছে। মাল্টিপ্ল্যানে একাধিক দোকানে দেখা গেল থরে থরে সাজানো সিডি ও ডিভিডি। কোনটি ভিডিও গেম, এ্যান্টি-ভাইরাস বা কোনটিতে সফটওয়্যার। একাধিক দোকানে দেখা গেছে অধিকাংশ দোকানে পাইরেটেড কপি বিক্রি হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করে দোকানদাররা স্বীকারও করেছেন পাইরেটেড কপি বিক্রির কথা। পাইরেটেড প্রতিটি সিডি বা ডিভিডির কপি ২৫-৩০ টাকায় কিনে ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করেন ৫০ থেকে ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশি দামে। আইটি সেক্টরের বিভিন্ন কাজ করেন কে এম এইচ শহীদুল হক। আইটেক আনলিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানটির সিইও তিনি। বিভিন্ন সফটওয়্যারের মূল্য প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, সরকার অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারগুলোর মূল্য কমাতে মাইক্রোসফট, গুগল, লিনিক্স প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে মূল্য ডিসকাউন্ট করাতে পারে। সেক্ষেত্রে মূল্য কমে এলে অরিজিনাল সফটওয়্যারের প্রতি ব্যবহারকারীদের আগ্রহ বাড়বে। একই সঙ্গে তিনি যোগ করেন যে সফটওয়্যারগুলো বাংলাদেশে হচ্ছে তার মূল্যায়ন হওয়া উচিত। কারণ, বাংলাদেশেও ভালমানের সফটওয়্যার হচ্ছে। প্রযুক্তিবিদরা জানিয়েছেন, সরকারের একাধিক প্রতিষ্ঠানে পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার হচ্ছে। যার ফলে বিভিন্ন সময় হ্যাকাররা হ্যাক করছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য বাইরের দেশে প্রকাশ হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। দেশে সঠিক সফটওয়্যার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হয় টেলিকম কোম্পানির ক্ষেত্রে। আর ব্যাংক ও বীমা খাতে ব্যবহার খুবই কম হওয়ায় আর্থিক ঝুঁকিসহ অন্যান্য ঝুঁকি বাড়ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন ব্যাংকের শক্ত আইটি বিভাগ আছে ঠিকই তবে পরিচালনা পর্ষদ চায় না বলে অধিকাংশ ব্যাংকে ডিজিটাল সিকিউরিটি পর্যাপ্ত নয়। প্রতি দুই বছর পর পর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনে প্রত্যেক দেশের মন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করতে হয়। সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১৫ সালে যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও অংশ নেয়। সর্বশেষ অংশ নেয়া দেশের সংখ্যা ১৬৪। যেখানে বলা হয়েছে, ইনফর্মেশন টেকনোলজি প্রোডাক্টের ওপর কোন কাস্টমস ডিউটি হবে না। তবে নিজ নিজ দেশের ভ্যাট সংযুক্তি করা যেতে পারে। কিন্তু এই বিষয়টি মানা হচ্ছে না বাংলাদেশে। একাধিক সফটওয়্যার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, সারা পৃথিবীর কোথাও অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারের ওপর শুল্ক নেই। বাংলাদেশে সে নিয়ম নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সফটওয়্যাগুলো অন্যান্য মিডিয়া ক্যাটাগরিতে এইচএস কোড হিসেবে ৮৫২৩.৮০.০০ ব্যবহার করা হয় যার শুল্ক ধরা হয়েছে ৫৮.৬৯ শতাংশ। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রথম সচিব (শুল্ক নীতি) ফখরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, সফটওয়্যার আমদানির ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা আছে তা এ বছর বাজেটে সমন্বয় করা হবে। তিনি যোগ করেন একই জিনিসের বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহারের কারণে ভিন্ন ভিন্ন রেট হতে পারে না। বিষয়টি আমরা দেখেছি আর বিভিন্ন মহলের দাবিও আছে। আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে। বাংলাদেশের প্রথম প্রজন্মের তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার। বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফর্মেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি। প্রযুক্তিগত অনেক বিষয় নিয়ে জনকণ্ঠের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করেন প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, পাইরেটেড এবং ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করা বাংলাদেশের মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবপেজেও ফ্রি প্লাগ ইন ব্যবহার করা হয়। যেগুলো সাইবার দুনিয়ায় নিরাপত্তার জন্য খুবই বিপজ্জনক। পাইরেটেড এবং ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার মানেই বিপদ ডেকে নেয়া ছাড়া কিছু নয়। জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, আইটি সিকিউরিটি নিশ্চিত না হলে সাইবার সিকিউরিটিও নিশ্চিত করা যাবে না। সাইবার সিকিউরিটি আইটি সিকিউরিটির একটি অংশমাত্র। দেশে আইটি সিকিউরিটির বিষয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় সাইবার সিকিউরিটির ঝুঁকি বাড়ছে। বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকও পাইরেটেড সফটওয়্যারের ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলেছেন। তারা মনে করছেন, দেশের ওপর এটা একটা ভয়াল থাবা। প্রযুক্তিগত নানা বিষয়ে জনকণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. অধ্যাপক সোহেল রহমান। তিনি জানান, এটা সোজা কথায় চুরি। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা তত ভাল নয়। তৃতীয় বিশ্বে এটা যে হচ্ছে, তা বড় বড় প্রতিষ্ঠান সবাই জানে। যেমন মাইক্রোসফট, আমরা অনেকেই পাইরেটেড ব্যবহার করছি। তারা (মাইক্রোসফট) যে জানে না তা কিন্তু নয়। হয়ত এখন তারা পর্যবেক্ষণ করছে। এক সময় নাও করতে পারে। তখন আমরা বড় ধরনের বিপদে পড়ে যাব। বিশেষ করে সরকারী যে প্রতিষ্ঠান আছে তারা যদি চোরাই সফটওয়্যারের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে আর কোন এক সময় যদি মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠান চাপ প্রয়োগ করে তাহলে অনেক সমস্যা হবে। মাইক্রোসফটের কথা এজন্য বলছি, লেখার ওয়ার্ড, এক্সেলে, পাওয়ার পয়েন্ট এবং অধিকাংশ উইন্ডোজ মাইক্রোসফটের। আর এর প্রতি বেশি নির্ভরশীল আমরা। তবে যেহেতু মাইক্রোসফট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাই তারাও এক সময় আরও কঠোর হয়ে যাবে, সরকারের সঙ্গে কথা বলবে। কেননা বাংলাদেশের বাজার বাড়ছে, আমরা মধ্য আয়ের দেশে প্রবেশ করছি। এই বিষয়ে সরকারের আরও কঠোর নজরদারি আর জনগণের সচেতনতার কথা বলেন বুয়েটের এই অধ্যাপক। পাইরেটেড সফটওয়্যার নিয়ে কিংবা তা রুখতে মাইক্রোসফট কি ভাবছে সে বিষয় জানতে জনকণ্ঠের পক্ষ থেকে যোগাযোগ হয়েছিল মাইক্রোসফটের কান্ট্রি ম্যানেজার সোনিয়া কবির বশিরের সঙ্গে। অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বললেও এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। এদিকে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মালিহা নার্গিস জনকণ্ঠকে জানান, প্রযুক্তি উন্নয়নে সরকার সচেষ্ট। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান আছে, কিছু শেষ হয়েছে। সাইবার হামলা বা পাইরেটেড সফটওয়্যারের বিষয়ে অনেকটা কৌশলী উত্তর দেন তিনি। দেশে নিরাপদ তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে এবং সাইবার অপরাধ দূরীকরণে কাজ করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন সংস্থা কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটিজ (সিসিএ)। এ সংস্থার নিয়ন্ত্রক আবুল মানসুর মোহাম্মদ র্সাফ উদ্দিন মনে করেন, সাইবার সিকিউরিটির ঝুঁকি মোকাবেলায় বর্তমানে সক্ষমতা খুব বেশি নেই। জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ অনেক বিশাল। বর্তমানে সক্ষমতা খুব বেশি নেই বলা যায়। আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকে যে হ্যাকিং হলো তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আমাদের উচিত ছিল। কিন্তু সে পর্যায়ে আমাদের লোকজন নেই বলা যায়। তবে আমরা সক্ষমতা অর্জন করছি না তাও কিন্তু নয়, আমরা এগুচ্ছি। আমরা ফরেনসিক ল্যাব করছি। যার ফলে জানা যাবে কোথা থেকে কি হলো। আইনগত সাপোর্টের কাজও হচ্ছে। সাইবার সিকিউরিটির যত কাজ সব তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আলোকেই হয় বলেও জানান তিনি। তবে পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার এক সময় উঠে যাবে। তিনি বলেন পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার সাইবার সিকিউরিটির জন্য তত বেশি সমস্যা নয়; সমস্যা একেবারে নেই তাও বলব না। এর জন্য কিছু কিছু সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান সিসিএর নিয়ন্ত্রক। এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী জনকণ্ঠকে জানান, আমরা সাইবার সিকিউরিটিটা শক্ত করতে কাজ করছি। আমরা যেটা করছি, আমাদের ডাটা সেন্টার আছে, সরকারের যত ডাটা আছে সবই ওখানে সংরক্ষণ করা। আমরা সেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। আমরা একটা সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি করছি যা এখন পারমানেন্ট স্ট্রাকচারে রূপ দিচ্ছি। আমরা এককভাবে এটা পারব না। একটা রিজিওনাল সহযোগিতা দরকার। তাই ভারতের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর করেছি। আমরা সাইবার সিকিউরিটি দেখি, ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি দিচ্ছি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন সমস্যা ছিল এবং সমস্যা থাকবেই তার থেকে বেরিয়ে আসার পথও তৈরি রাখতে হবে।
×