বি.এস.এস,বি-এড (কৃষি ডিপ্লোমা)
সিনিয়র শিক্ষক
কানকিরহাট বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় সেনবাগ, নোয়াখালী।
পরীক্ষকঃ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা।
মোবাইলঃ ০১৭১৮৮৬৩০৪৫
প্রথম পরিচ্ছেদ। পারিবারিক কৃষি খামারের ধারণা ও গুরুত্ব
পারিবারিক খামার
বাংলাদেশের কৃষক পরিবার কৃষি খামারের মাধ্যমেই শস্য , শাক-সবজি, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি ও মৎস্য উৎপাদন করে থাকে। আকার অনুযায়ী খামার বাণিজ্যিক ও পারিবারিক হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক কৃষি খামার আবার বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক খামারের জন্য বেশি পরিমাণ মূলধন ও লোক বল প্রয়োজন। কিন্তু পারিবারিক খামারের জন্য কম মূলধন ও লোক বল প্রয়োজন।
পারিবারিক কৃষি খামারের গুরুত্ব
১। পরিবারের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা মেটায়।
২। অতিথি আপ্যায়নে ভূমিকা রাখে।
৩। বেকারদের কর্মক্ষেত্র তৈরি করে।
৪। পরিবারের সদস্যদের সময়ের সদ্ব্যবহার হয়।
৫। পরিবারের বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
৬। গবাদি- পশু- হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে কৃষি জমির উর্বরতা বাড়ানো যায়।
৭। গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে ফসলের বর্জ্য ও উপজাতসমূহের ব্যবহার করা যায়।
৮। হাঁস-মুরগির মল-মূত্র ব্যবহার করে বায়োগ্যাস উৎপন্ন করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
৯। পরিকল্পিত পারিবারিক কৃষি খামার জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
১০। কৃষকের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করে।
পারিবারিক শাক-সব্জি ও পোল্ট্রি খামার
পারিবারিক শাক-সবজি খামার
পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য এই খামার তৈরি করা হলে ও পারিবারিক ক্ষুদ্র আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই খামারের উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য একটা বড় ভুমিকা রাখতে পারে। এই খামার বাড়ির আশে পাশে খালি জায়গায় , উঁচু ভিটা, মাঝারি নিচু জমিতেও করা যায়। অভিজ্ঞ কৃষকের পরামর্শ নিয়ে ঋতুভিত্তিক সারা বছরের চাষ পরিকল্পনা করলে প্রায় সারা বছরেই এই খামার থেকে ফসল পাওয়া যেতে পারে। যা তার পারিবারিক চাহিদা মেটানোর পরেও কিছু আয় ও করা যায়।
পারিবারিক পোল্ট্রি খামার
পোল্ট্রি বলতে গৃহপালিত পাখি যেমন, হাঁস , মুরগি, কবুতর, তিতির ,কোয়েল ইত্যাদিকে বোঝায়। তিতির ও কোয়েল আমাদের দেশের নিজস্ব পোল্ট্রি নাক হওয়ায় তেমন জনপ্রিয় নয়। এদেশের কৃষক পারিবারিক পোল্ট্রি খামারে হাস, মুরগি, কবুতর পালন করে আসছে। গৃহপালিত পাখি পালন এ দেশের কৃষকের ক্রিষ্টির অভিচ্ছেদ্য অংশ। অতীতকাল থেকেই কৃষক তার খামারে দেশি জাতের হাঁস , মুরগি, কবুতর পালন করে আসছে। সাধারণত কৃষক তার খামারে ৫-১৫ টি হাঁস- মুরগি পালন করে থাকে। এই প্রচলিত খামারে কোনো উন্নত বাসস্থান বা খাদ্যেরব্যবস্থা থাকে না। হাঁস - মুরগি নিজেরা বাড়ির আশে পাশে চরে খাদ্য শস্য ও পোকা মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। এতে পরিবারের ডিম ও মাংসের চাহিদা মেটে এবং উদ্বৃত্ত ডিম ও মুরগি বাজারে বিক্রি করে কিছু বাড়তি আয় ও হয়ে থাকে। এখানে বাণিজ্যিক বিষয়টি প্রাধান্য পায় না। কিন্তু বর্তমানে এই ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। দেশি জাতের হাঁস , মুরগির উৎপাদন ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে তারা পারিবারিক খামারে উন্নত জাতের হাঁস ও মুরগি পালন করে আসছে যারা বছরে ২৫০ টি পর্যন্ত ডিম দেয়। এই পারিবারিক খামারে তারা অধিক মাংস উৎপাদনশীল ব্রয়লার মুরগিও পালন করে আসছে।