ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চলে ১ হাজার ২শ মে.টন মাছের ক্ষতি

প্রকাশিত: ২২:০০, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চলে ১ হাজার ২শ মে.টন মাছের ক্ষতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ অকাল বন্যায় পানি দূষিত হয়ে জেলার চার উপজেলার ৯৮টি হাওড়-বিলে গত এক সপ্তাহে অন্তত ১ হাজার ২শ মেট্রিক টন মাছ মারা গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৩৫ কোটি টাকা। আর ক্ষতির শিকার হয়েছেন অন্তত ১৮ হাজার ৫শ জেলে পরিবার। এ তথ্য জেলা মৎস্য বিভাগের। মাছের পাশাপাশি এসব প্রাকৃতিক জলাধারে বিপুল পরিমাণ ব্যাঙ, কাঁকড়া, কুঁচে, শামুক প্রভৃতি জলজ প্রাণীও মারা গেছে। জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও ভারি বৃষ্টির পানিতে মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপুতা, খালিয়াজুরির কীর্তনখোলা, পাঙ্গাসিয়া, রোয়াইলসহ ৮৯টি, মদনের তলার হাওড় ও গণেশের হাওড়সহ পাঁচটি এবং বারহাট্টার কোদালিয়াসহ তিনটি বিলের সম্পূর্ণ বোরো ফসল তলিয়ে যায়। এর দুই সপ্তাহ পরই ১৬ এপ্রিল থেকে হাওড় ও বিলগুলোতে মাছের মড়ক দেখা দেয়। সবচেয়ে বেশী মারা গেছে বোয়াল, বাইম, গুলশা, টেংরা, তারা বাইম, ইলিশ, ঘনিয়া, আইর, কাকিলা, পুটি প্রভৃতি মাছ। এছাড়া ব্যাঙ, কাঁকড়া, কুঁচে ও শামুকসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীও মারা গেছে। একই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে মারাত্মক দুর্গন্ধ। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ডুবন্ত জমির কাঁচা ধান গাছ পচে এবং রাসায়নিক ও কীটনাশকের মিশ্রণে পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিতে ‘এ্যামোনিয়া’ ও ‘হাইড্রোজেন সালফাইড’ গ্যাসের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অন্যদিকে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেছে। এ কারণে শ্বাসকষ্টে মাছ ও জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। ভারি বৃষ্টি হলে এ সমস্যা কেটে যাবে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরও জানান, হাওড়-বাঁওড়ের এ জেলায় প্রতি বছর ৫৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে বেশীরভাগ মাছ উৎপাদিত হয় হাওড়ের নদী-বিল-ডোবা প্রভৃতি প্রাকৃতিক উৎস থেকে। কিন্তু মাছের মড়কের কারণে এবার উৎপাদন কম হবার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ প্রজনন মৌসুমে মড়ক দেখা দেয়ায় মাছের প্রজনন ব্যহত হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে অক্সিজেনের মাত্রা কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, গত মঙ্গলবার যেখানে দশমিক ২ মাত্রা ছিল সোমবার সেখানে দশমিক চার মাত্রা পাওয়া গেছে। রবিবার থেকে মড়ক কিছুটা কমেছে বলেও জানান তিনি। এদিকে পানি দূষণ রোধের জন্য মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে উপদ্রুত হাওড়গুলোতে ১০ হাজার ৩শ ১০ কেজি চুন এবং ১শ ৩৫ কেজি অক্সি সাপলিমেন্ট প্রয়োগ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান জানান, ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে এসব হাওড়ে শীঘ্র মাছের পোণা অবমুক্ত করা হবে।
×