ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়া পৌর এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

বগুড়া পৌর এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ এবারের বৈশাখে আগাম বর্ষা ধেয়ে আসায় বগুড়া পৌর এলাকার প্রায় ৫ লাখ মানুষের শঙ্কিত দিনলিপি শুরু হয়েছে। মাঝারি বৃষ্টিতেই পৌরবাসীর ভোগান্তি চরমে ওঠে। ভেঙ্গে পড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থায় নগরীর কেন্দ্রস্থল সাতমাথা এবং সংলগ্ন এলাকাগুলো ডুবে যায়। নিচু এলাকা দেখে মনে হবে বন্যা। খানাখন্দকে ভরা রাস্তাগুলো নগর জীবনে হয়ে ওঠে মহা যন্ত্রণার। কালো মেঘ দেখলেই ঘরে ফেরার তাগাদা শুরু হয়ে যায়। নগরবাসীর ক্ষোভ গিয়ে পড়ে পৌর পিতার ওপর। পৌর মেয়রের ভাঙ্গা রেকর্ড বাজেÑ ‘অর্থ বরাদ্দ নেই’। উন্নয়ন হবে কেমন করে। বগুড়া পৌরসভার আয়তন ছিল ১৪ দশমিক ৭৬ বর্গ কিলোমিটার। ২০০৪ সালে সুদূরপ্রসারী ভাবনা বিসর্জন দিয়ে কলমের এক খোঁচায় পৌর এলাকা চারদিকে সম্প্রসারিত করে ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গ কিলোমিটার করা হয়। দুইটি ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয়ে পৌরসভার সঙ্গে একীভূত হয়। আগের ১২ ওয়ার্ড বেড়ে ২১ ওয়ার্ড হয়ে যায়। গত প্রায় এক যুগে ইউনিয়নগুলো পৌর মর্যাদা পেয়েছে ঠিকই ইউনিয়ন কাঠামোর পরিবর্তন হয়নি। কাঁচা সড়কগুলো তেমনই রয়ে গেছে। উল্টো যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ায় ভেঙ্গে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থা ভেঙ্গে পড়া পাকা সড়ক ও ইট বিছানো রাস্তার। সামান্য বৃষ্টিতেই খানাখন্দে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। শুকনো মৌসুমেই যানবাহন চলতে পারে না। আর বর্ষায় কি অবস্থা তা আর বলতে হয় না। নগরীর মধ্যেই ড্রেন পরিষ্কার না হওয়ায় পানি উপচে ওঠে। কখনও ড্রেনের ময়লা তুলে সড়কের ধারে ফেলে রাখা হয় দিনের পর দিন। এর মধ্যে বৃষ্টি শুরু হলে দুর্গন্ধে ময়লাগুলো রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। চলতে হয় এর মধ্যেই। বগুড়া পৌর এলাকায় ৮৫০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে পাকা ২২৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৮০ কিলোমিটার সড়কের একেবারে বেহাল অবস্থা। সুত্রাপুর গোহাইল রোড, রিয়াজকাজী লেন, জলেশ্বরীতলার ফিডার রোড, মালতিনগরের নিচু এলাকা, চকসুত্রাপুর বাদুড়তলা, চকযাদু রোড প্রেসপট্টি হাড্ডিপট্টি গালাপট্টি কামারগাড়ি কানছগাড়ি সেউজগাড়ি সুলতানগঞ্জপাড়া শিববাটি কাটনারপাড়া ফুলবাড়ি ঠনঠনিয়া চেলোপাড়া নাটাইপাড়া নারুলী খান্দার মালগ্রাম সিলিমপুর বৃন্দাবনপাড়া আটাপাড়া জামিলনগর জহুরুলনগর হাকির মোড় এবং সংলগ্ন এলাকাগুলোর লোকজন বর্ষা মৌসুম এলেই শঙ্কিত হয়ে পড়ে। ভারি বর্ষণে নগরীর নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ে। পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়; বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা তারা অবগত। নগরীর ৩৮ সড়কের প্রায় ২১ কিলোমিটার অংশ এবং প্রায় ৩ কিলোমিটার ড্রেনের সংস্কারের জন্য দু’বছর আগে দুইটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয় ১২ দশমিক ৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হয়। কাজও শুরু হয়। কথা ছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। সামান্য কাজ হওয়ার পর অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যায়। বছর দেড়েক আগে জলাবদ্ধতা নিরসনে আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। সাড়ে ৩ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণে ১০ কোটি টাকার ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় নির্মাণকাজ শুরুই হতে পারেনি।
×