ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে খাবার ও শরীরের যত্ন

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

গরমে খাবার ও শরীরের যত্ন

তরমুজ তরমুজে রয়েছে ৯২ শতাংশ পানি। যা এই গরমে আপনার তৃষ্ণা মেটাতে খুবই উপযোগী একটি খাবার। এটি একটি ভিটামিন ‘এ’- জাতীয় ফল। এতে আরও রযেছে গ্লুকোজ , আয়রন, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ও খনিজ লবণ। যা আপনার শরীরে পানির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এই গরমে আপনাকে রাখবে সুস্থ। পেঁপে গরমে শরীরকে ঠা-া রাখার জন্য পেঁপে অত্যন্ত উপকারী একটা ফল। পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন -‘এ’, ভিটামিন ‘সি’ যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই গরমে পেটের গোলমাল থেকে রেহাই পেতে পেঁপে খান। পেঁপেতে ক্যারোটিন এর পরিমাণ বেশি থাকে আর ক্যালরির পরিমাণ থাকে কম। রয়েছে পটাসিয়ামও। গরমে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁপে খুবই উপকারী একটা ফল। ডাবের পানি এই গরমে ছোট বড় সকলেরই দেহের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ডাবের পানি দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে শরীরকে রাখে ঠা-া। ডাবের পানিতে রযেছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, খনিজ লবন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস। যা আপনার শরীরকে গরমে করে তুলবে সতেজ। ফলের রস এই দাবদাহে শুধু পানি পান করে যেন পিয়াস মেটে না। তাই এ সময় লেবু মেশানো পানি, পুদিনা পাতা দিয়ে লেবুর শরবত, বেলের শরবত, মালটার রস, কমলার রস দেহে এনে দেবে শীতলতা। মালটা এবং কমলায় পানির পরিমাণ ৮৫ শতাংশ থেকে ৮৭ শতাংশ। যা ভিটামিন ‘সি’-এ ভরপুর। গরমে তৃষ্ণা এবং ক্লান্তি মেটাতে কাঁচা আমের শরবতের জুড়িমেলা ভার। যা দেহকে রাখবে ঠা-া, দূর করবে ক্লান্তি। সালাদ গরমে সব সময় ভারি খাবার খেতে মন চায় না। তাই দুপুরে কিংবা বিকেলের খাবারে সালাদ রাখুন। শসা, টমাটো, ক্যাপসিকাম, গাজর, লেটুসপাতাসহ সালাদ তৈরি করতে পারেন। শসাতে রয়েছে ৯৬ শতাংশ পানি। যা হজমে সহায়তা করার পাশাপাশি অপনার ক্ষুধার চাহিদা পূরণ করবে। টমেটোতে ৯৫ শতাংশ পানি ছাড়াও ভিটামিন ও এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাবেন। যা সহজেই অপনার ক্লান্তি দূর করবে। ক্যাপসিকামের ৯২ শতাংশই পানি। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ এবং ভিটামিন ‘এ’। লেটুস পাতায় পানির পরিমাণ ৯৬ শতাংশ। রয়েছে সোডিযাম, পটাসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘বি’, ক্যালসিয়াম অয়রন। আরও রয়েছে ফাইবার ও সেলুলোজ যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। গাজরে পানির পরিমাণ ৮৭ শতাংশ। এতে আরও রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন রকমের ফ্রুটস সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন। দুপুরের খাবারে যা থাকবে দুপুরের খাদ্য তালিকায় করলা, সাজনা, ঢেঁড়শ, লাউ, কাঁচা পেঁপে রাখার চেষ্টা করুন। এ সকল সবজি আপনার শরীরকে রাখবে ঠা-া। শরীরের পুষ্টি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়িয়ে তুলবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। নাস্তায় যা খাবেন গরমে নাস্তা হিসেবে ঠা-া টকদই ও ভেজানো চিড়া খেলে স্বস্তি পাবেন। এ খাবারে একই সঙ্গে আপনি শর্করা ও প্রোটিন দুটোই পেয়ে যাবেন। সঙ্গে যোগ করতে পারেন কলা অথবা অন্যান্য ফল। ফলে তৈরি হবে একটি পরিপূর্ণ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার। এছাড়াও ফ্রুটস্ ক্যাসট্রাড, ফালুদাও খেতে পারেন। খাবারে সতর্কতা গরমে অতিরিক্ত তৈলাক্ত জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যতদূর সম্ভব ভারি খাবার এড়িযে চলুন। আমরা রাস্তার পানি খাব না বিধায় মিনারেল ওয়াটার কিনে খাই। আমরাই আবার তৃষ্ণার চাপে রাস্তার ধারে বানানো ফলের রস কিংবা জলের ছিঁটে দেয়া কাটা ফল খাওয়ার আগে একবার ভেবে দেখি না। প্রয়োজন যতই থাকুক না কেন খাবার আগে দেখে নিন আপনি যা খাচ্ছেন তা স্বাস্থ্যসম্মত কিনা? কেননা সামান্য ভুলেই এই গরমে আপনার হতে পারে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ। গরমে অধিক পরিমাণ চা কফি না খাওয়াই ভাল। গরমে শরীর থেকে বেড়িয়ে যাওয়া লবণ ও পানির ঘাটতি পূরণের জন্য লেবু পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা লবণ খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকুন। বাইরের অতিমাত্রার গরম থেকে এসে সঙ্গে সঙ্গেই ঠান্ডা খাবার না খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার গলার স্বর বসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খাবার যেমন আপনাকে ভেতর থেকে করে তুলবে সতেজ, কর্মচঞ্চল, রাখবে সুস্থ, তেমনি গরমে সূর্যের তাপ থেকে দেহের বাহ্যিক আবরণকে রক্ষায় আপনাকে হতে হবে যতœশীল। এই গরমে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষার জন্য ছাতা ব্যবহার করুন। পরিধান করুন হালকা রঙের, ঢিলেঢালা সুতি কাপরের পোশাক। এতে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারবে, ফলে অল্প সমযে শুকিয়ে যাবে শরীরের ঘাম। অতিরিক্ত গরম অনুভব হলে দিনে দুবার গোসল করুন।
×