ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হরতাল ঠেকাতে ১৪৪ ধারা

বাধা উপেক্ষা করেই মন্ত্রীর প্রাণিসম্পদ কেন্দ্র উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

বাধা উপেক্ষা করেই মন্ত্রীর প্রাণিসম্পদ কেন্দ্র উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ আহূত হরতালসহ সকল বাধা উপেক্ষা করে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বিজয়নগর গেছেন। রবিবার দুপুর ১টায় উদ্বোধন করেন স্থানীয় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র। রবিবার দুপুর ১টায় মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম এমএসসিসহ বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব বহর নিয়ে বিজয়নগরে পৌঁছান। মন্ত্রীর এ কর্মসূচী নিয়ে গত তিন দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় দিনভর উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে। একদিকে উপজেলায় আওয়ামী লীগ হরতাল ডাকে। অন্যদিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক এমপি পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচীতে অংশ নেন। তবে সেখানে তিনি নির্ধারিত সুধী সমাবেশ করেননি। এদিকে শুক্রবার দুপুরে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনায় শনিবার রাতে বিজয়নগর থানায় মামলা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা লুৎফুর রহমানের দায়ের মামলায় অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রবিবার জেলা সদর, বিজয়নগর, সরাইল ও আশুগঞ্জ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। বিশেষ করে মন্ত্রীর আগমনে বিজয়নগর উপজেলায় অন্তত পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন থাকে। সকালে চান্দুরা ও সিঙ্গারবিল এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড দেয় হরতাল সমর্থনকারীরা। পুলিশ এসে চান্দুরার ব্যারিকেড তুলে নেয়। বিক্ষোভকারী নিজেরাই সরিয়ে নেয় সিঙ্গারবিলের ব্যারিকেড। বেলা পৌনে একটার দিকে মন্ত্রী ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক হয়ে আখাউড়া-চান্দুরা সড়কে প্রবেশ করেন। চান্দুরা হয়ে বিজয়নগর যাবার পথে বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল ছোড়ে। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহম্মেদ আহত হন। তাকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। উদ্বোধনী সভা শেষে মন্ত্রী জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মন্ত্রী প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রে অবস্থানকালে কয়েকশ গজ দূরে জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আলম তারা দুলি, যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সম্পাদিকা মুক্তি খান, বিজয়নগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফয়জুন্নাহার টুনির নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করে। তারা কালো পতাকা ও জুতা প্রদর্শন করে। তবে মন্ত্রী চলে আসার পর প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় তিনটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এতে কেউ হতাহত হয়নি। বৃহস্পতিবার উপজেলা আওয়ামী লীগ মন্ত্রীর আগমনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে অনুষ্ঠান বর্জন করার ঘোষণা দেয়। রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে। উদ্বোধনের পর মন্ত্রী সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। মন্ত্রী বেলা আড়াইটায় ফেরার পরপরই প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পিছনে আরেকটি ককটেলের বিস্ফোরণ হয়। মন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীরা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের কারণে তারা পারেনি। সরকারী কার্যালয় কারা ভেঙ্গেছে সেটি খুঁজে বের করা হবে। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সম্পাদকের কঠোর সমালোচনা করেন। এদিকে পুলিশ কর্মকর্তা আহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে বলে জানিয়েছেন এসপি মিজানুর রহমান পিপি এম।
×