স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিমতলির ভয়াভহ আগুনের পর এখনো সরানো যায়নি পুরান ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার কেমিক্যাল গোডাউন। তার ওপর বেড়েছে দাহ্য জাতীয় প্লাস্টিকের কাঁচামালের গোডাউন। অনেক ভবন ভাড়া দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন উৎপাদন কারখানা আর প্রতিষ্ঠানের। এতে বাড়ছে জীবনের ঝুঁকি।
ফায়ার সার্ভিসের অনুসন্ধান বলছে, পুরান ঢাকার দুটি ওয়ার্ডেই রয়েছে অন্তত সাড়ে তিন শ’ কেমিক্যালের গুদাম। অনেক অলিগলিতেই দাহ্য জাতীয় কেমিক্যাল রাখা হয় খোলামেলাভাবেই।
কেউ কেউ কোম্পানির লেবেলে থাকা অগ্নি সতর্কীকরণ চিহ্ন তুলে ফেলে। আর কোন বাধ্যবাধকতা না থাকায় যে যত খুশি যে কোন কেমিক্যাল রাখতে পারে।
বিস্ফোরক অধিদফতর বলছে, এসব দাহ্য কেমিক্যাল গুদামজাতের ক্ষেত্রে মানা হয় না কোন নিয়ম। বিস্ফোরক অধিদফতরের সহকারী পরিদর্শক আব্দুল হান্নান বলেন, ‘প্লাস ০.২১ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে পেট্রোলিয়াম রুলস অনুসারে, পেট্রোলিয়াম এ্যাক্ট অনুসারে প্লাস ওয়ান পেট্রোলিয়াম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এগুলো রাখতে হলে কোন নির্দিষ্ট গোডাউনে রাখতে হবে।’
জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে এখানে লিকুইড বা ড্রাই- কোন ধরনের বস্তু বা পদার্থ মজুদ করা উচিত নয়। কেমিক্যাল ছাড়াও পুরান ঢাকার কোন কোন এলাকায় অহরহ গড়ে প্লাস্টিকের কাঁচামালের গুদাম। আগুন নির্বাপণের ব্যবস্থা না থাকলেও এসব এলাকায় বিভিন্ন ভবনে ভাড়া দেয়া হচ্ছে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, কারখানা। এসব কারণে ফায়ার সার্ভিস বলছে, পুরান ঢাকায় দিন দিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘পুরান ঢাকার সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এখানে আগুন লাগলে আমাদের যাওয়ার উপায় নাই। খুব সরু রাস্তা সেখানে। পানির কোন সরবরাহও তেমন নাই। বাড়িগুলোও অনেক পুরাতন এমনকি লোকজনকে বের করে আনবেন সে জায়গাটাও নাই।’
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন জানান, এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এরইমধ্যে সার্ভে করা হয়েছে। আমরা তাদের এগুলো অন্যত্র সরানোর জন্য চিঠি দিয়েছি। যদি তারা এগুলো না সরায় তাহলে আমরা আইনের আওতায় কঠোর ব্যবস্থা নেব।’ তবে কেমিক্যাল গোডাউন বা মজুদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর আরও বেশি নজরদারি ও সমন্বয় বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: