ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে বাবার সংবাদ সম্মেলন

মডেলকন্যা রাউদা হত্যা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

মডেলকন্যা রাউদা হত্যা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজে পড়তে আসা মালদ্বীপের মডেলকন্যা রাউদা আথিফ পরিকল্পিত হত্যাকা-ের শিকার হয়েছে বলে ফের দাবি করেছেন তার বাবা। একই সঙ্গে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ময়নাতদন্তের চিকিৎসকরা বলে দাবি করেছেন তার বাবা ডাঃ মোহাম্মদ আথিফ। রবিবার দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে রাউদার চিকিৎসক বাবা আথিফ বলেন, তার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে, যার আলমত রাউদার শরীরে রয়েছে। লিখিত বক্তব্যে ডাঃ আথিফ বলেন, সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করলে যেসব চিহ্ন চোখেমুখে ও শরীরে ফুটে ওঠে তার কোনটিই পাওয়া যায়নি রাউদার লাশে। কিন্তু শ্বাসরোধ করে হত্যা করলে যেসব আলামত ফুটে ওঠে তার সবই ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, তার মেয়ে যে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে তার কোন প্রমাণই নেই। একজন মানুষ ফ্যানের সঙ্গে ঝুললে ওই ফ্যানে দাগ পড়বে বা বাঁকা হয়ে যাবে। কিন্তু তার কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আদৌ তার মেয়ে ফ্যানে ঝুলেছিল কি-না সেটাও পরিষ্কার নয়। কারণ একজনও দেখেনি রাউদা ফ্যানে ঝুলেছিল। তার মৃত্যুর পর যে ছবি পাওয়া যায় তা বিছানায় শোয়ানো অবস্থায়। ছবি না থাকলে কিভাবে বাবা হিসেবে আমি বিশ্বাস করব যে, আমার মেয়ে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে? চিকিৎসক আথিফ আরও বলেন, আত্মহত্যা করলে স্যালিভা বেরিয়ে আসে। মূত্র বেরিয়ে আসে। হাত-পা ছড়ানো থাকে। কিন্তু রাউদার হাত মুষ্টিবদ্ধ ছিল। সাধারণত শ্বাসরোধ করা হলে লাশের মুষ্টিবদ্ধ থাকে। এছাড়া রাউদার গলায় হাতের আঙ্গুলের স্পষ্ট ছাপ ছিল বলে দাবি করেন আথিফ। তিনি বলেন, সুতিকাপড়ের ওড়না দিয়ে রাউদা গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন। রাউদার গলায় যে দাগ রয়েছে তা সুতিকাপড়ের ওড়নার নয় বলেও দাবি করেন আথিফ। ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ময়নাতদন্তের চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ডাঃ আথিফ আরও বলেন, রাউদার গলায় যে চিহ্ন রয়েছে তা প্রকৃতপক্ষে কিসের নিশ্চিত হওয়ার জন্য এক্স-রে এবং এমআরআই করা প্রয়োজন। কিন্তু তা করা হয়নি। প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিতে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা গাফিলতি করে এক্স-রে ও এমআরআই করেনি বলেও দাবি করেন তিনি। মেয়ের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করে ডাঃ আথিফ বলেন, শাহমখদুম থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে গাফিলতি করেছে। তবে পুলিশের অপরাধ বিভাগ গুরুত্ব নিয়ে তদন্ত করছে বলে জানান আথিফ। এদিকে আজ সোমবার কবর থেকে রাউদার লাশ উত্তোলন করে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক আসমাউল হক। তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২৯ মার্চ দুপুরে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে রাউদার লাশ উদ্ধার করা হয়।
×