ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সুনামগঞ্জে শনির পর এবার পাগনা হাওরের বাধঁও ভাঙ্গল

প্রকাশিত: ১৮:২৬, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

সুনামগঞ্জে শনির পর এবার পাগনা হাওরের বাধঁও ভাঙ্গল

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ ॥ টানা ২৬ দিন বাঁধে পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়েছিলেন সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পাগনার হাওরের অর্ধশতাধিক গ্রামের কৃষক। ফসল বাঁধ রক্ষায় সব ধরনের চেষ্টা করেছিলেন তারা। কিন্তু সবচেষ্টা ব্যর্থ করে আজ সোমবার ভোরে হাওরের উরারবন্দ নামক বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় হাওরটি। এটি ছিল জেলার সর্বশেষ সুরক্ষিত হাওর। পাগনার হাওরে জেলার দিরাই উপজেলা ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার অনেক কৃষকদের বোরো জমি রয়েছে। জামালগঞ্জের ফেনারবাঁক ইউনিয়নের পাগনার হাওরের ১০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল রক্ষার শেষ লড়াই করেছিল এলাকার লোকজন। তবে গত এক মাস ধরে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা বাঁধে ছিল না জানিয়েছেন ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু তালুকদার।পাগনার হাওরের উরারবন্দ বাঁধ এলাকা থেকে ফেনারবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের সচিব অজিত কুমার রায় সোমবার ভোর সাড়ে ৫ টায় জানিয়েছেন, শতাধিক শ্রমিক নিয়ে তিনি রোববার রাতেও বাঁধে কাজ করছিলেন। বাঁধ রক্ষায় ৫০ জন পাহাড়াদার নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার ভোরে বৃষ্টির সময় উরারবন্দ বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করে। তিনি গ্রাম পুলিশ, শ্রমিক ও পাহাড়ারদের নিয়ে শেষ চেষ্টা করেছিলেন বাঁধ রক্ষার কিন্তু পানির বেগ বেশী থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এখন হাওরে পানি ঢুকে বোরো ধান তলিয়ে যাচ্ছে। ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু তালুকদার বলেন, হাওরের এত বড় দুর্যোগে পাউবোর কোন অফিসারকে বাঁধে পাওয়া যায় নি। গত রবিবার থেকে বাঁধে কাজ করার জন্য ১৭৪ জন শ্রমিক ও নজরদারী রাখার জন্য ৫০ জন পাহাড়াদার নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সোমবার ভোরে বাঁধ ভেঙ্গে হাওরে পানি ঢুকা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, জেলায় এ বছর ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৬৩৪ কোটি টাকা। ৪২টি হাওরের ফসল রক্ষায় ৬৮ কোটি টাকা ৮০ লাখ টাকার বাঁধের কাজ চলছিল। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের বৃহৎ ৩৭টি হাওরসহ মোট ৪২টি হাওরে ২০ কোটি ৮০ লাখ ব্যয়ে ২২৫টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) ও ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৬টি প্যাকেজে ঠিকাদার দিয়ে বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেছিল। কৃষকদের অভিযোগ পিআইসির কাজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ঠিকাদারের কাজ ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পিআইসির ও ঠিকাদারের কাজ সময়মত শেষ হয়নি।
×