ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম দফা ভোট ॥ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন উগ্র বাম থেকে উগ্র ডানপন্থী সবাই

ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা

ফরাসী ভোটাররা রবিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম দফা ভোটে অংশ নেন। এবারের নির্বাচন নিয়ে অনেক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচনে যিনিই জিতুন দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। খবর গার্ডিয়ান ও বিবিসি অনলাইনের। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা ১১ জন। এদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছেন চারজন। তবে কে জিতবেন তা বলা কঠিন। ফলাফল যে কারও দিকে যেতে পারে। ভোটারদের বেশিরভাগ মনস্থির করে উঠতে পারেনি। জনমত জরিপ দেখে মনে হচ্ছে এবারের ভোটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ন্যাশনাল ফ্রন্ট প্রধান উগ্র ডানপন্থী মেরি লি পেন এবং বাকি প্রার্থীদের মধ্যে। এদের মধ্যে এগিয়ে আছেন ইমানুয়েল ম্যাখঁ। লি পেন ইউরোপ ও অভিবাসী বিরোধী। তার কাছে ফ্রান্সই প্রথম অগ্রাধিকার। জনমত সমীক্ষা দেখা গেছে তরুণ ভোটারদের কাছে তিনি বিশেষ জনপ্রিয়। গত কয়েক বছরে দেশটিতে বেকারত্ব অনেক বেড়েছে। বর্তমানে এই হার ১০ শতাংশ। বেকারদের একটি বড় অংশ বয়সে তরুণ। তাই প্রচলিত ধারার বাইরে কেউ জিতুক এটি তাদের একান্ত কামনা। লি পেন ২০১১ সালে তার পিতার কাছ থেকে ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেতৃত্ব নেন এবং এরপর দলের অতীতের অতি রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে আসার চেষ্টা করেন। তবে অভিবাসী সঙ্কট ও দেশটিতে পরপর জঙ্গী হামলা তাকে উগ্র ডানপন্থী করে তুলেছে। অপরদিকে ৩৯ বছর বয়সী সাবেক ব্যাংকার ম্যাখঁ প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের সরকারে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য গত বছর তিনি পদত্যাগ করেন। শীর্ষ প্রার্থীদের মধ্যে উগ্র বাম থেকে উগ্র ডানপন্থী সবাই রয়েছেন। এবারের ফ্রান্সের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে তৈরি হয়েছে কৌতূহল। কারণ প্রার্থীদের অনেকেই পশ্চিমের অনেক মূল্যবোধের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। ১১ প্রার্থীর মধ্যে চারজনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এরা হলেনÑ ডানপন্থী ফ্রাঁসোয়া ফিলোঁ, উগ্র-ডানপন্থী মেরি লি পেন, উদার মধ্যপন্থী ইমানুয়েল ম্যাখঁ এবং উগ্র বামপন্থী জ্যঁ লুক মেলেশঁ। তারা ইতোমধ্যেই অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। ইউরোপ, অভিবাসন এবং ফরাসী পরিচয় নিয়ে প্রত্যেকের চিন্তাভাবনার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। নির্বাচনের আগে দিয়ে রাজধানী প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় একজন পুলিশ নিহত হওয়ার পর ডানপন্থীরা যেমন সেটিকে কাজে লাগানোর সুযোগ পেয়েছেন তেমনি দোটানায় পড়ে গেছেন বামপন্থীরা। কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এখন বলছেন যে সম্ভাবনাময় সোশালিস্ট প্রার্থী বেনোয়েত হ্যামঁ প্রথম পর্বেই হেরে বিদায় নেবেন। ব্রিটেনের লেবার পার্টির মতো ফ্রান্সের সোশালিস্ট পার্টি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে কোণ্ঠাসা অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় টিকে থাকার জন্য পার্টিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভাল না করলেও পার্লামেন্ট নির্বাচনে কিছু আসন পেতে হবে। জুনে দেশটিতে পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে। নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই পরিচয় সঙ্কটে ভুগছিল সোশালিস্ট পার্টি। বিশেষ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ম্যাখেঁর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়ে ওঠায় বিপাকে পড়েছেন হ্যামোঁ। ২০০৮ সালে মেলেশঁ দলটি ছাড়ার পর থেকেই সোশালিস্ট পার্টির আদর্শিক সঙ্কট শুরু হয়।
×