ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর বারের সামনে যুবদল নেতা পিটিয়ে হত্যা ॥ আটক ৪৪

প্রকাশিত: ০২:৪৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

রাজধানীর বারের সামনে যুবদল নেতা পিটিয়ে হত্যা ॥ আটক ৪৪

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর শাহবাগের পরীবাগে সাকুরা রেস্তোরাঁ ও বারের সামনে এক যুবদলে নেতা পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনা পুলিশ বারের ব্যবস্থাপকসহ ৪৪জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। ঘটনার পর বারটি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। নিহতের নাম মোঃ জনি (৩০)। তিনি ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। নিহতের বাবার নাম আব্দুল কুদ্দুস। গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার দক্ষিণ রাজনগর গ্রামে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় সপরিবারে থাকতেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার রাত ১২টার দিকে জনিকে মারতে মারতে সাকুরা বার থেকে নিচে নামিয়ে দেয়া হয়। এরপর সেখানে জনি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রাত ১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার জানান, রবিবার গভীররাতে দিকে সাকুরা বার থেকে দৌড়ে এসে একদল লোক যুবক জনিকে মারতে মারতে নিচে নামিয়ে আনে। সেখানে ওই যুবককে রক্তাক্ত পড়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করেন। ডিসি জানান, এ ঘটনায় সাকুরা বারের বারের ব্যবস্থাপক ও কর্মচারীসহ ৪৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের শাহবাগ থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে, বারের ভেতরেই কোন একটি ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশ জানায়, ২০১২ সালে খুন হওয়া ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ও ফুল ব্যবসায়ী সেলিম শাহী হত্যা মামলার আসামি ছিলেন জনি। এদিকে ঘটনার পর বারটি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, নিহত জনির মিম (১৫) ও আয়েশা মনি (৭) নামে দুই মেয়ে আছে। শাহবাগ থানার পাশে ফুলের ব্যবসা করত তিনি। ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং ওই ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক প্রাথী ছিল জনি। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিল জনি। এদিকে মার্কেটের মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, রবিবার গভীররাতে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটার পরই সাকুরা বারের ম্যানেজার মোস্তফা কামাল ও তার ছেলে ড. আশিফকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে বারের ৩৫জন কর্মচারীদেরকে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় বারটি মূল গেট তালা তালা ঝুলিয়ে দেয়। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বুধবার রাতে জনির লাশ অজ্ঞাত হিসেরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রাখা হয়। পরে সংবাদ পেয়ে সোমবার বিকেলে ঢামেক মর্গে গিয়ে জনির লাশ শনাক্ত করেন তাঁর বড় ভাই মোঃ নয়ন। নিহতের ভাই নয়ন জানান, বিকেলে মর্গে গিয়ে ভাইয়ের পরিচয় সনাক্ত করি। তিনি জানান, জনি ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এবার ওই ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক প্রাথী ছিল সে। শাহবাগের তার ফুলের ব্যবসা রয়েছে। পূর্ব শশ্রুতার জের ধরে জনিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি শাহবাগ থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করবেন। রাত ৭টার দিকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। এমনকি পুলিশ জনির লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী না করায় ময়নাতদন্ত করা হয়নি বলে ঢামেক মর্গ সূত্র থেকে জানা গেছে।
×