ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এরশাদের ভাগ্নিকে বিয়ে করলেন বাবলু

প্রকাশিত: ০২:২৪, ২১ এপ্রিল ২০১৭

এরশাদের ভাগ্নিকে বিয়ে করলেন বাবলু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজনৈতিক কারণে এরশাদের সঙ্গে দূরত্ব ছিল তার দলেরই শীর্ষ নেতা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর। দ্রুত সময়ের মধ্যে এরশাদের সঙ্গে বিরোধ মিটে যাবে এরকম কোন আলামত ছিল না। বাবলুর রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট হতে না পেরে পার্টির মহাসচিবের পদ থেকেই বহিস্কার করেছিলেন এরশাদ। এরপর থেকেই মূলত টানাপোড়েন শুরু। এবারের খবর একেবারেই ভিন্ন। বাবলুর শশুর হলেন খোদ এরশাদ। এক সময়ের দূর্দ- প্রতাবশালী সেনা শাসক ছিলেন এইচ এম এরশাদ। তাতে কি। পারিবারিক বন্ধনের কারণে এখন তাকে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে জামাইয়ের সম্মান দেয়া ছাড়া বিকল্প নেই। কারন একেবারেই আপনজন হয়ে এরশাদের ঘরে প্রবেশ করলেন সাবেক মন্ত্রী বাবলু। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এতোদিন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে পেয়েছেন পার্টি চেয়ারম্যান হিসেবে। শুক্রবার মামাশ্বশুর হলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। বারিধারার এরশাদের বাড়ি প্রেসিডেন্ট পার্কে ভাগ্নি মেহেজেবুন্নেসা রহমান টুম্পার সঙ্গে বিয়ে হয় জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব বাবলুর। এরশাদের রাজনৈতিক ও প্রেস সচিব সুনীল শুভরায় বলেন, সকাল থেকে স্যার (এরশাদ) এর বাসায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এতে দু’পক্ষের আত্বীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর বাইরে ছিলেন তিনি সহ দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। জানা গেছে, দুই পক্ষের আলোচনায় পারিবারিকভাবেই বিয়ের আয়োজন করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু গত সপ্তাহে জনকণ্ঠ কে বলেন, বিয়ের আয়োজন হবে ছোট্ট পরিসরে। সবকিছু দেখভাল করছেন স্যার (এরশাদ)। এতে উভয় পক্ষের আত্বীয় স্বজনরা উপস্থিত থাকবেন। এরশাদের বোন জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ মেরিনা রহমানের মেয়ে মেহেজেবুন্নেসা রহমান একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করছেন। সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটিতে বিবিএর সহকারী অধ্যাপক মেহেজেবুন্নেসা রহমান টুম্পারও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম পক্ষে তার একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে রয়েছে। আর বাবলু দশম জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম-৯ আসনের প্রতিনিধিত্ব করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাও ছিলেন ৬০ বছর বয়সী বাবলু। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সদস্য হিসেবেও আছেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে এরশাদ তাকে বিশেষ সহকারীর পদে নিযুক্ত করেছিলেন। ১৯৮৩ সালের বিয়ের পর বাবলুর প্রথম স্ত্রী ফরিদা সরকার ২০০৫ সালে ক্যান্সারে মারা যান। ফরিদাও একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনায় ছিলেন। ফরিদার মৃত্যুর পর থেকে তাদের একমাত্র সন্তান আশিক আহমেদকে নিয়েই ছিলেন বাবলু। আশিক পড়াশোনা শেষ করে ব্যাবসা করছেন, বিয়েও করেছেন। জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস থেকে জানা যায়, সত্তরের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ও প্রতাপশালী ছাত্রনেতা ছিলেন তিনি। ছিলেন ডাকসুর জিএস। এরশাদ সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ছাড়াও পরবর্তী সময়ে এই দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং পর্যটনমন্ত্রীও ছিলেন। চট্টগ্রামের রাউজানের কদলপুরে তার গ্রামের বাড়ি হলেও জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি ছিলেন বেশি সম্পৃক্ত। তার বিয়ের খবরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দপনা সৃষ্টি হয়েছে। সবাই বাবলুকে ফোন করে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে রাজনৈতিক হিসাব নিকাশও ইতোমধ্যে করতে শুরু করেছেন।
×