ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণে কাটা হলো উঠতি ফসল

প্রকাশিত: ০২:০৫, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণে কাটা হলো উঠতি ফসল

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের জন্য চাষাবাদকৃত খাস কৃষি জমির ৯ একর উঠতি ফসল কেটে ফেলার কাজ শুরু করার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের মধ্য ভোগডোমা গ্রামের ৫০টি বর্গাচাষী পরিবার। তাদের দাবি এই প্রকল্প বাস্তয়নের কারণে সর্বশান্ত হতে চলেছে ভুমিহীন বর্গা চাষী পরিবারগুলো। তাই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে অকৃষি জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা। বর্তমানে ওই ৯ একর জমিতে বর্গা চাষীদের চাষ করা ধান, ভুট্টা, কলা, করলা, বেগুন, ঝিঙ্গা রয়েছে বলে জানান তারা। রবিবার সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, এলাকাবাসীর পক্ষে ভোগডোমা গ্রামের মৃত জুরান আলী শেখের ছেলে আব্দুল মান্নান ১৫ এপ্রিল ভোগডোমা মৌজায় আশ্রয়ন প্রকল্প না করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছিলেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম হোসেনকে সরেজমিন পরিদর্শন পুর্ব্বক ২৬ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এর আগেই ৩ এপ্রিল রবিবার থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে বেশ কিছু শ্রমিক ভূট্টা এবং কলাগাছ কাটতে শুরু করে। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে মধ্য ভোগডোমা গ্রামের ভূমিহীন বর্গা চাষীদের কয়েক শত সদস্য। বর্গাচাষী আব্দুল মান্নান জানান, “বাপ দাদার আমল থেকে এই সরকারী জমি আমরা চাষাবাদ করে আসছি। জমির পরিচর্চা করার মধ্যদিয়ে উচ্চ ফলনশীল জমিতে পরিণত হয়েছে এই এলাকা। বছরের এখন তিনটি ফসল আবাদ হয়ে থাকে এই জমিতে। হঠাৎ করে সরকার এই কৃষি জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ এর খুব কাছে আরো দুইটি আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মান করা হয়েছে। সেখানে থাকার কেউ নেই। অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে ওই ২টি আশ্রয়ন প্রকল্প। সরকারি এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫০টি ভূমিহীন বর্গা চাষী পরিবার। এতে করে ভূমিহীন পরিবারগুলিকে পথে বসতে হবে।” বর্গাচাষী মৃত ইব্রাহিমের ছেলে আমিনুল ইসলাম জানান, “আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করায় আমার ২ হাজার ৩’শ কলার গাছ কেটে ফেলতে হবে। অথচ আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে কলা আসবে গাছগুলিতে। এই অবস্থায় গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে করে আমার ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হবে। মুলধনের পুরো টাকাটাই আমার ঋণের টাকা। এখন তো আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কিছু করার নেই।
×