ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে ২৪ ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

বাউফলে ২৪ ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ২৩ এপ্রিল ॥ বাউফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অধীনে ৬ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ২৪টি আরসিসি বক্সটাইপ ব্রিজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোন তদারকি কর্মকর্তার উপস্থিতি ছাড়াই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইচ্ছেমতো কাছ করছে। পাইল ছাড়াই বৃষ্টি-কাদার মধ্যে করা হচ্ছে নির্মাণ কাজ। এলাকার লোকজন ব্রিজের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। জানা গেছে, ওই অধিদফতরের আওতায় ১৬-১৭ অর্থবছরে উপজেলার বগা, নওমালা, মদনপুর, কালাইয়া, নাজিরপুর, কেশবপুর, সূর্যমনি, কাছিপাড়া, কালিশুরী, বাউফল সদর ইউনিয়নে ৬ কোটি ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬শ’ ২১ টাকা ব্যয়ে ২৪টি আরসিসি বক্সটাইপ ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ করছেন না। সরেজমিন (বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার) বাউফল সদর ইউনিয়নের হোসনাবাদ সরকারী প্রাইমারী স্কুলের পূর্ব পাশে খালের ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য একটি নির্মাণাধীন ব্রিজ পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, কোন তদারকি কর্মকর্তার উপস্থিতি ছাড়াই আরেফিন ট্রেডার্স, হাসপাতাল রোড, পটুয়াখালীর ঠিকাদার এনায়েত হোসেনের শ্রমিকরা পানি-কাদার মধ্যে বেজ ঢালাই দিচ্ছেন কেউ বা উইং ওয়ালের রড বাঁধছেন ওই অবস্থায় আবার ঢালাই দিচ্ছেন। ঢালাইয়ের সময় ভাইব্রেট করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। ব্যবহার করা হচ্ছে লোকাল রড ও মরা বোল্ডার পাথর। এই ব্রিজটি নির্মাণে ব্যয়ে ধরা হয়েছে ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬শ’ ৫৩ টাকা। একই ইউনিয়নের নকুলের হাটের দক্ষিণ পাশে খালের ওপর ব্রিজটি উইং ওয়াল, বেজ ঢালাই ও ফাউন্ডেশন ওয়াল করা হলেও রডগুলো বেড় করে রাখা হয়েছে। ফলে বৃষ্টির পানিতে তা ভিজে মরিচা পড়ে আছে। ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্য এই ব্রিজটির নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে, ২৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮শ’ ৩৭ টাকা। খলিলুর রহমান নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি করছেন। অপর দিকে নওমালা ইউনিয়নের ভাংরা আবদুল হালিম মিয়ার বাড়ির দক্ষিণ পাশে খালের ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজটি পানির নিচে তলিয়ে আছে। মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজ দশমিনা নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছেন। একই ইউনিয়নের নিজ বটকাজল ডাঃ রাইচরণের বাড়ির কাছে খালের ওপর ব্রিজটির বেজ ঢালাই দেয়া হয়েছে, অতি বৃষ্টির মধ্যে। বরিশালের রাশা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। ওই সময় তদারক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য এই ব্রিজটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ লাখ ৫২ হাজার ৬শ’ ৫৩ টাকা। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে একই অবস্থায় চলছে অন্য সব ব্রিজের নির্মাণ কাজ। অভিযোগ রয়েছে, স্টিমেটের ১২ নং কোটেশনে ব্রিজে বেজের নিচে পাইল করার কথা থাকলেও কোন ব্রিজের নির্মাণ কাজে তা করা হয়নি। ১৯ নম্বর কোটেশনে কাজের সাইডে প্রাক্কলিত ব্যয় ও নির্মাণাধীন ব্রিজের তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ড ঝুলানোর কথা থাকলেও কোন ঠিকাদার তা করেননি। এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মুঠো ফোনে একাধিক বার কল দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। রবিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদে তার কার্যালয়ে গিয়েও দেখা মেলেনি।
×